

ইউসুফ পিয়াস:
জীবনের শেষ সময়ে হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনী লেখার খুব ইচ্ছে ছিল কথা সাহিত্যক হুমায়ূন আহমেদের। এবং তিনি মহানবী সা:কে নিয়ে যত লিখা গ্রান্থ ছিল দেশ বিদেশের প্রচুর, সম্ভবত সব বই সংগ্রহ করেছিলেন। এবং তিনি এ লিখা নিয়ে খুবই টেনশনে ছিলেন ঠিকমত লিখতে পারছেন কিনা সে জন্য। লেখা শুরু করেছিলেন এবং সেটা শেষ করার জন্য খুব ইচ্ছা ছিল তার। কিন্তু তা আর শেষ হয়ে উঠেনি। হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়টি বলেন।
আজ নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭২তম জন্মদিন। ৬১তম জন্মদিনে হুমায়ূন আহমেদ পাঠকদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘দোয়া করবেন, আমি যেন আমৃত্যু লিখে যেতে পারি।’ তার সেই আশা পূরণ হয়েছিল। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লিখেছেন। নিউইয়র্কে হাসপাতালের বিছানায় শুয়েও তিনি ‘দেয়াল’ উপন্যাস লিখেছেন।
১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। তার ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, গীতিকার, নাট্যকার, চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই ছিলেন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। সৃষ্টিশীলতায় তিনি যেখানেই হাত দিয়েছেন, কথা-ছন্দ-দৃশ্যের জাদুতে এক করেছেন পাঠক ও শ্রোতা-দর্শকদের।
হুমায়ূন আহমেদ তার দীর্ঘ চার দশকের সাহিত্যজীবনে ভূষিত হয়েছেন বিভিন্ন পুরস্কারে। এরমধ্যে একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, লেখকশিবির পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন দত্ত পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও বাচসাস পুরস্কার অন্যতম। এছাড়া বিভিন্ন সময় দেশের বাইরেও সম্মানিত হয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ।
তার নিজ বাড়ী নুহাশপল্লীতে নামাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট ঘর ছিল যেখানে তিনি নামাজ আদায করতেন। মুজিবুর রহমান মুন্সির ইমামতিতে হুমায়ূন আহমেদ ৫ থেকে ৬ বছর তার পিছনে নামাজ আদায় করেছিলেন। বেশির ভাগ সময় মাগরিবের নামাজ পড়তেন তিনি। নামাজের সমায় হুমায়ূন আহমেদ সকল কিছু ভুলে নামাজে মনযোগী হতেন।
হুমায়ূন আহমেদের শরীরে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর তিনি উন্নত চিকিত্সার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যান। সেখানে ২০১২ সালের জুলাই মাসের ১৬ তারিখ তিনি চলে যান লাইফ সাপোর্টে। ১৯ জুলাই বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে এগারোটায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ওয়াইপি/পাবলিক ভয়েস