বোয়ালখালীতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ‘বসতঘরে আগুন’, বহু ক্ষয়ক্ষতি!

প্রকাশিত: ৪:০৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৭, ২০২০

চট্টগ্রাম থেকে জুনায়েদ হাবিব : চট্টগ্রামের বোয়ালখালিতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বসতভিটায় আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার বোয়ালখালীর সারোয়াতলী ইউনিয়নের মাওলানা আব্দুল হালিমের বাড়িতে এই আগুনের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গভীর রাতে ঘুমে আচ্ছন্ন সবাই। ঘড়ির কাটায় সময় তখন প্রায় আড়াইটা। হঠাৎ গুটিকয়েক মানুষের চিৎকারে ঘুম ভাঙল সবার। ঘুম থেকে উঠেই আমরা দেথি আগুনের বিভৎস লেলিহান শিখায় দাউদাউ করে জ্বলছিল প্রায় ১০টির মতো বসতঘর।

জানা যায় বোয়ালখালীর মৃত আলম খন্দকারের জ্যোষ্ঠ পূত্র প্রবাসী মোহাম্মদ আলতাফ হোসাইন গ্রামে নিজেদের দালান নির্মানের জন্য কিছু জায়গা নিয়ে মৃত আব্দুল গণির পরিবারের সঙ্গে বিগত ১০ বছর ধরে বিরোধ চলছিল। আর এই দ্বন্দ্ব ঘোচাতে গত ১৪-ই মার্চ শনিবার বোয়ালখালি থানা পুলিশ সহ স্হানীয়  বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে কয়েকদফায় বৈঠক হয়।কিন্তু মৃত আব্দুল গণির স্ত্রী মোসাম্মৎ রিজিয়া খাতুন সমঝোতায় আসতে নারাজ হলে স্হানীয় ও প্রশাসনের সহযোগীতায় তাদের দখলকৃত জায়গাটি উচ্ছেদ করলে রিজিয়া খাতুন সহ তাঁর পরিবার বোয়ালখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী দায়ের করেন। ওদিকে আলতাফ হোসেনের পরিবার এই ডায়েরিতে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়ার দাবি করেছেন।

এরপরই আজ রাতে রিজিয়া খাতুনের নাতি মোহাম্মদ খালেদ (১৮) সহ ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল গিয়ে আগুনে কৃত্রিম পদার্থ ঢেলে বসতবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন আলতাফ হোসাইনের পরিবার।

ক্ষতিগ্রস্হরা জানায়, আগুন লাগানোর সময় তাদের বাড়ির মূল ফটকের বাহিরের দিক থেকে আটকে দেয়া হয়। যে কারণে তারা মৃত্যুর আশংকায় ছিলেন।

এদিকে আলতাফ হোসাইন পাবলিক ভয়েসকে বলেন’ রিজিয়া বেগম ও তাঁর নাতি সহ ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দলের পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা এটি। এর মূল উদ্যেশ্য তাঁদেরকে ফাঁসানো। এই ঘটনায় তাদের অন্তত ১৩ লক্ষ টাকা সমপরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও দাবী করেন তিনি।

এ বিষয়ে রিজিয়া বেগম ও তাঁর পরিবারের বক্তব্য নিতে চাইলেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে সরেজমিনে তাৎক্ষণিক ছুটে আসে বোয়ালখালী ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট।তাদের সমন্বিত কার্যক্রমের মাধ্যমে অগ্নিকাণ্ডটিকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান বোয়ালখালী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ মোহাম্মদ নুরুল আবেদীন।

তিনি পাবলিক ভয়েসকে বলেন” অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে দ্রুত ছুটে এসেছি। আর এই ঘটনায় কতটুকু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা আমার দু একদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রকাশ করবো।

অগ্নিকান্ডের ১১ ঘন্টা অতিবাহিত হওয়ার পর ঘটনার বিবরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেয়ামত উল্লাহ প্রাথমিকভাবে কোনো বক্তব্য দিতে না পারলেও কিছুক্ষণ পর তিনি ব্যক্তিগত মুঠোফোনে জানান, বর্তমান সময়ে গ্রামাঞ্চলে ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতে এমন অপ্রীতিকর ঘটনা অনেকটা কমে এলেও বোয়ালখালীর এই ঘটনাটি অনেকটা ন্যাক্কারজনক।

তবে এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অপরাধ পর্যবেক্ষক আতাউল্লাহ সামী বলেন ”গত ৩ দশক পূর্বে গ্রামাঞ্চল গুলোতে জায়গা-জমির বিরোধ হলে মারামারি কিংবা ঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতো স্বার্থান্বেষীরা।বর্তমান সময়ে এমন ঘটনা বিরল বলেও আখ্যায়িত করেন তিনি। এ বিষয়ে যথাযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

মন্তব্য করুন