

জামালপুরে ত্রাণের স্লিপের তালিকা তৈরী নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠিসোঠাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে সংঘর্ষে জড়িয়েছে স্থানীয় আ.লীগের দু’পক্ষের নেতাকর্মীরা।
এসময় সাংবাদিকসহভয়পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে সময় টিভির প্রতিবেদকেও ক্যামেরা ভাংচুর করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। হামলা হয়েছে সময়টিভি ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির ক্যামেরাপার্সনের ওপার।
শনিবার (২এপ্রিল) সন্ধায় জামালপুর শহরের শাহাপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এঘটনায় উভয়পক্ষের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন মুহুর্তে ফের সংর্ঘষের আশংকায় আতংকিত এলাকাবাসী।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শিরা জানায়, ত্রাণের স্লিপের তালিকা তৈরী নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও পৌর কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেনের মধ্যে বিরোধ তৈরী হয়।
বিরোধের জের ধরে শনিবার সন্ধ্যায় দু’পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংর্ঘষ শুরু হয়। সংর্ঘষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৮ জন আহত হয়েছে। আহতরা বেসরকারী বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন
এসময় ক্যামেরায় সংবাদ ধারন করতে গেলে কাউন্সিলর হেলাল উদ্দীনের ছেলে অন্তরেরর নেতৃত্বে সময় টিভির ক্যামেরাপার্সন আবুল কালাম আজাদ ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির ক্যামেরাপার্সন আল-আমীনকে মারধর করে সময়টিভির ক্যামেরা ভাংচুর করা হয়। গুরুতর আহত সময় টিভির ক্যামেরাপার্সন আবুল আজাদকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া এক পক্ষের নেতা ওয়ার্ড আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘ত্রানের স্লিপের জন্য প্রতিজনের কাছ থেকে ১০০ টাকা আদায় করছে কাউন্সিলর হেলাল। এ ঘটনা জানাজানি হলে এটা ঢাকতে আমার ভাইয়ের ওপর হামলা চালিয়েছে কাউন্সিলরে ছেলে’।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘কাউন্সিলরের অনিয়মের বিষয়টি জানাজানি হলে হেলাল আমার ওপর দোষারোপ করে যে বিষয়টি আমি ছড়িয়েছি। আমার ভাই তোফাজ্জল চা বিক্রি করে আসার পথে হেলালের ছেলে অন্তর, রাজু ও সৌরভ তাকে রাস্তায় মারধর করে। এ ব্যাপারে কথা বলতে গেলে আমাদের লোজনদেরকে সে মারধর করেছে’।
অন্যদিকে পৌর কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘পৌর মেয়রের নির্দেশে বাড়িতে বসে ত্রাণের ৪৯০ জনের তালিকা তৈরী করছিলাম। এসময় মোজাম্মেলের নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক লোক স্লিপের জন্য অর্তকিত হামলা চালিয়েছে’।
সংবাদকর্মীদেরকে মারধর ও ক্যামেরা ভাংচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমার লোকজন নয় বরং মোজাম্মেলের লোকজনই ক্যামেরা ভাংচুর করেছে’।
এ প্রসঙ্গে জামালপুর সদর থানার ওসি (নিরাপত্তা) মো: সালেমুজ্জামান জানিয়েছেন, দু’পক্ষের সংঘর্ষ এড়াতে ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়েছে। এ ব্যপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলার পর এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
অপর দিকে, সাংবাদিকদের উপর হামলা ও ক্যামেরা ভাংচুরের প্রতিবাদে শনিবার রাত ৯ টায় জামালপুর প্রেসক্লাবে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সভায় সাংবাদিক নেতারা অবিলম্বে সাংবাদিকদের হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি।
/এসএস