আল্লামা বাবুনগরীর পেছনে সারাদেশ কাতারবন্দি : নজিবুল বশার মাইজভান্ডারী

প্রকাশিত: ১১:০৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০২০

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি :

  • নাজিরহাট মাদরাসায় অস্থিতিশীলতায় মাওলানা সলিমুল্লাহ দোষলেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে।
  • আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর পেছনে সারাদেশ কাতারবন্দি, তিনি ছাড়া বিকল্প নাই বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য নজিবুল বশার মাইজভাণ্ডারী।

চট্টগ্রাম ফটিকছড়ির প্রায় শতবর্ষী পুরনো কওমী মাদরাসা নাজিরহাট বড় মাদরাসাকে ঘিরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিলো। মাদরাসার সাবেক মুহতামিম দাবিদার মাওলানা সলিমুল্লাহকে ঘিরে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

বর্তমান অস্থিশীল পরিস্থিতি বিষয়ে হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদীস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে দোষলেন মাদরাসার বর্তমান মুহতামিম দাবিদার মাওলানা সলিম উল্লাহ।

অপরদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য নজিবুল বশার মাইজভান্ডারী বিষয়টি সমাধান করতে এসে বলেন, “মাওলানা সলিমুল্লাহ বৈধ মুহতামিম নয়। আমার সাথে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর কথা হয়েছে। সারাদেশ এখন জুনায়েদ বাবুনগরীর পিছনে কাতারবন্দি, বাবুনগরী ছাড়া বিকল্প নেই।”

বিস্তারিত ঘটনায় জানা যায় – উক্ত মাদরাসার সমস্যা সমাধানে সেখানের প্রবীণ মুরুব্বি আলেম আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর আহবানে আহুত আগামী ২৮ অক্টোবরের শুরা অধিবেশন প্রত্যাখ্যান করে আজ বাদ জোহর মাদরাসা মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন মাওলানা সলিমুল্লাহ।

এতে এক পর্যায়ে সলিমুল্লাহ বিরোধীরা প্রতিবাদ করে বসে। এর জের ধরে বেশ কিছুক্ষণ দুই গ্রুপের মাঝে হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। কিছু ছাত্র ও উস্তাদদের গায়ে হাত দেওয়ার অভিযোগও আসে। এ ঘটনায় পরস্পরকে দোষারোপ করছেন উভয় গ্রুপই।

আরও পড়ুন : 

নাজিরহাট মাদরাসায় গোলযোগ : যা বলছেন মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী

মাদরাসা রক্ষার জন্যই আমি আল্লামা শফীর বিরুদ্ধে মামলা করেছি : মুফতী হাবিবুর রহমান

আল্লামা শফীর বিরুদ্ধে মামলা : আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর প্রতিবাদ বিবৃতি

এর কিছুক্ষণের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে স্থানীয় প্রশাসন। মাওলানা সলিমুল্লাহকেও বের করে দেওয়া হয় মাদরাসা থেকে। সে সময়েই মাদরাসায় প্রবেশ করেন মুহতামিম হওয়ার দাবিদার মাওলানা হাবিবুর রহমান কাসেমী।

এর মধ্যেই ঘটনাস্থলে তড়িত উপস্থিত হন স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নজীবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সায়েদুল আরেফীন, ফটিকছড়ি থানার ওসি বাবুক আকতার, নাজিরহাট পৌরসভার মেয়র সিরাজউদ্দৌলা।

এ সময়ে নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী ছাত্রদের শান্ত করেন এবং ছাত্ররা শ্লোগাণ দিয়ে তাকে বরণ করে নেয়। বক্তব্যে ভান্ডারী বলেন, সলিমুল্লাহ বৈধ মুহতামিম নয়। আমার সাথে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর কথা হয়েছে। সারাদেশ এখন জুনায়েদ বাবুনগরীর পিছনে কাতারবন্দি, বাবুনগরী ছাড়া বিকল্প নেই।

তিনি আরও বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর নাজিরহাট মাদরাসার শুরা আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হবে। শুরার নিরাপত্তার সকল দায়িত্ব আমি নেবো। প্রয়োজনে মুরুব্বিরা যদি চান আগামিকালই শুরার অধিবেশন করিয়ে দেবো আমি।

এসময় আজকের ঘটনায় যারা মাদরাসার ছাত্রদের গায়ে হাত তোলেছে তাদের গ্রেফতার করার আশ্বাস দিয়ে লিস্ট দিতেও বলেন তিনি।

অপরদিকে সংবাদ সম্মেলনের মাঝে কিছু ছাত্রদের প্রতিবাদের বিষয়ে জানতে চাইলে মাওলানা সলিমুল্লাহ বলেন, এই ঘটনার পেছনে জুনায়েদ বাবুনগরীর সুস্পষ্ট ইন্দন রয়েছে। যারা সংবাদ সম্মেলনে হাতাহাতি করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে চেয়েছে তাদের অধিকাংশ ইফতা বিভাগের ছাত্র, যারা হাটহাজারী মাদরাসা থেকে এ বছর ভর্তি হয়েছে। এবং তাদের সাথে জুনায়েদ বাবুনগরীর নিয়মিত যোগাযোগ আছে। আজকের ঘটনাকে হাটহাজারী মাদরাসার আন্দোলনের যোগসূত্র বলেও দাবি করেন তিনি।

এছাড়াও তিনি অভিযোগ করেন, সাবেক মুহতামিম আল্লামা ইদরিস সাহেবের ইন্তেকালের দিন বাবুনগরী চলচাতুরি করে মুফতি হাবিবুর রহমান কাসেমীকে শুরা ছাড়া মুহতামিম করতে চেয়েছিলেন এবং অনেককে জোরও করেছেন কিন্তু আল্লামা শফী সাহেব জিবিত থাকাকালীন সময়েই আমাকে শুরা সদস্যদের মিটিংয়ের মাধ্যমে মুহতামিম বানিয়েছিলেন।

তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন স্থানীয় এমপি নজিবুল বশার মাইজভাণ্ডারীর সহায়তা নিয়েই মুহতামিম থাকতে চেয়েছিলেন আল্লামা শফী রহ. ও তার পূত্র সমর্থিত মাওলানা সলিমুল্লাহ। কিন্তু নজিবুল বশার এখন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে সমর্থন করায় ও তার সমর্থিত মাওলানা হাবিবুর রহমান কাসেমীই এখন এ মাদরাসার মুহতামিম হবেন এবং শূরা কমিটি কর্তৃক মাওলানা হাবিবুর রহমান কাসেমীকেই মুহতামিম ঘোষণা করা হবে।

এইচআরআর/ ওএফএ/ পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন