এখনই সময় দেশপ্রেমিক হওয়ার : ব্যারিস্টার সুমন

প্রকাশিত: ১০:৩৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২, ২০২০

সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয় ব্যাক্তিত্ব ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট মহামারি ও দেশের বিপদের এই সময়েই মূলত প্রত্যেকে দেশপ্রেমিক ও দেশের জন্য যুদ্ধ করে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার সময়।

তিনি বলেন, ‘আমি যদি বেঁচে থাকি তাহলে সবাইকে নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। আর যদি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাই, তাহলে যেন শহীদের মর্যাদা নিয়ে মরতে পারি। ইসলামে এমনটি বলা আছে। আমার বিশ্বাস, আমরা ইউনাইটেড (একত্র) হলে করোনাভাইরাস আমাদের কিছুই করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।’

করোনাভাইরাসে প্রবাসীদের উদ্যোগে নিজ এলাকার নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণের আগে প্যাকেট করার সময় বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) ফেসবুক লাইভে এসে এ সব কথা বলেন তিনি। সারা পৃথিবী দুরবস্থার মধ্যে আছে, আর দেশে করোনায় বিভিন্ন সংগঠন ও সরকার সাহায্যে এগিয়ে এসেছে। তেমনি ক্যাপ ফাউন্ডেশন লন্ডনস্থ সিলেট প্রবাসীদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রান বিতরন করার সময় হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের নিজের বাড়ির সামনে থেকে ফেসবুকে লাইভে আসেন ব্যারিস্টার সুমন।

প্রবাসীদের এই সহায়তার ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, সারা পৃথিবী যেখানে দুরবস্থার মধ্যে আছে। সেখানে লন্ডন প্রবাসীরা সিলেট বিভাগে শতশত মানুষকে সহযোগিতা করছেন। আজকে আমার সৌভাগ্য আমার এলাকাকে সিলেক্ট করেছেন তারা।

সেখানে প্রতিজনকে দুই লিটার তেল, ১ কেজি লবণ, মসলার গুঁড়া, ৩ কেজি মসুর ডাল, ৫ কেজি চাল ও ৩ কেজি চিড়াসহ অন্যান্য জিনিসপত্র দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, লন্ডনেও যখন শতশত মানুষ মারা যাচ্ছে, যারা ইউএসে বসবাস করছেন তারাও দেখছেন শতশত মানুষ মারা যাচ্ছে। তারপরও তারা কিন্তু নিজের দেশকে ভুলে নাই। কোন মানসিকতায় কোন বাস্তবতায় তারা মানুষকে সাহায্য করতে এসেছেন। তারা প্রতিদিন শতশত মানুষকে সহযোগিতা করছেন। আজ আমার বাসার সামনে ১০০ মানুষকে সাহায্য করার জন্য এসেছেন। আমার সৌভাগ্য। আমি তাদের শুভেচ্ছা জানাই। আমরা লকডাউনের কারণে কয়েকজনকে মাত্র দিয়ে বাকি প্যাকেট বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেব।

করোনার মধ্যে যাদের রোজগার নেই, গরিব অসহায় আছেন তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার জন্য দেশের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যেখানে সারা বিশ্বে শতশত মানুষ মারা যাচ্ছে, আসুন সবাই মিলে করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি। এখনই দেশের জন্যে মানুষের জন্যে যুদ্ধ করে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার সময়, দেশপ্রেমিক হওয়ার সময়।

যে যার জায়গা থেকে সাহায্য করেন। মরতে তো হবেই, মরার আগে মানুষগুলোকে নিরাপদে রেখে যায়। করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্ব একাত্ম হয়ে যুদ্ধ করছে। এই প্রথম মনে হয়, সারা পৃথিবীর মানুষ একত্র হয়েছে।

আমরা পাপ অনেক করেছি, দুর্নীতি অনেক করেছি, মানুষকে কষ্ট অনেক দিয়েছি। আমরা গরিব ছিলাম না, মন্ত্রী এমপিদের দুর্নীতির কারণে আমাদের দেশের দুরবস্থা। দুর্নীতি যদি না থাকত তাহলে আমাদের দেশের এই অবস্থা হতো না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির কারণে পিপিই ঠিক মতো দিতে পারে না। আমরা যদি সুযোগ পাই নতুন বাংলাদেশ গড়ব। সেই নতুন বাংলাদেশে গড়ার সময় নেত্রীকে বলে দুর্নীতিবাজদের রাখব না।

তিনি বলেন, মানুষ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব। ১৮ হাজার প্রাণীর মধ্যে আশরাফুল মাখলুকাত হলো মানুষ। আমার বিশ্বাস, আমরা ইউনাইটেড হলে করোনা কিছু করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।

বিশ্বে করোনা মোকাবিলায় এখন একটা যুদ্ধ চলছে। যেখানে সারা পৃথিবী যুদ্ধের মধ্যে,আমরা সবাই মিলে যদি ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি। আমার বিশ্বাস, ভাইরাসে আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না।

বাঁচতে হলে সবাইকে নিয়ে যুদ্ধ করে বাঁচব। আর যদি মরে যায় শহীদের মর্যাদা নিয়ে মরতে চাই। ইসলামে এমন কথা বলা আছে। দেশে এখন খুব দুঃসময় চলছে। বাংলাদেশের সকল ধনী ব্যক্তিরা সাহায্য দেয়া উচিত। তারা বিদেশে অবস্থান করেও দেশের কথা দেশের মানুষের সেবার দায়িত্ব নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।

মন্তব্য করুন