

গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে মসজিদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে জমে থাকা গ্যাসই ‘কাল’ হলো। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন তল্লা এলাকার বাইতুল সালাত জামে মসজিদটির ভেতরে খোঁজ মিলেছে গ্যাস লাইনের অসংখ্য লিকেজের। ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যে অনেকটাই পরিষ্কার বিস্ফোরণের কারণ। শুধুমাত্র গাফিলতির কারণেই এতো বড় দুর্ঘটনা। এ প্রশ্নই এখন সামনে চলে এসেছে।
ফায়ার সার্ভিসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, মসজিদের নিচ দিয়ে যাওয়া তিতাস গ্যাসের লিকেজ হওয়া লাইন থেকেই এই অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণ ঘটেছে।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন জানান, মসজিদের নিচ দিয়ে একটি গ্যাস পাইপ রয়েছে। আর এ পাইপের লিকেজ দিয়ে মসজিদের ভেতর গ্যাস জমা হয়। মসজিদে এসি চলার কারণে দরজা জানালা সব বন্ধ রাখা হয়। আলো বাতাস বের হতে পারায় নির্গত গ্যাস বের হতে পারেনি। বিস্ফোরণের আগে বিদ্যুতের কোনো কিছু জালানোর সময় স্পার্কিং থেকে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
তিনি আরও বলেন, মসজিদের মেঝেতে থাকা পানিতে গ্যাসের বুদবুদ ওঠায় সন্দেহ হয়। খোঁজ নিয়ে দেখা যায় মসজিদের নিচ দিয়ে তিতাস গ্যাসের অনেকগুলো লাইন গেছে। আর পাইপগুলোর প্রতিটিতে একাধিক লিকেজ রয়েছে। সেই লিকেজের গ্যাস সব সময় মসজিদে উঠতো। আর নামাজের আগে থেকে মসজিদের দরজা জানালা বন্ধ করে এসি চালু করার ফলে পুরো রুমে এসি ও গ্যাস মিশে যায়। তাতে করে ভয়াবহ এ বিস্ফোরণ ঘটে। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে তারা দ্রুত এখানে এসে আমাদের ধারণাকে নিশ্চিত করে। তারা জানান, গ্যাসের লাইন থেকেই এই বিস্ফোরণ হয়েছে।
শুক্রবার এশার নামাজ পড়ার সময় হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয় মসজিদটির সবকটি এসি। মুহূর্তেই আগুনে পুড়ে যায় সবকিছু। পুড়ে যান মসজিদের ভেতরে থাকা ৩৭ জন মুসল্লি।
বিস্ফোরণের ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১ শিশু ও মুয়াজ্জিনসহ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন এ তথ্য দেন। এছাড়া, দগ্ধ আরো ২৬ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন: কুদ্দুছ ব্যাপারী (৭২), সাব্বির (২২), দেলওয়ার (৪৫), জুয়েল (৭), জামাল (৪০) , জুবায়ের (১৮), হুমায়ুন কবির (৭০), মোস্তফা কামাল, ইব্রাহিম (৪৩), রিফাত (১৮) এবং জুনায়েদ (১৭)।
এনএইচ/