

মাগুরার মহম্মদপুরে করোনাভাইরাস বিপর্যয়ে ঘরবন্দি অসহায় মানুষদের সহায়তায় ব্যতিক্রমি এবং অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন উপজেলার ১০ তরুণ।
এলাকার প্রকৃত অসহায়দের খোঁজ নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দিয়ে আসছেন বিশেষ কার্ড। আর দিনের বেলায় সেই কার্ডে নিয়ে আসলে মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে দিচ্ছে একদিনের খাদ্যসামগ্রী। এরমধ্যে সবচে সুখের কথা হলো, যেখানে কেউ কেউ সামান্য কিছু সহযোগিতা করতে গিয়ে ছবি তোলার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠছেন তখন এই তরুণরা তাদের নাম প্রকাশ করতেও অনিচ্ছুক।
এ মানবিক কর্মটি করলেও নিজেদের নাম-পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে চাইছেন না এসব তরুণ। সরেজমিনে দেখা গেছে, বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে দরিদ্রদের বাছাই করছেন এসব তরুণ। তাদের প্রতিটি পরিবারের হাতে পৌঁছে দিচ্ছেন একটি কার্ড। এ কার্ড নিয়ে তাদের দোকানে গেলেই মিলছে ১০ টাকায় একদিনের খাদ্যসামগ্রী।
জানা গেছে, গত ৯ এপ্রিল থেকে এই ১০জন তরুণ তাদের নিজ অর্থায়নে এ মানবিক উদ্যোগটি চালু করেন। পরে তাদের সহযোগিতায় এলাকার বিত্তবানরা এগিয়ে আসেন। প্রতিদিনই ৬০ থেকে ৭০ জন দরিদ্র তাদের দোকান থেকে ১০ টাকায় একদিনের বাজার নিতে পারছেন।
এ বাজারের মধ্যে রয়েছে- ৩ কেজি চাল, ১ কেজি আলু, ২৫০ গ্রাম ডাল, ২০০ গ্রাম পেঁয়াজ ও রসুন, ১ প্যাকেট লবন ও ১ হালি ডিম। যার আনুমানিক মূল্য ১৮৯ টাকা।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ উদ্যোগের প্রধান সমন্বয়ক জানান, চলমান সংকটে চক্ষুলজ্জায় যারা ত্রাণ নিচ্ছেন না তাদেরকে খুঁজে বের করে সদাই দিচ্ছি আমরা। তবে কেউ যাতে মনে না করে করেন যে, তাদের ভিক্ষা দেয়া হচ্ছে তাই ১০ টাকা রাখা হয়। আমরা এ কার্যক্রমকে বাড়িয়ে নিয়ে প্রতিটি গ্রামে দরিদ্রদের দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বর্তমানে প্রতিদিন ভ্রাম্যমানভাবে কিছু পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী দেয়া হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম চালিয়ে নিতে আগ্রহী আমরা।
এখান থেকে সদাই নেয়া সরোকা, রুবিয়া ও মিজানুর শেখসহ আরো কয়েকজন বলেন, অনেকদিন ঘরে বসা। কাজ-কাম করি না। বসে খেতে খেতে ঘরে টাকা পয়সা নেই । এখান থেকে নামমাত্র ১০ টাকায় সদাই নিয়ে পরিবারকে খাওয়াতে পারছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মিজানূর বলেন, দেশের এ ক্লান্তিকালে তরুণদের এ উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানিয়েছি। তারা খুবই মহৎ কাজ করছে। আমিও তাদের দোকানে সাহায্য করব। আমি আশা করি সমাজের বিত্তবানরা এ বাজারে সহযোগিতা করবেন।
/এসএস