

ভোলা প্রতিনিধি: দেশে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন তার নির্বাচনী এলাকায় গত এক মাস ধরে অসহায় ও খেটে খাওয়া শ্রমজীবীদের খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন।
এ দুই উপজেলার কোনো মানুষ যাতে না খেয়ে কষ্ট না পায় সে জন্য তিনি হট লাইন চালু করেছেন। এ হট লাইনে কেউ ফোন দিলেই তার বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে হাজির হচ্ছেন এমপি শাওনের গাড়ি।
প্রয়োজন অনুসারে দেয়া হচ্ছে খাদ্যসামগ্রী। কোনো লোকের মাধ্যমে নয় সরাসরি নিজে গিয়েই মানুষের বাড়িতে খাদ্য ও নগদ টাকা পৌঁছে দিচ্ছেন এ সাংসদ।
সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সারাদিন কর্মহীন ও দু:স্থদের মাঝে ত্রান বিতরণ করে ক্লান্ত শরীর নিয়ে ঘুমোতে যান এমপি শাওন। এমন সময় হটাৎ তার ফোন বেঁজে ওঠে। রিসিভ করতেই ওপার থেকে কান্না জড়িত কণ্ঠে বলতে লাগলো ‘স্যার, আমরা গরীব মানুষ। নদীপাড়ে খাস জায়গায় থাকি। সরকারী ত্রাণ যাহা পেয়েছি সবই শেষ হয়ে গেছে। আজ ২-৩ দিন যাবৎ আমরা না খেয়ে আছি। ঘরের বাচ্চাগুলো কান্নাকাটি করতেছে। আমরা এখন কি করব স্যার? কী খেয়ে রোজা রাখব?’।
সাংসদ শাওন জানান, কথাগুলো কান দিয়ে শ্রবণ করলেও আমার ভেতরটা জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। আবার ফোন করলাম সেই নাম্বারে। ফোন দিয়ে তার সাথে কথা বলে কিছু ত্রাণ নিয়ে ছুটলাম নদীপাড়ের দিকে। কিছুদুর যাবার পর গাড়ী আর চলছে না। সদ্য সমাপ্ত বৃষ্টির শেষে স্যাঁতসেতে মাটির উপর দিয়ে বেড়ীবাঁধের কোল ঘেষে চললাম দূর্গম পথের অভিযাত্রীর ন্যায়।
ক্লান্ত শরীর মোটেই সাহায্য করছে না হাত-পাঁ কে। তারপরও ভাবলাম আমার এই কষ্টের বিনিময়ে ২-৪টি পরিবার যদি কিছু খেতে পারে, ছোট বাচ্চাগুলোর মুখে হাসি ফুটে এখানেই আমার স্বার্থকতা। কিছুক্ষণ পরই পৌঁছে গেলাম সেই বাড়ীতে। বর্তমান দিনগুলি এরা যেন পদ্মা নদীর মাঝির গল্পকে হার মানিয়েছে।
এমপি শাওন বলেন, আমাকে পেয়ে তারা যে কতোটা মহাখুশি হয়েছে সেটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।
শাওন বলেন, ‘রাত সাড়ে তিনটা অতিক্রম করে চলেছে। সবার হাতে খাবারের প্যাকেট ও কিছু নগদ টাকা গুঁজে দিলাম। নিজ বাসার পথে চললাম। মনে মনে ভাবলাম, একজন সত্যিকারের এমপি কখনোই তার এলাকার লোকদের বিপদে রেখে ঘুমিয়ে থাকতে পারেন না’।
/এসএস