

বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে পৃথিবীরি প্রায় সব দেশেই সর্ব প্রকার লোক জমায়েত নিষিদ্ধ করছে সরকার। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন ধর্মের শীর্ষ পন্ডিতরা এ ব্যাপারে জন সমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন।
বাংলাদেশেও সোমবার (৬ এপ্রিল) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সাখাওয়াৎ হোসেন স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে- থকিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেম ব্যতিত মুসুল্লিদের নিজ নিজ ঘরে নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে দারুল উলুম হাটহাজারীর মহাপরিচালক, দেশের শীর্ষ বুজর্গ আলেম, শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী বক্তব্য দিয়েছেন। ‘মসজিদ বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা ইসলামী শরিয়তে সঠিক’ বলে তিনি উল্লেখ্য করেছেন।
কিন্তু এরইমধ্যে পাবলিক ভয়েসের ইমেইলে হাটহাজারী মাদরাসার প্রধান মুফতী আব্দুস সালাম চাটগামীর পক্ষ থেকে ২৯ মার্চ রোববার স্বাক্ষরিত ‘নামায সম্পর্কে জরুরী ফাতওয়া’ শিরোনামে একটি মেইল বার্তা আসে। ফতোয়া তিনি মসজিদে জামাত বন্ধ করাকে মসজিদ ধ্বংসের নামান্তর বলে উল্লেখ্য করে তিনি মসজিদ খুলে দেওয়ার আহ্বান জানান।
আল্লামা মুফতী আব্দুস সালাম চাটগামীর পক্ষ থেকে আসা ইমেইলটি ১০ এপ্রিল এর পরে আসায় বিষয়টি প্রাসঙ্গিকতা না থাকায় আমরা এটা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করিনি। কেননা এর আগেই ১০ এপ্রিল (মঙ্গলবা) মসজিদ খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দেয়া বিবৃতিতে তার মতামত চলে এসেছে। কিন্তু এরপর দ্বিতীয়বার আজ ১১ এপ্রিল শনিবার আরো একটি মেইল আসে আব্দুস সালম চাটগামীর পক্ষ থেকে। যেটিতে ১০ এপ্রিল শুক্রবার তারিখে স্বাক্ষর করা হয়েছে। ‘নামায সম্পর্কে জরুরী ফাতওয়া’ শিরোনামের এ ফতোয়াটি উর্দূতে লেখা হয়েছে।
মুফতী আবদুস সালাম চাটগামীর পক্ষ থেকে পাঠানো প্রথম ফতোয়া দুটি দেখুন এখান থেকে :
বাংলা ফতোয়াটির পিডিএফ দেখতে ক্লিক করুন।
উর্দূ ফতোয়াটির পিডিএফ দেখতে ক্লিক করুন।
দ্বিতীয়বার পাঠানো ফতোয়া দুটি দেখুন এখান থেকে :
বাংলা ফতোয়াটির পিডিএফ দেখতে ক্লিক করুন।
উর্দূ ফতোয়াটির পিডিএফ দেখতে ক্লিক করুন
প্রসঙ্গত : করোনাভাইরাসে সৃষ্ট বিপর্যয়ে দেশ-বিদেশে আঞ্চলিক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। সব ধরণের সামাজিক দূরত্ব রেখেও পৃথিবীর বড় বড় শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোও হিমশিম খাচ্ছে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায়। বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম প্রধান দেশগুলোও এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করছে।
সৌদি আরবেও সেদেশের শীর্ষ পর্যায়ের আলেমদের নিয়ে গঠিত বিশেষ বোর্ডের পরমর্শ মেনে বন্ধ রাখা হয়েছে মক্ক-মদিনার দুই পবিত্র মসজিদ হারামাইন শরীফাইনসহ দেশের সকল মসজিদ। পাকিস্তানে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে সরকার এবং দেশের আলেমগণ। দারুল উলুম দেওবন্দ থেকেও এ বিষয়ে সরকারী সিদ্ধান্ত মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়। সর্বশেষ গতকাল ১০ এপ্রিল শুক্রবার আল্লামা তাকী উসমানীর সাথে হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলেন আল্লামা মিজানুর রহমান সাঈদ। হোয়াটসঅ্যাপে আল্লামা তাকী উসমানী জানান শুক্রবার জুমার নামাজ নয়, ঘরে জোহর নামাজ পড়তে হবে।
কিন্তু এতো কিছুর পরও পরপর দু’বার ফতোয়াটি আসায় আমরা এ নিয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করলাম। এরইমধ্যে আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর আসে আল্লামা আব্দুস সালাম চাটগামীর ফতোয়া পেয়ে আল্লামা তাকী উসমানী তার জুমার নামাজ সংক্রান্ত এক ফতোয়া থেকে রুজু করেছেন। কিন্তু এ ব্যাপারে পাবলিক ভয়েসের পক্ষ থেকে খোঁজ খবর নিয়ে যতটুকু জানা যায়, আল্লামা তাকী উসমানীকে নিয়ে ছড়ানো এ সংক্রান্ত খবরটি সম্পূর্ণরুপে গুজব।
উর্দূ একটি অখ্যাত নিউজ পোর্টাল এ বিষয়ে আল্লামা তাকী উসমানীর নামে মিথ্যা খবর ছড়িয়েছে। এ ব্যাপারে আল্লামা তাকী উসমানী দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন যে, তিনি কোনো ফতোয়া থেকে রুজু করেননি এবং মুফতী আব্দুস সালাম চাটগামীর ফতোয়া ব্যাপারে উনি কিছুই জানেন না।
বিষয়টি নিয়ে আল্লামা তাকী উসমানীর সাথে কথা বলেছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট ফকীহ আল্লামা মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ। এ ব্যাপারে হোয়াটসঅ্যাপে বলা আল্লামা তাকী উসমানীর বক্তব্য আমাদের হস্তগত হয়েছে। সেটা নিয়েও পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে পাবলিক ভয়েসের সংবাদ ও বেশকিছু প্রতিবেদন দেখুন
ঘরে জুম্মা নয়, জোহর নামাজ পড়তে হবে : মুফতী তকি উসমানী
‘লকডাউন’ ও ‘শবে বরাত’ সম্পর্কে দেওবন্দের বিশেষ অনুরোধ বার্তা
মসজিদ উম্মুক্ত করে দেওয়ার আহবান জানিয়ে ১৫ আলেমের বিবৃতি
মসজিদ উন্মুক্ত’র বিবৃতি দেওয়া ১৫ আলেমকে ডাকা হয়নি ইফা’র মিটিংয়ে
ঘরে নামাজ পড়া সম্পর্কে শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের মতামত
খতিব, ইমাম, মুআজ্জিন, ছাড়া মুসুল্লিরা ঘরে নামাজ পড়ুন : ধর্ম মন্ত্রণালয়
মসজিদ বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা ইসলামী শরিয়তে সঠিক : আল্লামা শফি
এসএস/এইচআরআর/পাবলিক ভয়েস