মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য ও শেষ পরিণাম

প্রকাশিত: ৬:০৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০১৯

নাইমা ইসলাম

মুনাফিক নর ও নারী উভয়ই সৎকাজের বাধা সৃষ্টি করে এবং সমাজে বিপর্যয় ডেকে আনে। পবিত্র কুরাআনুল কারিমে মহিমান্বিত আল্লাহ তাআলা মুনাফিকের পরিচয় সম্পর্কে আয়াত নাযিল করে বলে দিয়েছেন।

আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন “মুনাফিক নর-নারী পরস্পরের দোসর। খারাপ কাজের আদেশ করে, ভালো কাজের নিষেধ করে এবং কল্যাণ থেকে নিজেদের মুষ্টি গুটিয়ে রাখে। তারা আল্লাহকে ভূলে গেছে, কাজেই তিনিও তাদের ভুলে গেছেন, নিঃসন্দেহে মুনাফিকরাই ফাসেক”। (সূরা-আত-তাওবা, আয়াত:৬৭)

সমস্ত মুনাফিকের এটা সাধারণ বৈশিষ্ট্য। তারা সবাই খারাপ কাজের ব্যাপারে আগ্রহী এবং ভাল কাজের প্রতি তাদের প্রচন্ড অনীহা ও শত্রুতা। কোনো ব্যক্তি খারাপ কাজ করতে চাইলে তারা তার প্রতি সহানুভূতিশীল হয়। তাকে পরামর্শ দেয়। তার মনে সাহস যোগায়। তাকে সাহায্য-সহায়তা দান করে। তার জন্য সুপারিশ করে। তার প্রশংসা করে।

মোটকথা, তার জন্য নিজেদের সবকিছুই তারা ওয়াকফ করে দেয়। মনেপ্রাণে তারা তার ওই খারাপ কাজে শরীক হয়। অন্যদেরকেও তাতে অংশগ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করে। আর যে ব্যক্তি খারাপ কাজে শরীক হয়। অন্যদেরকেও তাতে অংশগ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করে। আর যে ব্যক্তি খারাপ কাজ করে এরা তার সাহস বাড়াতে থাকে। তাদের প্রতিটি অঙ্গ ভঙ্গি ও নড়াচড়া থেকে একথা প্রকাশ হতে থাকে যে, এ অসৎকাজটির বিস্তার ঘটলে তাদের হৃদয়ে কিছুটা প্রশান্তি অনুভব হতে থাকে এবং তাদের চোখ জুড়িয়ে যায়।

অন্যদিকে কোনো ভাল কাজ হতে থাকলে তার খবর শুনে তার মনে ব্যাথা অনুভব করতে থাকে। একথার কল্পনা করতেই তাদের মন বিষিয়ে উঠে। এ সম্পর্কিত কোনো প্রস্তাবও তারা শুনতে পারে না। এ দিকে কাউকে এগিয়ে যেতে দেখলে তারা অস্থির হয়ে পড়ে। সম্ভাব্য সকল পদ্ধতিতে তার পথে বাধা সৃষ্টি করতে সক্ষম না হলে যাতে সে এ কাজে সফলকাম না হতেই পারে এ জন্য তারা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়।

তাছাড়া ভাল কাজে অর্থ ব্যয় করার জন্য তাদের হাত কখনো এগিয়ে আসে না, এটাও তাদের একটা সাধারণ বৈশিষ্ট্য ।

তারা কৃপণ হোক বা দানশীল সর্বাবস্থায় এটা দেখা যায়। তাদের অর্থ সিন্দুকে বন্দী থাকে, আর নয়তো হারাম পথে আসে হারাম পথে ব্যয় হয়। অসৎকাজের ব্যাপারে তারা যেন নিজেদের যুগের কারূন (দেদারসে অর্থ ব্যয় করতে পারংগম) সৎকাজের ব্যাপারে তারা চরম দরিদ্র।

মুনাফিকদের জন্য চিরস্থায়ী জাহান্নাম :

আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন,  “ওয়াদা করেছেন আল্লাহ, মুনাফেক পুরুষ ও মুনাফেক নারীদের এবং কাফেরদের জন্যে দোযখের আগুনের-তাতে পড়ে থাকবে সর্বদা। সেটাই তাদের জন্যে যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদের প্রতি অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্যে রয়েছে স্থায়ী আযাব”। (সূরা, আত-তাওবা, আয়াত: ৬৮)

বাস্তবে ইসলামের দাবিদার হওয়া সত্ত্বেও মুনাফিকরা কোনোভাবে বাহ্যিক দাবির কারণে রেহাই পাবে না; বরং প্রকাশ্য কুফরীর কারণে কাফেররা যেমন চিরদিনের জন্য জাহান্নমে নিক্ষিপ্ত হবে, ঠিক তেমনিভাবে ইসলামের দাবিদার এসব গাদ্দারেরাও চিরদিনের তরে জাহান্নমের সর্বনিম্নতম স্তরে থাকবে। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, নিঃসন্দেহে মুনাফেকরা রয়েছে দোযখের সর্বনিম্ন স্তরে। আর তোমরা তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী কখনও (পাবে না। সূরা, নিসা, আয়াত: (১৪৫)

মন্তব্য করুন