ঝালকাঠিতে সংবর্ধনা সভায় সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ৯:৪০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২২, ২০১৯

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে চেয়ার ছোড়াছুড়ি

পাবিলিক ভয়েস: উপজেলা নির্বাচনে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে স্লোগান দেয়াকে কেন্দ্র করে ঝালকাঠি-১ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনের সংবর্ধনা সভায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

সংঘর্ষ থামাতে লাঠিচার্জ করলে আ.লীগের দুই পক্ষের সমর্থকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে চেয়ার ছোড়ে। এ ঘটনায় পাঁচ-ছয়জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কে হবেন আ.লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী এ নিয়ে দলের মধ্যে আগে থেকেই দ্বন্দ্ব চলছিল। উপজেলা আ.লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিলন মাহমুদ বাচ্চু এবং উপজেলা মহিলা আ.লীগের সভাপতি বর্তমান উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা আক্তার লাইজু চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন চাইছেন।

এ নিয়ে দলের মধ্যেই দেখা দিয়েছে বিভাজন। এক পক্ষ মিলন মাহমুদ বাচ্চুর হয়ে কাজ করছেন, অন্য পক্ষ আফরোজা আক্তার লাইজুর পক্ষে মাঠে নেমেছেন। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর বজলুল হক হারুন নিজ এলাকায় আসেন গতকাল সোমবার।

বিকেলে তিনি ঢাকা থেকে রাজাপুরে আসেন। ঝালকাঠির পেট্রল পাম্প মোড়ে এমপিকে এগিয়ে নিতে এবং শুভেচ্ছা জানাতে আসেন রাজাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। এমপি হারুন পেট্রল পাম্প মোড়ে আসলে মিলন মাহামুদ বাচ্চু ও আফরোজা আক্তার লাইজুর পক্ষের নেতাকর্মীরা ভিন্ন ভিন্ন স্লোগান দিয়ে গাড়িবহর নিয়ে যান।

বিকেল ৫টার দিকে নবনির্বাচিত এমপিকে সংবর্ধনা দেয়ার আয়োজন করে রাজাপুর উপজেলা আ.লীগ। অনুষ্ঠানে এসে উপস্থিত হন এমপি হারুন। এ সময় মাইকে মিলন মাহামুদ বাচ্চু মৃধার পক্ষে স্লোগান দেন তার নেতাকর্মীরা। পরে মাইক কেড়ে নিয়ে লাইজুর পক্ষে তার নেতাকর্মীরা স্লোগান দেয়া শুরু করেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ লাগে।

এ সময় উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা চেয়ার ছোড়াছুড়ি শুরু করেন। একপর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে নেতাকর্মীরা চেয়ার ছুড়ে মারে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচ-ছয়জন নেতাকর্মী আহত হন। এ সময় মাইকে এমপি হারুন উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।

এ ব্যাপারে জানতে ঝালকাঠি-১ আসনের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও রিসিভ করেননি তিনি।

এ বিষয়ে আফরোজা আক্তার লাইজু বলেন, বাচ্চু মৃধার পক্ষে কতগুলো অপরিচিত গুন্ডাপান্ডা স্লোগান দিতেছিল। আমার পক্ষের নারী কর্মীরা স্টেইজের সামনে বসা ছিল। এ সময় বাচ্চু মৃধার লোকজন চেয়ার ছুড়ে মারে। তাদের মধ্যে আমি দুইজনকে চিনি। তারা হলেন ছগির মাতুব্বর ও ইলিয়াছ হোসেন। এতে মহিলা আ.লীগ ও আমার কয়েকজন সমর্থক আহত হন। পরে এমপি সাহেব ঘোষণা দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ ব্যাপারে মিলন মাহমুদ বাচ্চু মৃধার বক্তব্য জানার জন্য তার মুঠোফোনে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়। তবে বাচ্চু মৃধার পক্ষে স্লোগান দেয়া ইলিয়াছ হোসেন বলেন, আমরা এমপি হারুনকে মঞ্চে স্বাগত জানিয়ে স্লোগান দিচ্ছিলাম। কিন্তু আফরোজা আক্তার লাইজুর পক্ষে তারেক মেম্বার এসে মাইক্রোফোন কেড়ে নেন। তাই এ ঘটনা ঘটে।

রাজাপুর থানা পুলিশের ওসি মো. জাহিদ হোসেন বলেন, একটু ঝামেলা হয়েছে। পুলিশ সেটি থামিয়ে দিয়েছে। কেউ আহত হয়নি। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগও করেনি।

মন্তব্য করুন