
পাবলিক ভয়েস: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে টানা তৃতীয় বার সরকার গঠন করায় বাংলাদেশের ইতিহাসে চার বারের প্রধানমন্ত্রী ও আ.লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে নাগরিক সংবর্ধনা দিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেলের আমন্ত্রণে জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে জার্মানি আগমন উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ সময় জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রধানমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় হোটেল শেরাটন আরাবেলা পার্কের কনফারেন্স রুমে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
নতুন সরকার গঠনের পর প্রথমবারের মতো বিদেশ সফরে জার্মানি আসলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট) জার্মানির মিউনিখ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।
এর আগে সকাল ৮টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-০০১ ভিভিআইপি ফ্লাইটে দেশটির উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জার্মানি এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে ছয়দিনের সরকারি সফর করছেন তিনি।
মিউনিখ বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইমতিয়াজ আহমেদ। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে সফরকালীন আবাসস্থল হোটেল শেরাটন আরাবেলা পার্কে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান ইউরোপ আ.লীগ নেতারাসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫-১৭ ফেব্রুয়ারি জার্মানির মিউনিখে ৫৫তম নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নেবেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেলসহ বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।
১৭-১৯ ফেব্রুয়ারি সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে আবুধাবির আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের কথা তুলে ধরে বলেন, কৃষক, শ্রমিক, জেলে-কামার, কুমার থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি প্রত্যেকের মধ্যে একটা বিষয় ছিল- যে আ.লীগ আসলে দেশের উন্নতি হবে। উন্নয়নের ছোঁয়া জনগণের কাছে পৌঁছাবে, কারো পকেটে ঢুকবে না। উন্নয়নের ছোঁয়া একেবারে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, এবারের নির্বাচনে প্রতিটি দল অংশ গ্রহণ করেছে। এতো বিশাল আকারে অংশগ্রহণ অতীতে কখনো দেখা যায়নি।
তিনি বলেন, নির্বাচনের ফলাফল- আপনারা দেখেছেন আ.লীগ ভোট পেয়েছে। এবারের নির্বাচনে ৮০ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে।
নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনকে প্রশ্ন বিদ্ধ করাই ছিল তাদের একটা উদ্দেশ্য, তারা নির্বাচনকে প্রশ্ন বিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে।
আ.লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের নির্বাচনের কথা তুলে ধরে বলেন, কই ২০০৯ সালে বিএনপি জামায়াত মিলে ২৮টি আসন পেয়েছে। কেউ তো এ নিয়ে সমালোচনা করে না।
নির্বাচন নিয়ে বিএনপি ও দলটির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট বিভিন্ন বক্তব্যের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা পরাজিত হবে জেনেই তারা কীভাবে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করা যায় সেই চেষ্টা করেছে। জয়ী হওয়ার চেষ্টা করেনি।
নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবির কারণ বিএনপি আমলের দুর্নীতি, সন্ত্রাসসহ বিগত দিনে আন্দোলনের সময়কার সহিংসতা, অগ্নি সন্ত্রাস, মনোনয়ন বাণিজ্যসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, ইউরোপীয় আ.লীগের সভাপতি অনীল দাশ গুপ্ত, যুক্তরাজ্য আ.লীগের সভাপতি সুলতান শরীফ
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইমতিয়াজ আহমেদ।