শ্রীলঙ্কায় প্রতিরক্ষা সচিব ও পুলিশপ্রধানকে পদত্যাগের নির্দেশ

প্রকাশিত: ১০:১৩ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৫, ২০১৯
প্রথম হামলা হয় চার্চে। ইস্টার সানডে উদযাপনকালে

শ্রীলঙ্কায় আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনায় পুলিশের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গতকাল বুধবার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা দেশটির পুলিশের প্রধান ও প্রতিরক্ষা সচিবকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন। কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ এনে পুলিশপ্রধানকে গ্রেফতারের দাবিও উঠেছে।

এদিকে একদশক পর দেশটিকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় জরুরী অবস্থার সময়কার বিশেষ ক্ষমতা পাচ্ছে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনী। এই ক্ষমতা প্রয়োগ করে কোনরকম পরোয়ানা ছাড়াই তারা তল্লাশি ও আটক অভিযান চালাতে পারবে। আদালতের শুনানি ছাড়াও আটকে রাখতে পারবে দুই সপ্তাহ। গৃহযুদ্ধ অবসানের পর থেকে সামরিক বাহিনীকে এমন ক্ষমতা দেয়া হয়নি।

সরকারের গোয়েন্দা বাহিনী হামলার আগাম তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। রোববার ইস্টার সানডেতে চার্চ ও বিলাসবহুল হোটেলে আত্মঘাতী হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৫৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৫ শতাধিক। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে ৬০ জনকে। দেশটির প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী জানায়, এ হামলার ঘটনায় ৯ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছেন।

এদিকে শ্রীলঙ্কার ডেপুটি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুয়ান ভিজেবর্ধনে গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, রোববার গির্জা ও হোটেলে আত্মঘাতী হামলায় অংশ নেওয়া তরুণ-যুবকদের অধিকাংশই উচ্চ-শিক্ষিত এবং উচ্চ-মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান। ‘তারা অর্থনৈতিকভাবে যথেষ্ট স্বাবলম্বী। পরিবারগুলোর যথেষ্ট টাকা-পয়সা রয়েছে, অর্থনৈতিকভাবে তারা স্থিতিশীল।’

এদিকে, কলম্বোভিত্তিক সংবাদপত্র আইল্যান্ড কলম্বো ক্রাইমস ডিভিশানের এক সিনিয়র কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে যে, ইস্টার সানডেতে হামলায় জড়িত একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তি দেমাতাগোদা মাহাবিলা গার্ডেন্সের একটি বাড়িতে আত্মঘাতী হামলা করার আগে তার মায়ের কাছে একটি চিঠি লিখেছিল, যেখানে সে তার মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। পুলিশ ওই সংবাদপত্রকে জানিয়েছে যে, ‘বাড়িটিতে তল্লাশি চালানোর সময় আমরা চিঠিটা হাতে পেয়েছি।

চিঠিতে সে লিখেছে যে, ধর্মের নামে সে এই হামলা করেছে’। আত্মঘাতী হামলার সময় কলম্বো ক্রাইমস ডিভিশানের (সিসিডি) তিনজন পুলিশ সদস্যও নিহত হয়েছে। সন্ত্রাসী হামলার সময় সাতটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

রোববারের হামলাকে ব্যবহার করে যাতে ঘৃণা ছড়ানো না হয় এবং কোন সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা ছড়ানো না হয়, সে কারণে টুইটার ছাড়া বাকি সোশাল মিডিয়াগুলো আপাতত শ্রীলঙ্কায় বন্ধ রাখা হয়েছে। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, সাউথ এশিয়ান মনিটর।

আইএ/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন