
পাবলিক ভয়েস ডেস্কঃ ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে হেমায়েতপুরের আক্তারুজ্জামান বাবু ও শওকত ইসলামের নেতৃত্বে গোন্ডা বাহিনী দিয়ে ছাতিয়ানতলা গ্রামের প্রায় দেড়শ বিঘা জমির ফসলি জমি কর্তন করার অভিযোগ ওঠেছে।
এছাড়া নদীর ধারে গ্রামের শক্তির বহিঃপ্রকাশ করতে হ্যান্ড মাইক নিয়ে উচ্চস্বরে হুমকি এবং ওলঙ্গ হয়ে নদীতে গোসল করতে যাওয়া মেয়েদের সাথে নেক্কারজনক কর্থাবার্তা এবং নদীতে থাকা মাছ শিকার করার জাল ছিন্নবিচ্ছিন্ন করার অভিযোগ ওঠেছে।
সরজমিনে দেখা যায়, হেমায়েতপুর মাঠে থাকা ছাতিয়ানতলা গ্রামের লোকজনের পেঁপে, কলা, কপি, সিম গাছ, লাউ গাছ কেটে দূবৃত্তরা ফেলে রেখে গেছে।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানায় ছাতিয়ানতলা গ্রামের হয়ে মো. রেজাউল করিম একটি মামলা দায়ের করেছে।
মামলায় আক্তারুজ্জামান বাবু, শওকত আলী, সেলিম, সুন্দর আলী, সাবর আলী, সাইদুর রহমান, শাহাজান, আশানুর, মেহেরুল, হাফিজুল, ফরিদ,আকরাম, ইকরামুল, ইসরাফিল, মহর, তুহিন, মিঠুন সহ আরো অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার এজহারে বলা হয়, ছাতিয়ানতলা যুবসংঘ আয়োজিত ফুটবল খেলায় ফুলবাড়ি ফুটবল একাদশ এবং হেমায়েতপুর ফুটবল একাদশের মধ্যকার ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হই। খেলার শেষার্ধে একটি সিদ্ধান্তকে নিয়ে ম্যাচ রেফরি কে হেমায়েতপুরের আক্তারুজ্জামান বাবু মাঠে ঢুকে মারতে থাকে এক পর্যায়ে স্বেচ্ছাসবক টিম তাকে আটকাতে গেলে সে তার বসে থাকা চেয়ার দিয়ে মারতে থাকে। এতে করে হেমায়তপুরের আরো দর্শক মাঠে ঢুকে মাঠ উত্তপ্ত করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে সেচ্ছাসেবক টিম এবং মঞ্চে থাকা অতিথিদের সহায়তায় মাঠ ক্লিয়ার করে আবার খেলা মাঠে গড়ানোর মাধ্যমে পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন হই। এতে দুই দলের অধনিয়াক অঙ্গীকারনামা দিয়ে তাদের পুরস্কার নিয়ে বাসায় ফেরে।
এদিকে ওই খেলার সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে হেমায়েতপুরের গোন্ডা বাহিনী হাতিভাঙ্গা গ্রামের মোস্তাফার হাত কেটে দেয়।
সরজিমনে তার কাছে গেলে ভুক্তভোগী হাতিভাঙ্গা গ্রামের মোস্তাফা বলেন, আমি আমার কপির জমিতে ছিলাম। হটাৎ দেখলাম ৪০ জন ছেলে বড় বড় দা রাম দা নিয়ে আমার চাষের ভিতর ঢুকে কপি নষ্ট করছে। এর প্রতিবাদ করতে গেলে তারা আমাকে কোদাল দিয়ে আঘাত করতে উদ্যত হই। আন্তরক্ষার্থে আমি হাত বাঁধালে আমার হাতের আঙুল কেটে যাই। পরে আমি গ্রামের লোকের সহায়তায় ওখান থেকে পালিয়ে আসি।
ছাতিয়ানতলা গ্রামের দিনমজুর মুপা ইসলাম কাঁদতে কাঁদতে এই প্রতিবেদকে বলেন, ‘আমি মাছ ধরে খাই। হেমায়েতপুরের কিছু ছেলে আজ আমার আয়ের উৎস টা নষ্ট করে দিয়েছি। আমি কি দোষ করেছি তাদের। আমি তো খেলা সমদ্ধে কিছু বুঝি নি। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
এদিকে হেমায়েতপুর বনাম ফুলবাড়ি একাদশের মধ্যকার ফাইনালের দিন উপস্থিত থাকা ফুলবাড়ি একাদশের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আবু বক্কর তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আমি মাঠে পুরোটা সময় ধরে ছিলাম। হেমায়তপুরের গ্রামের লোকজন শুরু থেকে খারাপ আচরন করছিলো মাঠের বাহির থেকে। এছাড়া তারা ছাতিয়ানতলা ফুটবল কমিটির অনেক গুলো চেয়ার ভেঙেছে সেটা খুবই ন্যাক্কারজনক। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে হেমায়তপুর ফুটবল একাদশের কিছু খেলোয়াড় তারা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ছাতিয়ানতলা গ্রামের লোকজনের সাথো যেটা হয়েছে সেটা খুবই দুঃখজনক। মাঠে রেফরির সিদ্ধান্ত সঠিক ছিলো আমাদের গ্রামের কিছু বদ লোক ঝামেলাটা বাঁধিয়েছে। পরে ছাতিয়ানতলা গ্রামের চাষের জমির যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এটা যে কি রকম খারাপ হয়েছে। এটার জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। তবে আশা করছি দ্রুত প্রশাসন এটার নিষ্পত্তি করবে।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল খালেক বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে একটি অভিযোগ পেয়েছি। এছাড়া ছাতিয়ানতলা গ্রামের কিছু ভুক্তভোগী লোকের সাথে কথা বলেছি। অতি দ্রুত তদন্তে সাপেক্ষে এটি নিষ্পত্তি করতে পারব বলে আশা করছি।###
এনএইচ/

