

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পুননির্বাচিত হলে পশ্চিম তীরের সব ইহুদী বসতিকে দখল করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) ইসরাইলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে জয়ী হলে অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীরে ইহুদি বসতি বাড়ানোর ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।
পশ্চিম তীরে ইসরায়েল যেসব ইহুদী বসতি গড়ে তুলেছে, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সেগুলো অবৈধ। তবে ইসরায়েল তা মনে করে না।
ইসরায়েল ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে সিরিয়ার কাছ থেকে যে গোলান মালভূমি দখল করে নেয়, সেটিকে নিজের সীমানায় ঢুকিয়ে নিয়েছিল আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে। গতমাসে যুক্তরাষ্ট্র গোলান মালভূমিকে ইসরায়েলের ভূমি বলে স্বীকৃতি দিয়েছে।
পশ্চিম তীরের ইহুদী বসতিগুলোতে অবৈধভাবে প্রায় ৪ লাখ ইহুদীকে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ করে দিয়েছে ইসরায়েল। পূর্ব জেরুসালেমেও একই ভাবে ২০ হাজার ইহুদীর জন্য বসতি গড়ে তোলা হয়েছে।
পশ্চিম তীরে থাকে প্রায় ২৫ লাখ ফিলিস্তিনি। যে ভবিষ্যত রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখে ফিলিস্তিনিরা, সেটি হওয়ার কথা পশ্চিম তীর এবং গাজা ভূখন্ড নিয়ে। আর তাদের রাজধানী হওয়ার কথা পূর্ব জেরুসালেম।
অবৈধ ইসরায়েলি বসতিগুলো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের ব্যাপারটিকে রীতিমত অসম্ভব করে তুলেছে।
একটি ইসরায়েলি টেলিভিশনে সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, আমি ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করবো এবং আমি গুচ্ছ বসতি এবং বিচ্ছিন্ন বসতির মধ্যে কোন তফাৎ করি না। ’
একজন সিনিয়র ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা সায়েব এরেকাত বলেছেন, ইহুদী বসতির প্রশ্নে নেতানিয়াহু যে অবস্থান নিয়েছেন তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
তিনি বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে যুক্তরাষ্টের ট্রাম্প প্রশাসন, ইসরায়েলকে যা খুশি তা করার সুযোগ দিয়ে যাবে, ততদিন তারা নির্লজ্জভাবে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করে যাবে। যেভাবে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি জনগণের জাতীয় অধিকার
বিবিসির আরব বিষয়ক বিশ্লেষক সেবাস্টিয়ান আশার বলছেন, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইহুদী বসতি সম্পর্কে যা বলেছেন, তা সম্ভাব্য মারাত্মক গণবিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। কারণ বহু বছর ধরে এই ইস্যুতেই শান্তি প্রক্রিয়া বার বার থমকে গেছে।
তিনি বলছেন, নেতানিয়াহু যেসব দলের সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গঠন করতে চাইছেন, তারা এই কথা শুনে বেশ খুশি হবে। কিন্তু এটি ফিলিস্তিনিদের মারাত্মক বিক্ষুব্ধ করে তুলবে। এটি আন্তর্জাতিকভাবেও নিন্দিত হবে।
সেবাস্টিয়ান আশার বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন যেভাবে গোলান মালভূমিকে ইসরায়েলের বলে স্বীকৃতি দিয়েছে, তাতে হয়তো বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আরও বেপরোয়া করে তুলেছে।
পশ্চিমতীর ও পূর্ব জেরুজালেমে অবৈধভাবে নির্মিত ১০০টির বেশি বসতিতে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ ইসরাইলি বসবাস করেন। এই দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি জনতার প্রতিরোধকে সন্ত্রাসবাদ আখ্যা দিয়ে আসছে ইসরাইল। বিবিসি।
আইএ