

এম.এস আরমান,নোয়াখালী : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোয়াখালীর আবদুল মালেক উকিল মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ আ.ফ.ম আব্দুল হকের বিরুদ্ধে রুগি না দেখার অভিযোগ ছড়িয়ে দেয়া হয় সর্বত্র। অভিযোগে বলা হয়, ৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার প্রায় রাত ১২ টার দিকে বাবার বয়সি রুগীকে না দেখে হাসপাতালের সামনে থেকে বাসায় চলে যান ডাঃ আ.ফ. ম আব্দুল হক।
অভিযোগের বিষয়ে পাবলিক ভয়েস প্রতিনিধির সাক্ষাতকারে ডাঃ আ.ফ.ম আব্দুল হক বলেন, প্রথমত আমি শুক্রবার বিকেলে হাসপাতালে ডিউটি করি না, প্রতিদিনের ন্যায় এমনিতে হাসপাতালে ঘুরতে এসেছিলাম। রাত অনেক হয়ে যাওয়ায় আমি সকলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর একজন বৃদ্ধ রুগিকে নিয়ে আসে তার ছেলেরা। আমাকে দেখার জন্য বললে, আমি তাদের বলেছি হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ডাক্তার আছেন এবং ডিউটিরত ডাক্তারও আছেন । তাদের কাছে ভিতরে নিয়ে যান। কিন্তু তারা আমি কেনো দেখবো না এই মর্মে অসাধু আচরণ করেন রাস্তায় দাড়িয়েই।
তিনি বলেন, আমার যদি ডিউটি না থাকে এবং আমার জায়গায় যদি অন্য ডাক্তার উপস্থিত ডিউটিতে থাকেন। তাহলে তার কাজে আমার হাত দেয়া সম্পূর্ন অন্যায়। তাছাড়াও আমি তাদের বলেছি যদি জরুরি ডাক্তার আমাকে প্রয়োজন মনে করেন তাহলে আমি তাকে দেখবো। কিন্তু তাদের ভূমিকা ছিলো আমাকে রুগী দেখতেই হবে।
সেন্ট্রাল হাসপাতালে কর্মরত একজন সিনিয়র দায়িত্বশীল বলেন, সেই সকাল ৭ টায় বের হয়ে কখনো কখনো রাত ১টা বা ২টা নাগাদও হয় বাসায় ফিরতে । স্যারের সারাদিন রুগি নিয়ে কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে বাসায় গেলেও অনেক সময় গভীর রাতে ফিরে আসতে হয় হাসপাতালে। করোনা কালীন সময়ে নোয়াখালীর আবদুল মালেক উকিল মেডিক্যাল কলেজ সহ নিজ হাসপাতাল সেন্ট্রালে রাত দিন রুগি নিয়ে সময় কাটিয়েছেন ডাঃ আব্দুল হক স্যার। তিনি গরিব রুগিদের ভিজিট কমিয়ে নেয়া, ফ্রি ঔষধ দেয়া সহ সর্বোচ্চ ধর্মীয় ও সামাজিক কাজে এগিয়ে আসেন প্রায়ই। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও করোনার মধ্যে প্রতিদিন যেই মানুষটি শতশত রুগী দেখছেন এবং রুগিদের সেবা দিয়েছেন আজ সেই মানবিক ডাক্তারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার দেখতে হবে এটা আমাদের জন্য কষ্টদায়ক।
তিনি আরও বলেন, একজন মানুষ কতটা অধম হলে ডাক্তারকে ধমক দিয়ে সেবা নেয়ার চিন্তা করতে পারে? ডাঃ আব্দুল হক স্যারের মত এমন একজন সম্মানি ব্যক্তির সাথে অসাধু আচরণে আমরা হাসপাতালে কর্মরত দায়ীত্বশীলগন তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমাদের দাবি যারা স্যারের বিরুদ্ধে অহেতুক মিথ্যে অপবাদ এবং অসাধু আচরণ করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কৃতি সন্তান ডাঃ আ.ফ. ম আবদুল হক এক যুগেরও বেশী সময় নোয়াখালীর মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। একজন চিকিৎসক হিসেবে তিনি যেখানেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন সেখানেই প্রশংসা অর্জন করেছেন। ডাঃ আ. ফ.ম আব্দুল হক ২০০২ সালে সিলেট ওসমান গনি মেডিকেল কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষকরে ২৪তম ব্যাচে বিসিএস দেন । তিনি নিজ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ বিভিন্ন উপজেলায় চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। বর্তমানে নোয়াখালীর আবদুল মালেক উকিল মেডিক্যাল কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে দায়ীত্ব পালন করছেন।
এনএইচ/