

ভোলা প্রতিনিধি: ভোলার চরফ্যাশনে একটি অসহায় পরিবারের উপর হামলা, ভাংচুর চালিয়ে জমি ও বসত ঘর দখল করেছে প্রভাবশালী মহল।
এ ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দেশের পরও তেমন কোন পদক্ষেপ নেয় নিয়নি পুলিশ। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতৃত্বে একাধিকবার বাড়ী ঘরে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও দখলের ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. আলী হোসেন মুন্সী পরিবার স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, ইউএনও, ওসি সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন বিচার পায়নি।
বর্তমানে তার বাড়ী ঘর লুটপাট করে জবর দখল করে রেখেছে ভুমিদস্যূরা। তাকে প্রাণনাশ সহ বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন আলী হোসেন মুন্সী।
মঙ্গলবার ভোলার স্থানীয় একটি পত্রিকা অফিসে সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কন্ঠে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী মো. আলী হোসেন মুন্সী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে মো. আলী হোসেন মুন্সী জানান, চরফ্যাশন উপজেলার এওয়াজপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পশ্চিম এওয়াজপুর গ্রামে দীর্ঘ ৩৭ বছর আগে ৭৪ শতাংশ জমি ক্রয় করে বাড়ীঘর, পুকুর বাগান করে সপরিবারে বসবাস করে আসছেন।
উক্ত জমির হাল দিয়ারা রেকর্ড করাইতে না পারায় আদালতে দেওয়ানী নম্বর ২০৪/২০০৬ইং মোকদ্দমায় মামলা করেন আলী হোসেন। এছাড়াও তিনি আদালতে ৩টি দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন। যার নং-৫২/২০২০, ৩৩৮/২০১৮, ১২/২০১৪ইং।
আদালত ও শালিশী উপেক্ষা করে এওয়াজপুর ইউনিয়নের প্রভাবশালী নেতা রেজাউল করিম, ১নং ওয়ার্ডের রফিক হাওলাদার, জাহাঙ্গীর মিস্ত্রী, ৩নং ওয়ার্ডের শাহে আলম হাং এর নেতৃত্বে ভূমিদস্যু আল আমিন, নুরে আলম, আবুল কালাম, আলী আজগরসহ ২০-২৫ জনের একটি গ্রুপ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে গত ২৪/০২/২০ইং তারিখ আলী হোসেন মুন্সীর বসতবাড়ীতে প্রবেশ করে বাড়ী ঘরে হামলা ভাংচুর, মালামাল লুটপাট করে। ভূমিদস্যুরা আলী হোসেনকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেয়।
এরপর গত ০৯/০৫/২০ইং তারিখে রেজাউল করিমের নেতৃত্বে ভূমিদস্যুরা পুনরায় আলী হোসেনের বসতবাড়ীতে হামলা করে সুপারী গাছ, ফলফলাদী লুট করে নিয়ে যায় এবং ওই বাড়ীতে নতুন করে ঘর উত্তোলন করে।
বিষয়টি আলী হোসেন চরফ্যাশন আওয়ামী লীগের নেতাদেরকে জানালে নেতারা শশীভূষণ থানায় পাঠায়। থানায় গেলে অজ্ঞাত কারণে আলী হোসেনের অভিযোগ আমলে নেয়নি পুলিশ।
গত ১১ মে-২০ আলী হোসেন বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানালে রেজাউল করিমের নেতৃত্বে ভূমিদস্যুরা আলী হোসেনের বৃদ্ধ মা ও স্ত্রী সন্তানদেরকে এলোপাথারী মারধর করে এবং শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। এসময় তারা আলী হোসেনের বসতঘর দখল করে নিয়ে যায়।
নিরুপায় হয়ে আলী হোসেন বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবকে জানালে তিনি থানার ওসি অজ্ঞাত কারণে পুলিশ মামলা দেয়নি। বর্তমানে ইউনিয়নের প্রভাবশালী নেতা রেজাউল করিমের নেতৃত্বে আলী হোসেনের বাড়ীঘর জোর করে দখল করে রেখেছে ভূমিদস্যুরা।
আলী হোসেন মুন্সীর পরিবার তাদাের হুমকি-ধামকির ভয়ে নিরাপত্তাহীন জীবন যাপন করছেন। তিনি এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
অভিযোগের ব্যাপারে অভিযুক্ত এওয়াজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম জানান, এ জমিটি নিয়ে দু’পক্ষের শালিশ ও সমঝোতা চলমান আছে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে কে বা কাহারা পরিবারটির উপর হামলা করেছে তা আমার জানা নেই। হামলার ঘটনা দুঃখজনক। আর আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা। আমি কোন জমি দখলে সহায়তা করিনি।
শশীভূষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ দেওয়ানী মামলা নেয় না। থানায় শুধু ফৌজধারী মামলা নেওয়া হয়। বাড়ীঘর ভাংচুরের অভিযোগে মামলা দেওয়া হয়েছে। সেটির দ্রুত চার্জশীট দেওয়া হবে।
/এসএস