
গভীর সাগরে ৩ দিন ভেসে থাকার পর রোববার (১৬ আগস্ট) বিকেলে বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে (বিএফডিসি) ঘাটে এসে এফবি তিনবোন ট্রলারের মাঝি জাহাঙ্গীর হোসেন (৫৮) বলেন, ‘তিনদিন সাগরে ভাসছি, ত্রেপল উড়াইয়া বাদাম দিছি। বাঁচাও বাঁচাও কইছি, কিন্তু কেউ আগাইয়া আয়নাই। তিনদিন ভাইসা সুন্দরবনের মেহের আলী এলাকায় যাওয়ার পর নেটওয়ার্ক পাইছি’।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পাথরঘাটা থেকে ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে এফবি তিনবোন ট্রলারের পাখা ভেঙে যায়। সেই থেকে তিনদিন গভীর সমুদ্রে ভাসে ট্রলারসহ ১৭ জন জেলে।
ওই ট্রলারের মাঝি জাহাঙ্গীর আরও বলেন, ট্রলারে সেপ (পাখা) ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই সাগরে ভাসা শুরু হয়। এক পর্যায়ে ট্রলারে থাকা ত্রেপল উড়িয়ে বাতাসে বাদাম লাগাই। সাগরে পানির স্রোত পশ্চিমে থাকায় আস্তে আস্তে ভারতের দিকে যাওয়া শুরু করে। আমরা খুব ভয়ে পেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম ভাসতে ভাসতে ভারতে দিকে যায় কি না। পরে নেটওয়ার্কে আওয়ার পর কোম্পানিকে (ট্রলার মালিক) ফোন দিলে অপর একটি ট্রলারের সহযোগিতায় ঘাটে আসতে পারি।
ওই ট্রলারের সহকারী মাঝি রাজ্জাক বলেন, ট্রলারের সেপ (পাখা) ভেঙে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের ভয়ে সকলের খাওন বন্ধ হয়ে যায়। সবাই প্রস্তত ছিলাম। ট্রলার যখন ভাসতেছিল তখন আশপাশের অনেক ট্রলারে জেলেদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি কিন্তু কেউ আগাইয়া আয় নাই। সাগরে আপন কেউ নাই আল্লাহ ছাড়া।
এফবি তিনবোন ট্রলারের মালিক হেমায়েত মলিক বলেন, শনিবার (১৫ আগস্ট) রাতে সুন্দরবনের মেহের আলী পয়েন্টে আসার পর মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়ায় মাঝি আমাকে ফোন দিলে আমি রোববার সকালে ২০ জেলেসহ এফবি হাজেরা নামে একটি ট্রলার ওই জেলেদের উদ্ধারের জন্য পাঠাই।
আই.এ/

