

জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের সাথে আহসান মঞ্জিলে দায়িত্বরত আনসারদের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার দুপুর দুইটার দিকে আহসান মঞ্জিলের ভেতরে টিকেট কাটাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
এতে দর্শনার্থীসহ কমপক্ষে ৬ জন আহত হয়। আহতরা হলেন দর্শনার্থী সবুজ সুলতান, জবি ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাওন, সাইফুল ইসলাম, ওয়ালীউল্লাহ, শিহাব, সিএসই বিভাগের সুমিত দত্ত। আহতদের সুমনা মেডিকেল হাসপাতাল ও মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহসান মঞ্জীলে ঘুরতে আসে। এ সময় ফটকে নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের টিকিট দেখতে চাইলে তারা এগার জনে আটটি টিকিট দেখায়। এ নিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে আনসার সদস্য জাহাঙ্গীর, আসাদ ও পুলিশ সদস্য হান্নান আহসান মঞ্জিলের গেট লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের রড ও বাঁশ দিয়ে দিয়ে এলাপাতারি পেটানো শুরু করে।
পরে আহত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে তাদের বন্ধুদের খবর দিলে জবির আরও ২০ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থী এসে তাদের উদ্ধার করে। এসময় আহত শিক্ষার্থীদের তিনটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল হারিয়ে যায়।
ঘটনার সময় শ্যামলী মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেইনিং স্কুলের শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থী সবুজ সুলতানকে আনসার সদস্যরা মারধর করে। তার ক্যানন ৫০০ মডেলে ডিএসএলআর ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ভিতরে আটকে রাখে। কোতয়ালী জোনের এসি বদরুল হাসান রিয়াদকে খবর দিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করে।
অন্যদিকে আহসান মঞ্জিলের কর্মচারীদের অভিযোগ শিক্ষার্থীরা তাদেরও ওপর হামলা করে এবং আহসান মঞ্জিলের পিছনের কোয়ার্টারে ভাংচুর করেছে। সংঘর্ষের সময় আহসান মঞ্জিলের ভিতরে দর্শনার্থীরা আটকে পরে এদিক সেদিকে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। পরবর্তীতে দুপুর তিনটার দিকে কোতয়ালী থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। আহসান মঞ্জিল কর্তৃপক্ষ কিছুক্ষনের জন্য আহসান মঞ্জিলে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়।
এদিকে সংঘর্ষের পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শামসুল কবির, আব্দুল্লাহ মাহফুজ, আসাদুজ্জামান রিপন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘটনার মীমাংসা না করেই বিশ্ববিদ্যালয় বাস ছেড়ে যাওয়ার অজুহাতে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত চলে আসেন। এ সময় সাংবাদিকরা শিক্ষার্থীদের মারধরের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে ক্যাম্পাসে প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান তারা। পরে ক্যাম্পাসে এসে তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনুচ্ছুক আহত এক শিক্ষার্থী জানান, আহসান মঞ্জিল কর্তৃপক্ষের সাথে মিটমাট করতে বসলে দায়িত্বরত তিন সহকারী প্রক্টর বাস ছেড়ে দেয়ার অজুহাত দিয়ে আলোচনা সংক্ষিপ্ত করে সেখান থেকে বের হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের বিষয়ে তারা কোন সমাধান করেননি।
কোতয়ালী জোনের এসি বদরুল হাসান রিয়াদ বলেন, টিকিট কাটাকে কেন্দ্র করে জবি শিক্ষার্থীদের সাথে আনসার সদস্যদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
আহসান মঞ্জিল যাদুঘরের উপ কীপার মো: ইলিয়াস খান বলেন, টিকিট নিয়ে আনসার সদস্যদের সাথে শিক্ষার্থীদের ঝামেলা হয়েছে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আবেদন করলে আমরা তাদের টিকিটের বিষয়ে ছাড় দেয়া হবে।