
দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমিত হয়েছেন আরো ২০ জন। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের বাধ্যতামূলকভাবে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা। বন্ধ রয়েছে রাজশাহী থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল। সচেতনতা হিসেবে সবাইকে জনসমাগম এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্কে সারাদেশ যখন আতঙ্কিত, ঠিক তখন সরকারি নির্দেশকে পাত্তা না দিয়ে ঘটা করে নিজের চিকিৎসক মেয়ের আকত বিয়ে দিচ্ছেন বাহ্মণবাড়িয়ার জেলা সিভিল সার্জন মো. শাহ আলম। শুক্রবার জেলা শহরের ফারুকী পার্ক সংলগ্ন নিজের সরকারি বাসভবনে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়। যাতে উপস্থিত হন জেলার বিভিন্ন স্তরের চিকিৎসকরা।
জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে নামাজের পর মো. শাহ আলমের দন্ত চিকিৎসক মেয়ে শাননিন আলম মমোর সঙ্গে জেলার সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের চিনাইর-চাপুইর গ্রামের মোশারফ হোসেন মোল্লার ছেলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মঈনুল হোসেনের আকত বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এতে আমন্ত্রণ জানানো হয় চিকিৎসকসহ তিন শতাধিক অতিথিকে।
তবে সংবাদকর্মীদের আনাগোনা দেখে বিকেল ৩টার দিকে বিয়ের অনুষ্ঠানস্থল সিভিল সার্জনের সরকারি বাসভনের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেন শাহ আলম। ফটকের বাইরে চেয়ার পেতে বসেন নিজেই। এরপর শুধু আমন্ত্রিত অতিথিদেরই প্রবেশ করতে দেওয়া হয় ভেতরে।
দেশের এমন পরিস্থিতিতে মেয়ের বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহ আলম সাংবাদিকদের বলেন, এক মাস আগেই এ বিয়ের তারিখ ধার্য করা হয়েছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল গায়ে হলুদ। বাবা হয়ে তিনি কীভাবে মেয়ের বিয়ে বন্ধ করে দেবেন?

তবে তার দাবি, কোনো ধরনের আয়োজন ছাড়াই স্বল্প পরিসরে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। কোনো জনসমাগম হয়নি। এমনকি পরিবারের অনেক সদস্যদেরও বিয়ের দাওয়াত দেওয়া হয়নি।
এর আগে, সকালে বিয়ে বাড়িতে গিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা দেখতে পান, বাসভবনের প্রধান ফটকের ভেতরে ফুল দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে একটি তোরণ। প্যান্ডেলের পাশাপাশি বড় ১০টি পাত্রে চলছে রান্নার কাজ।
নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার জনসমাগম এড়িয়ে চলার দিয়েছে। সরকারি নির্দেশ অমান্য করে স্বাস্থ্য বিভাগের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির এমন আয়োজন করা ঠিক হয়নি।
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান জানান, তিনি এ বিষয়ে জানেন না। তবে খোঁজ নিবেন। সরকারি নির্দেশ অমান্য করলে সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে। কেউই এর ঊর্ধ্বে নয়।
প্রসঙ্গত, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এখন পর্যন্ত ১৪৯ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
/এসএস

