কাদেরের অবস্থার উন্নতি, সিঙ্গাপুর নেয়া হচ্ছে না : চিকিৎসক

প্রকাশিত: ১০:১১ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩, ২০১৯
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

পাবলিক ভয়েস: আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসা আপাতত দেশেই হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আ.লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।

আজ রোববার রাত সোয়া ৯টায় বিএসএমইউ হাসপাতালের ডি ব্লকের সামনে সাংবাদিকদের শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘চিকিৎসকদের পরামর্শে ওবায়দুল কাদেরকে আজ রাতে সিঙ্গাপুর নিচ্ছি না। তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ইমপ্রুভ (উন্নত) হয়েছে। সে চোখ মেলছে। নড়াচড়া করছে।’

তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকরা বলেছেন, তাকে সিঙ্গাপুর নিতে হলে চার ঘণ্টা ফ্লাই করতে হবে। এয়ার এম্বুলেন্সে আইসিইউর পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই। তাই আমরা কালকে সকাল ১০টা পর্যন্ত তাকে এখানে রেখে তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবো।’

শেখ সেলিম বলেন, ‘আমরা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সকাল ১০টা পর্যন্ত এখানে রেখে দেব। তারপর প্রয়োজন হলে তাকে সিঙ্গাপুর পাঠানো হবে।’ একই কথা জানান আ.লীগের উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।

এর আগে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল থেকে আসা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দল তার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে দেশের বাইরে নেওয়ার বিষয়ে মন দেন।

ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থা দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার উপযোগী না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের এই দলটিকে নিয়ে আসা হয়েছে দেশে। আজ রোববার সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে তারা বিএসএমএমইউয়ে পৌঁছান।

জানা গেছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে এসেছেন সিঙ্গাপুরের এই চিকিৎসকরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন সাপেক্ষে এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করেই সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়া হবে তাকে।

এর আগে আজ রোববার ফজরের নামাজের পর হঠাৎ শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হলে ওবায়দুল কাদেরকে দ্রুত বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। প্রথমে আইসিইউতে ও পরে তাকে সিসিইউতে রাখা হয়েছে। তাকে দেখতে যান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী ও আ.লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, স্পিকার শিরিন শারমীন চৌধুরী, মন্ত্রিসভার সদস্যসহ অনেক নেতাকর্মী।

৬৭ বছর বয়সী ওবায়দুল কাদের ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবরে আ.লীগের জাতীয় সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তার আগে ছয় বছর তিনি দলের সভাপতি মণ্ডলীতে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আড়াই বছর কারাগারে ছিলেন কাদের। সেখান থেকেই তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। পর পর দুই মেয়াদে তিনি ওই দায়িত্বে ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকোলে কোম্পানীগঞ্জ থানা মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) অধিনায়ক কাদের প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে। মোট চারবার তিনি নোয়াখালী-৫ আসনের ভোটারদের প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে এসেছেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন পর সরকার গঠন করলে ওবায়দুল কাদেরকে যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন।

পরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে গেলে ২০০২ সালের সম্মেলনে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান ওবায়দুল কাদের। ২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ন সরকারের সময়ে জরুরি অবস্থার মধ্যে দেশের বহু রাজনীতিবিদের মত ওবায়দুল কাদেরও গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান। প্রায় ১৮ মাস কারাগারে কাটানোর পর ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের দুই মাস আগে তিনি জামিনে মুক্তি পান।

ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে আবার ক্ষমতায় ফেরে আওয়ামী লীগ। প্রথমে তাকে তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। সরকারের মেয়াদের মাঝামাঝি সময়ে তাকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী করেন প্রধানমন্ত্রী।

তখন থেকেই ওই মন্ত্রণালয়ের দেখভাল করছেন ওবায়দুল কাদের। বর্তমানে এ মন্ত্রণালয়ের নাম সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।

মন্তব্য করুন