

পাবলিক ভয়েস : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের স্বার্থে শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ ছাড় দেওয়ার চেষ্টা করবে ছাত্রলীগ। অন্যদিকে ছাত্রদল ও বাম ছাত্রসংগঠনগুলো নির্বাচনের আগে হল ও ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের দাবি জানিয়েছে। নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে এসব মতামত তুলে ধরেন সংগঠনগুলোর নেতারা।
নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ আপিল বিভাগের প্রত্যাহার করায় ডাকসু নির্বাচনের বাধা কেটেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও ঘোষিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করার জন্য দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। শিক্ষার্থীদের ডাটাবেজ, পরিবেশ সংসদের ব্যানারে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করার পর এবার ডাকসুর গঠনতন্ত্র নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয় সংলগ্ন লাউঞ্জে আলোচনা শুরু হয়েছে। সেখানে সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা গঠনতন্ত্র সংশোধন, পরিমার্জনের জন্য তাদের সুপারিশ তুলে ধরেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন না হওয়ায় এবার প্রার্থিতার বিষয়টি নিয়ে ছাত্রসংগঠনগুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের অবস্থান জানতে চাইলে সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা হচ্ছে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে প্রার্থী হোক, গঠনতন্ত্রও তাই বলে।
কিন্তু দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ার একটি বাস্তবতা রয়েছে। সেজন্য নিয়মিত ছাত্রত্বের কাছাকাছি একটি বিধান রাখা যেতে পারে এক্ষেত্রে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিকল্প দেব। সবার মতামতের ভিত্তিতে যেটা গৃহীত হয়। নির্বাচনটা হোক সেটিই আমাদের প্রথম চাওয়া।
নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া মূল লক্ষ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ডাকসু নির্বাচন হয়নি। এজন্য শিক্ষার্থীদের স্বার্থে আমরা সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে আমরা নির্বাচনটা করতে চাই। কারণ আমরা মনে করি ছাত্রসংগঠনগুলোর দ্বিধাদ্বন্দ্বের কারণে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এজন্য ছাত্রসংগঠনগুলো যে ধরনের সমঝোতায় আগ্রহী থাকে আমরা সেটাতে রাজি হবো।
ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার বলেন, আমরা চাই নির্বাচনের আগে সব ছাত্র সংগঠনের জন্য সহবস্থান নিশ্চিত করা। গঠনতন্ত্রে প্রার্থীদের বয়সসহ অনেকগুলো বিষয় যুগোপযোগী করা দরকার বলে আমাদের মনে হয়েছে।
তবে এখনও পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্ত আসতে পারেনি ছাত্র ইউনিয়ন। ঢাবি সংসদের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ বলেন, আমদের ১৯৯১ এর গঠনতন্ত্র দেওয়া হয়েছে। যেখানে অনিয়মিত শব্দটা রয়েছে। কিন্তু ১৯৯৮ এ গঠনতন্ত্র সংশোধন করা হয়েছে। আমরা সব বিষয় বিশ্লেষণ করছি।
সহাবস্থানের মাধ্যমে নির্বাচনের আয়োজন করার জন্য প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চাই নির্বাচনটা হোক ৩১ মার্চের মধ্যে। গণতন্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সব কাজ করা পক্ষপাতমূলক আচরণ যেন পরিলক্ষিত না হয়।
গঠনতন্ত্রে প্রেসিডেন্টেরর একক ক্ষমতা কমানোর পক্ষে ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির। তিনি বলেন, ডাকসুর প্রেসিডেন্ট চাইলে যেকোন সিদ্ধান্ত এককভাবে নিতে পারেন। বাদ দিতে পারেন যে কাউকে। এটি স্বৈরতান্ত্রিক ক্ষমতার কাঠোমোর বহিঃপ্রকাশ। এজকজনকে এতো ক্ষমতা দেওয়া ঠিক না।
প্রার্থিতার বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু ২৮ বছর ধরে নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। প্রার্থিতার বয়সের বিষয়টি প্রশাসনের বিবেচনা করা উচিত। সদ্য সাবেক শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে বা একটি সেশন পর্যন্ত ঠিক করে দেওয়া।
ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের সহাবস্থান নেই উল্লেখ করে বেনজির বলেন, আমার কাছে এখনও মনে হয় না কোনো সহাবস্থান আছে। প্রশাসনের যদি সত্যি সদিচ্ছা থাকে নির্বাচনের আয়োজন করার নিশ্চিয়ই তারা এ বিষয়ে মনযোগ দেবেন।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে সহাবস্থান রয়েছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী। তিনি বলেন, কেউ অভিযোগ করলে সহাবস্থানের বিষয়টি আমরা দেখবো।