ঢাকাবাসীর জন্য বিশেষ নির্দেশনা

প্রকাশিত: ১:০৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩১, ২০২০

দিন পেরিয়ে রাত পোহালেই শুরু হবে ঢাকা মহানগরীর দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনী মহারণ। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। দুই সিটিতে ৯টি রাজনৈতিক দলের মোট ১৩জন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এর মধ্যে দক্ষিণে ৭জন এবং উত্তরে ৬জন। উত্তরে জাপার প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধতা পায়নি।

দুই সিটি নির্বাচনে বড় দুই দল আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে দুই সিটিতেই প্রার্থী দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ  ও এনপিপি।

ভোটের ডামাডোলে অংশ নিবেন তারাই যারা এই দুই সিটি কর্পোরেশনের ভোটার। যারা ভোটার নন তাদের জন্য রয়েছে বিশেষ নির্দেশনা। বিশেষ করে ভোটের দিন ঢাকার ভোটার নন এমন সবাইকে ঢাকায় অবস্থান করতে নিরুৎসাহিত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একান্ত জরুরী প্রয়োজন না থাকলে তাদেরকে গ্রামে চলে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একান্ত যারা ঢাকায় থাকবেন তাদেরকে জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বের না হওয়া, বের হলে নিজের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখাসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ইসি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে।

ইসির নির্দেশনা:

২৮ জানুয়ারি সন্ধায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম ও র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন ইসি। বৈঠনে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের বিশেষ নির্দেশনা দেন সিইসি কে এম নূরুল হুদ। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ইসি সচিব মো. আলমগীর।

ইসি সচিব জানান, অন্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে এলাকায় ভোট থাকে, সেই এলাকায় ভোটের দিন বাইরের কোনো লোক অবস্থান করতে পারে না। এটা রাজধানী। মানুষকে বিভিন্ন প্রয়োজনে এখানে আসতে হয়। এসব বিষয় বিবেচনা করে ওইসব বিষয় বন্ধ করা যাবে না। ঢাকায় ভোটার ছাড়া কোনো লোক থাকতে পারবে না বা বাইরের কেউ আসতে পারবে না- এগুলো করা যাবে না।

তিনি বলেন, বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে- ‘যারা ভোটার না, বিশেষ করে ঢাকায় বহিরাগত, তারা যেন ভোটকেন্দ্রে না আসেন। যদি অত্যন্ত প্রয়োজন না থাকে, তাহলে কেউ যেন ঢাকায় অবস্থান না করেন। যাদের জরুরি প্রয়োজন, তাদের তো থাকতেই হবে। তাদেরকে যেন পুলিশ এলাউ করে। যদি কোনোই কারণ না দেখাতে পারে, শুধু শুধু ঢাকায় এসেছে, তাদেরকে চলে যেতে বলা হয়েছে।’

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশনা:

ইসির নির্দেশনা জারির পর গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) জরুরী সংবাদ সম্মেলন করেন র‌্যাবের ডিজি বেনজির আহাম্মেদ। ভোটের মাঠের পরিবেশ সুসংগত রাখতে বিনা প্রয়োজনে কাউকে ঢাকায় না থাকার আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া ঠিকানা নির্দেশক রাখারও পরামর্শ দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নির্বাচনে ভাই-বোন আত্মীয় প্রার্থীর ক্যাম্পেইন করার জন্য যারা ঢাকায় এসেছিলেন, তাদের ধন্যবাদ, এবার আপনারা চলে যান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে অপ্রয়োজনীয় কোনো লোকের অপতৎপরতা আমরা চাই না। কারণ আজ রাতে প্রচারণা শেষ হয়ে যাবে। যদি কেউ থেকেও যান, আশা করবো আপনি যেখানে আছেন সেখানেই থাকবেন; যারা জেনুইন ভোটার তাদের চলাফেরা ভোটদানে সমস্যা করবেন না।

এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাব ডিজি বলেন, বাইরের কেউ ঢাকায় অবস্থান করলে তাদের জেলে পাঠাবো বিষয়টা এমন নয়। প্রত্যেকটা মানুষের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে, জেল জুলুমের ভীতি আমরা দেখাতে চাই না। আমার মনে হয় না আমার সে পর্যায়ে রয়েছি। আমরা আহ্বান করেছি যেন শহরে যারা জেনুইন ভোটার তারা সহজে শান্তিপূর্ণভাবে ও স্বাচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারেন এবং নিরাপদ পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সেজন্যই। মূলত শৃঙ্খলা রক্ষাই আমাদের আহ্বানের মূল লক্ষ্য। কাউকে জেলে পাঠানো আমাদের উদ্দেশ্য নয়। তবে যদি কেউ জেলে পাঠানোর মতো কাজ করেন, তাহলে তো জেলেই যাবেন।

অবস্থানরতদের পরিচয় সনাক্তে বিশেষ পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, কাল-পরশু যারা রাজধানীতে চলাফেরা করবেন তাদের সঙ্গে ঠিকানা নির্দেশক ফটো আইডি সঙ্গে রাখবেন।

/এসএস

মন্তব্য করুন