

এম এ ইউসুফ আলী, রাঙ্গাবালী, পটুয়াখালী: করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় হাসপাতাল না থাকায় আইসোলেশন ইউনিট স্থাপন করা যায়নি। এখানে নেই নমুনা সংগ্রহের স্থায়ী কোন ব্যবস্থা।
এদিকে, উপজেলায় অবস্থানরত দুই ভারতীয় নাগরিক ও একজন স্বাস্থ্যকর্মীসহ চারজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যারফলে উপজেলাবাসীর মধ্যে করোনা ঝুঁকির আতঙ্ক বেড়েছে।
সাগর ও নদীবেষ্টিত এ উপজেলায় দুই লক্ষ মানুষের বসবাস। ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক উপজেলাটির যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু ৮ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গড়ে ওঠেনি। তাই করোনা পরিস্থিতি ছাড়াও এখানকার মানুষ প্রতিনিয়ত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জানা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স না থাকায় এখানে আইসোলেশন ইউনিট স্থাপন করতে পারেনি স্বাস্থ্য বিভাগ। তাই করোনা আক্রান্ত অসুস্থ রোগী থাকলে পাশ্ববর্তী গলাচিপা উপজেলার ৫ শয্যা বিশিষ্ট আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করতে হবে। কিন্তু রাঙ্গাবালীর সঙ্গে গলাচিপার দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার। এরমধ্যে আগুনমুখা নামক একটি নদীও অতিক্রম করতে হবে।
অপরদিকে এ উপজেলায় নমুনা সংগ্রহেরও কোনো ব্যবস্থা নেই। করোনার উপসর্গ দেখা দিলে যোগাযোগ করার পর গলাচিপা থেকে টেকনিশিয়ান এসে নমুনা সংগ্রহ করবে।
স্থানীয়রা বলছেন, লকডাউনের কারণে সারাদেশের সঙ্গে রাঙ্গাবালীর যোগাযোগ অনেকটাই থমকে গেছে। তাই করোনা উপসর্গ দেখা দিলে কিংবা অন্যকোন রোগে কেউ অসুস্থ হলে এই মুহূর্তে গলাচিপা কিংবা অন্যকোথাও গিয়ে চিকিৎসা করানো অনেক ভোগান্তির। খরচও হবে ব্যয়বহুল।
এদিকে, গত ১৮এপ্রিল গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে একটি টিম এসে এখানে ১২টি নমুনা সংগ্রহ করেছে। এরমধ্যে তাবলীগ জামাতে আসা দুই ভারতীয় এবং পাবনা জেলার এক ব্যক্তি ও এক স্বাস্থ্যকর্মীর গত মঙ্গলবার করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এনিয়ে উপজেলাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। করোনার এই পরিস্থিতে এ উপজেলায় নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রম চালু প্রয়োজন বলে মনে করছেন উপজেলাবাসী। পাশাপাশি বিশেষ ব্যবস্থায় এখানে আইসোলেশন ইউনিট স্থাপনের দাবিও করছেন তারা।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘রাঙ্গাবালীতে হাসপাতাল না থাকায় আইসোলেশন ইউনিট করা যায়নি। ওখানকার করোনা আক্রান্ত কোন রোগীর শ্বাস কষ্ট হলে গলাচিপা আইসোলেশন ইউনিটে রাখবো।’ নমুনা সংগ্রহের বিষয়ে বলেন, ‘গলাচিপা-রাঙ্গাবালী একসঙ্গে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। কারো মধ্যে করোনা উপসর্গ দেখা দিলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা নমুনা সংগ্রহ করবো।’
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের এমপি মহিব্বুর রহমান মহিব বলেন, ‘আমি পটুয়াখালী সিভিল সার্জনের সাথে কথা বলেছি। তিনি গলাচিপা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে, রাঙ্গাবালীতে দুইজন এমবিবিএস ডাক্তার দেওয়া হবে। করোনা ঝুঁকি থেকে রাঙ্গাবালী উপজেলাবাসীকে রক্ষা করতে সকল ধরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
/এসএস