বাংলাদেশে বাবরী মসজিদ স্থাপন সম্মেলনে উপস্থিত থাকছেন যারা

প্রকাশিত: ৮:৪৯ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২০

ভারতের অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদের আদলে বাংলাদেশে নির্মিত হচ্ছে একটি মসজিদ। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক রায়ের মাধ্যমে এই মসজিদের জায়গা দখল করে হিন্দুত্ববাদী সরকারের সহায়তায় সেখানে রামমন্দির নির্মানের ঘোষণা দেওয়ার পর বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের হৃদয়ে রক্ষক্ষরণ হয়েছে।

সেই স্মৃতি ধরে রাখতেই বাংলাদেশে প্রায় তিনবিঘা জমির ওপর ‘জামিয়াতুত তারবিয়াহ-কলাতিয়া কেরানীগঞ্জে’ এই মসজিদটি নির্মিত হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক রহ. এর সন্তান ও খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি বিশিষ্ট ওয়ায়েজ মাওলানা মামুনুল হক।

ঐতিহাসিক এই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও এ উপলক্ষে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারী বুধবার সকাল ৯ টা থেকে ‘জামিয়াতুত তারবিয়াহ-কলাতিয়া কেরানীগঞ্জে’ ইসলামী মহা-সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। শায়খুল হাদিস মাওলানা মাহফুজুল হক এর সভাপতিত্বে ও মাওলানা মামুনুল হকের আহবানে আয়োজিত এ মহা সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন দেশের বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরামগণ।

এ বিষয়ে মাওলানা মামুনুল হকের একটি দাওয়াত আহবান করা ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা যায়, এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর ও দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মধুপুরের পীর সাহেব মাওলানা আব্দুল হামিদ। দেওনার পীর সাহেব অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী, মুফতি আবুল হাসান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ।

প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সুপরিচিত ইসলামী বক্তা মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী। আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত থাকবেন মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা খোরশেদ আলম কাসেমী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা আব্দুল বাসেত খান, মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ আজহারী, মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন রাজী, ও মাওলানা হামিদ জাহেরী সহ বিভিন্ন ওলামায়ে কেরাম।

এই মসজিদ নির্মান ও বাবরী মসজিদ নাম দেওয়ার কারণ উল্যেখ করতে গিয়ে মাওলানা মামুনুল হক লেখেন, মুঘল সম্রাট বাবরের আদেশে ১৫২৮-২৯ মোতাবেক ৯৩৫ হিজরীবর্ষে ভারতের উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদ জেলার অযোধ্যা শহরে নির্মিত হয় ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ । মসজিদ নির্মাণের কয়েক শত বছর পর উগ্রবাদী হিন্দুরা তাদের ধর্মের কল্পিত অবতার রামচন্দ্রের জন্মভূমির ভূয়া দাবি তুলে বিতর্ক সৃষ্টি করে এবং ১৯৯২ সালে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় প্রায় পাঁচশত বছরের প্রাচীন মসজিদটিকে শহীদ করে দেয় । বাবরী মসজিদের শাহাদাত বিশ্ব মুসলিমের হৃদয়ে জ্বালিয়ে দেয় চেতনার বহ্নীশিখা। বাংলাদেশে ঘটে তার সর্ববৃহৎ বিস্ফোরণ।

শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হকের নেতৃত্বে বাবরী মসজিদ লংমার্চের মাধ্যমে পরিচালিত হয় স্মরণকালের বৃহত্তর আন্দোলন। সে আন্দোলন বাবরী মসজিদ রক্ষায় বিশ্বজনমত গঠনে রাখে বিশাল ভূমিকা। কিন্তু বিশ্বজনমত, ন্যায়-নীতিবোধ এমন কি ন্যূনতম যুক্তিরও কোনো তোয়াক্কা না করে ভারতের সুপ্রীমকোর্ট বাবরী মসজিদকে তার যথাস্থানে হতে বিলুপ্তির নির্দেশ দেয় । ইতিহাসের কলংকজনক এ রায় শান্তিকামী বিশ্ববাসীর মনে ঘৃণার জন্ম দেয়।আর মুসলমানদের হৃদয়ে জ্বালিয়ে দেয় ক্ষোভের আগুন। তারা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি এমন নির্লজ্জ প্রহসন। সহ্য করতে পারেনি আল্লাহর ঘর পবিত্র মসজিদের এমন নির্মম শাহাদাত। মুসলিম হৃদয়ে হৃদয়ে উচ্চারিত হয় শপথের বাণী- হাজার বছর পর হলেও আমরা বাবরী মসজিদ পুন:উদ্ধার করব ! মুক্ত করব আমাদের পাঁচশত বছরের পবিত্র সিজদাহগাহ! বাবরী মসজিদের গম্বুজ থেকে আবার ধ্বনিত হবে আযানের সুমধুর সূর !

বাবরী মসজিদের রক্তস্নাত ইতিহাস ও বাবরী মসজিদ রক্ষায় শায়খুল হাদীস রহিমাহুল্লাহর ঈমানী আন্দোলনের চেতনাকে জাগরুক রাখতে জামিয়াতুত তারবিয়াহ-কলাতিয়া ক্যাম্পাসে “বাবরী মসজিদ” নামে একটি সুবৃহৎ মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। আধুনিক নান্দনিকতার সাথে বাবরী মসজিদের আদলে প্রাচীন গম্বুজের মিশেলে তৈরি করা হয়েছে মসজিদটির স্থাপত্য নকশা, যা দর্শককে মনে করিয়ে দিবে বাবরী মসজিদের ইতিহাস আর আগামী প্রজন্মের হৃদয়ে জাগিয়ে তুলবে চেতনার মশাল!

মন্তব্য করুন