

ইকরামুল আলম, ভোলা: ঘূর্নিঝড় ফণীর আঘাতে ভোলায় প্রায় ৭ হাজার ৮০ হেক্টর জমির ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের কবলে পড়ে, বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে এসকল ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। এসব ফসলের মধ্যে রয়েছে বোরো, চিনা বাদাম, সবজি, আউশ, সয়াবিন, পান ও ভুট্রা।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা তাদের কষ্টার্জিত ফসল ঘরে তোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, এ মুহুর্তে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করা সম্ভব নয়, দু’একদিন পর ক্ষতির পরিমান জানা যাবে।
মোট আক্রান্ত ফসলের মধ্যে বোরো ৩ হাজার ২৩ হেক্টর, চিনা বাদাম ৯০১ হেক্টর, সবজি ৫২৫ হেক্টর, আউশ ২৫ হেক্টর, ভুট্রা ৩৯১ হেক্টর, মরিচ ২ হাজার ৮০ হেক্টর ও পান ৮৫ হেক্টর রয়েছে। জেলার সাত উপজেলার মধ্যে চরফ্যাশন, লারমোহন বোরহানউদ্দিন ও ভোলা সদরে ক্ষতির পরিমান কিছুটা বেশী।
দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের সয়াবিন চাষী মো. সাহাবুদ্দিন, আজিজুল ইসলামসহ ১০-১২জন কৃষক জানান, ওই এলাকায় এবছর প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে সয়াবিন চাষ হয়েছে। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। কিন্তু যখন ফসল ঘরে উঠোনোর সময় ঠিক তখনই ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে কিছু ফসল ঘরে উঠানে পারলেও অনেকেই জনবলের কারনে ফসল কাটতে পারেনি। ওই এলাকার প্রায় অর্ধেকের বেশী সয়াবিন পানিত ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে।
কৃষি বিভাগ জানায়, এ বছর জেলার সাত উপজেলায় বোরো আবাদ হয়েছে ৫৬ হাজার ৯৮৭ হেক্টর যারমধ্যে ইতমধ্যে কেটে ফেলার পর মাঠে রয়েছে ৩৩ হাজার ৩২৩ হেক্টর। এছাড়াও মোট বাদাম আবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ৬৫৫ হেক্টর, সবজি আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ১০০ হেক্টর, আউশ আবাদ হয়েছে ৫৩ হাজার হেক্টর, ভুট্রা আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৩ হেক্টর, সয়াবিন আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর, মরিচ আবাদ হয়েছে ১৬ হাজার হেক্টর ও পান আবাদ হয়েছে ৮৫ হেক্টর। যারমধ্যে মোট ৭ হাজার ৮০ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। তবে আক্রান্ত হলেও আপাতত ক্ষতি হয়নি বলে বলে দাবী করছে কৃষি বিভাগ।
এ বিষয়ে ভোলা কৃষি সম্প্রসার অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ জানান, কৃষকদের আক্রান্ত ধানের ক্ষেত দ্রুত কেটে ফেলতে বলা হয়েছে। এছাড়াও জলাবদ্ধ জমি থেকে দ্রুত সেচ দেয়া এবং রোগে আক্রান্ত ক্ষেত ও উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের পরামর্শ গ্রহন করতে বলা হয়েছে।