করোনা পরীক্ষার ফি কমিয়ে পরিপত্র জারি

প্রকাশিত: ৭:৪৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২০, ২০২০

করোনা পরীক্ষার ফি কমিয়ে পরিপত্র জারি করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। আজ বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ডা. বিলকিস বেগম স্বাক্ষরিত এই পরিপত্রে জানানো হয়, বুথ ও হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগী থেকে সংগ্রহ করা নমুনার জন্য ১০০ টাকা এবং বাসা থেকে সংগ্রহ করা নমুনার জন্য ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগে যেটা ছিল যথাক্রমে ২০০ ও ৫০০ টাকা।

যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে উল্লেখ করে পরিপত্রে বলা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা, দুস্থ ও গরিব রোগীদের চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয়, পরীক্ষা-নিরীক্ষা সংক্রান্ত সরকারি আদেশ বলবৎ থাকবে।

শুরু থেকেই করোনার পরীক্ষা হচ্ছিল বিনামূল্যে। কিন্তু গত ২৯ জুন থেকে করোনার পরীক্ষা করার জন্য ফি নির্ধারণ করে দেয় সরকার। সেসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, ‘সরকারের অনেক খরচ হচ্ছে। একটা টেস্ট করতে বেসরকারিভাবে আমরা বেঁধে দিয়েছি তিন হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু আসলে ল্যাব বসানোর খরচ, যন্ত্রপাতির খরচ এগুলো যদি ধরা হয় আরও বেশি পড়ে সেক্ষেত্রে। এখন তো টেস্টের সংখ্যা ১৫ থেকে ২০ হাজারের কাছে চলে গিয়েছে, প্রতিদিন অনেক টাকা খরচ হয়।’

আর গত ২৮ জুন ফি নির্ধারণ করে দেওয়ার প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) টেস্ট বিনামূল্যে হওয়ার ফলে অধিকাংশ মানুষ উপসর্গ ছাড়াই পরীক্ষা করার সুযোগ গ্রহণ করছে। এমন পরিস্থিতিতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য অপ্রয়োজনীয় টেস্ট পরিহার করার লক্ষ্যে ফি নির্ধারণ করেছে সরকার। তাতে হাসপাতালে গিয়ে নমুনা জমা দিলে ২০০ আর বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করলে ৫০০ টাকা নির্ধারণ করে সরকার।

করোনা পরীক্ষা করাতে ফি ধরার কারণে টেস্ট কমে গিয়েছিল মন্তব্য করে বুধবার (১৯ আগস্ট) স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, জনগণের দিকে তাকিয়ে ফি কমানো হলো। ফি কমানোর ফলে টেস্ট বাড়বে।

এদিকে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৪১ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ নিয়ে করোনায় মোট মারা গেলেন তিন হাজার ৮২২ জন। বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনা বিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম রোগীর মৃত্যু হয় গত ১৮ মার্চ, প্রথম রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত ৮ মার্চ।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ১৭৬টি এবং ৯১টি পরীক্ষাগারে পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৫৯টি। এখন পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হলো ১৪ লাখ সাত হাজার ৫৫৬টি। গত ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ৮৬৮ জন এবং মোট দুই লাখ ৮৭ হাজার ৯৫৯ জন শনাক্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ২৫৩ জন এবং মোট এক লাখ ৬৮ হাজার ৯৯১ জন সুস্থ হয়েছেন।

মারা যাওয়া ৪১ জনের মধ্যে পুরুষ ৩২ জন এবং নারী নয় জন। এখন পর্যন্ত মোট তিন হাজার ১৯ জন পুরুষ (৭৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ) এবং ৮০৩ জন নারী (২১ দশমিক ০১ শতাংশ) মারা গেছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে একজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে আট জন এবং ষাটোর্ধ্ব ৩০ জন রয়েছেন। হাসপাতালে মারা গেছেন ৩৮ জন আর বাড়িতে মারা গেছেন তিন জন।

বয়স বিবেচনায় এখন পর্যন্ত মোট মৃতদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১৯ জন, শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ; ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৩৫ জন, শূন্য দশমিক ৯২ শতাংশ; ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৯৩ জন, ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ; ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২৩৯ জন, ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৫১২ জন, ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ; ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে এক হাজার ৭৬ জন, ২৮ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং ষাট বছরের বেশি মারা গেছেন এক হাজার ৮৪৮ জন, ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৯, চট্টগ্রামে আট, রাজশাহীতে চার, খুলনায় তিন, বরিশালে দুই এবং রংপুর বিভাগে পাঁচ জন রয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন এক হাজার ৮৫০ জন, ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার তিন জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন চার লাখ ৪৭ হাজার ৩৮৪ জন, ছাড় পেয়েছেন তিন লাখ ৯৯ হাজার ৬২০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৭ হাজার ৭৬৪ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৭৬৬ জন, ছাড় পেয়েছেন ৭৫৫ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৬৫ হাজার ৩৬ জন, ছাড় পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৭৪৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২০ হাজার ২৯১ জন।

আই.এ/

মন্তব্য করুন