
২০১৫ অক্টোবরের ৪/৫ তারিখ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক বৈঠকে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি দেয় কমিশন এবং দুদকের এক উপপরিচালক হামিদুল হাসান রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
গণমাধ্যমকে দুদকই বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল।
বিএফডিসির তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও অভিনেতা পীযুষ বন্দোপাধ্যায় ছাড়া বাকি অভিযুক্তরা ছিলেন- পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের লোকাল এক এজেন্টর মালিক খন্দকার শহীদুল, এফডিসির সাবেক প্রকল্প পরিচালক (ক্রয়) শফিকুল ইসলাম এবং মালয়েশিয়ান নাগরিক জন নোয়েল।
দুদক সূত্র জানায়, পুরাতন যন্ত্রপাতি এফডিসিকে গছিয়ে দিয়ে ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় ফেইথ ইন্টারন্যাশনাল নামক একটি প্রতিষ্ঠান। এমন অভিযোগ পাওয়ার পর ২০১৪ সালের ৮ ডিসেম্বর অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছিলেন উপপরিচালক হামিদুল হাসান। তিনি প্রথমে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে বিএফডিসির বিভিন্ন নথি সংগ্রহ করেন।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পীযূষসহ অন্যরা পারফরমেন্স সিকিউরিটি গ্রহণের ক্ষেত্রে পেশাগত দায়-দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেছিলেন। প্রাক-জাহাজীকরণ পর্যায়ে বিধি অনুসরণ না করে নিজেদের মনগড়া বিশ্লেষণের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্থলে চীনে তৈরি মালামাল জাহাজীকরণের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। মালামাল গ্রহণ কমিটির সুপারিশ ছিল মর্মে মিথ্যা তথ্য দিয়ে চুক্তি বহির্ভূত চীনের তৈরি মামামাল গ্রহণ করে মূল্য পরিশোধ করা হয়েছিল।
দীর্ঘ প্রায় ১০ মাসের অনুসন্ধান কার্যক্রম শেষে ঐ ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৫৮ হাজার ৫২০ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়েরের সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দেন ঐ অনুসন্ধান কর্মকর্তা। তাতে বলা হয়, অভিযুক্তরা অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পরের যোগসাজশে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সরকারের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজেরা লাভবান হয়েছে। কমিশন ঐ প্রতিবেদন যাচাই বাছাই শেষে ২০১৫ সালের অক্টোবরে মামলার অনুমোদন দেয়।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এফডিসি কর্তৃপক্ষ ২০০৬ সালে ৪ কোটি টাকার ডিজিটাল সাউন্ড টারবো সিস্টেম (ডিটিএস) কেনার জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে। সে অনুযায়ী ২০০৭ সালের ৪ এপ্রিল ফেইথ ইন্টারন্যাশনাল নামের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি নতুন ডিটিএস যন্ত্রপাতির পরিবর্তে পুরাতন যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে পুরো অর্থ তুলে নেয়। সেই কমিটির তদন্তে সরবরাহ করা ডিটিএস যন্ত্রপাতি পুরাতন বলে শনাক্ত করে রিপোর্ট দেয়। আর ঐ সময় অভিনেতা পীযূষ বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। আর তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন ঐ দুর্নীতি সংগঠিত হয়েছিল।

