খালেদা জিয়ার বিষয়ে উদারতার পরিচয় দিন; প্রধানমন্ত্রীকে মুফতী ফয়জুল করীম

প্রকাশিত: ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৭, ২০১৯

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম স্বাধীনতা দিবসের র‍্যালী পূর্ববর্তী এক আলোচনায় বলেছেন, খালেদা জিয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর আরও উদার হওয়া উচিত। তিনি এদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেয়া মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের স্ত্রী ছিলেন। তার বিষয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আরও উদার হওয়া উচিত।

২৬ মার্চ বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে শহরের নগর ভবন রোডে ‘বিজয়ের ৪৮ বছর : প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং বিজয় র‌্যালী পূর্ব জমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিরোধী দলের অবদানকে অস্বীকার করা রাজনৈতিক চরম সংকীর্ণতা। এত সংকীর্ণ মন নিয়ে রাজনীতি করা যায় না। মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, ‘অতিসম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাকশাল গঠনই সঠিক ছিল’। যদি প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য ঠিক হয়ে থাকে তাহলে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নেই, যারা আওয়ামী লীগ করেন তারা শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে নেই। কেননা বঙ্গবন্ধু বাকশাল গঠণ করেছিলেন। তিনি বলেন, দেশকে বাকশাল ঘোষণা দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছেন। দেশের জনগণ বাকশাল প্রতিষ্ঠার জন্য দেশ স্বাধীন করেনি। মনে রাখবেন যে জাতি স্বাধীনতার জন্য জীবন ও রক্ত দিতে পারে, সে জাতি একবার চটে গেলে আপনারদের আখের রক্ষা হবে না।

তিনি আরও বলেন স্বাধীনতা অর্জনে সকল ধর্মবর্ণের মানুষের অংশগ্রহণ ছিলো। এটা কারো একক কৃতিত্ব নয়। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর এসে যারা ধর্মনিরপেক্ষতার ঘোষণা দেয় তারা আসল ইতিহাসকে গোপন করছে। স্বাধীনতার ঘোষণায় ধর্মনিরপেক্ষতার কথা ছিল না। ৭৫ সালে ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজন করা হয়। ‘বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণায় বলেছিলেন আল্লাহর ওপর ভরসা করে যার যা কিছু আছে তাই নিয়েই শত্রুর মোকাবেলায় ঝাঁপিয়ে পড়ুন, বিজয় আসবেই, ইনশাআল্লাহ’। কাজেই এখানে ধর্মনিরপেক্ষথার কোন কথা ছিল না।

র‍্যালী পূর্ববর্তি আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে মুফতী সৈয়দ এছহাক মোহাম্মদ আবুল খায়ের বলেন, বিজয়ের দীর্ঘ ৪৮ বছর অতিক্রম করলেও মানুষ স্বাধীনতার সুফল আজো পায়নি। চারিদিকে নৈরাজ্য, মারামারি, হানাহনি, দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে। মানুষের জান-মাল, ইজ্জত-আব্রুর নিরাপত্তা নেই। সাধারণ মানুষের মাঝে চাঁপা ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতার পিছনে মুসলমানদের সবচেয়ে বেশি অবদান। ১৯৪৭ সালে মাওলানা শাহ আব্দুল আজিজ মুহাদ্দিস দেহলবী রহ.ভারতকে দারুল হারব রাষ্ট্র ঘোষণা না দিলে এদেশ স্বাধীন হতো না। বিজয় হয়েছে একটি দেশের, ভূ-খন্ডের, স্বাধীন হয়নি এদেশের মুসলমানদের। ৭১-এ দেশের জনগণ যে আশা ও চেতনা নিয়ে জীবন দিয়ে পাকিস্তানীদের কাছ থেকে বাংলাদেশের বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলো তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।

সৈয়দ আবুল খায়ের বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলমানরাই সবচেয়ে বেশি ভুমিকা পালন করেছে। মুক্তিযোদ্ধারা বিসমিল্লাহ বলে এবং আল্লাহু আকবার বলেই গুলি চালিয়েছে। কাজেই ৪৮ বছর পর এসে জাতিকে বিভক্ত করার চক্রান্ত দেশপ্রেমিক ঈমানদার জনতা জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও রুখে দাড়াবে।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগর কমিটির প্রধান উপদেষ্টা মুফতি সৈয়দ নাসির আহমেদ কাউছার। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগরীর সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা লুৎফুর রহমান খান, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও যোগাযোগ সম্পাদক কে এম শরীয়াতুল্লাহ, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইব্রাহিম হোসেন মৃধা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগরীর জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল খালেক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সৌদি আরব কেন্দ্রীয় কমিটির সূরা সদস্য মাওলানা আবু আব্দুল্লাহ মাহমুদী প্রমূখ।

সমাবেশ শেষে মুফতী ফয়জুল করীমের নেতৃত্বে একটি বর্নাঢ্য র‍্যালী বরিশাল সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।

ভিডিও দেখুন :

https://www.facebook.com/publicvoice24/videos/424768224945305/

মন্তব্য করুন