তুহিনকে তার বাবা আব্দুল বাছিরই হত্যা করেছে: পুলিশ সুপার মিজান

শিশু তুহিন হত্যা

প্রকাশিত: ৭:৩৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৫, ২০১৯

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের কেজাউড়া গ্রামে শিশু তুহিন মিয়ার (৫) নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবা আব্দুল বাছিরই মূল হোতা বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত) মিজানুর রহমান।

শিশু তুহিনকে তার বাবা আব্দুল বাছিরই হত্যা করেছে উল্লেখ্য করে সুনামগঞ্জ জেলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, পুলিশ হেফাজতে নেওয়া ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের পেছনে পরিবারের সদস্যদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাবাদের পর তাদের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে হত্যার কথা জানা গেছে।

পুলিশ সুপার জানান, ঘুমন্ত তুহিনকে কোলে করে ঘরের বাইরে নিয়ে আসেন বাবা। আর বাবার কোলেই ঘুমন্ত অবস্থায় শিশু তুহিনকে ছুরি দিয়ে গলাকেটে খুন করেন চাচা নাসির উদ্দিন। এরপর তুহিনের কান ও লিঙ্গ কেটে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়।

তিনি বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এই হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে। এছাড়াও আকটকৃতদের মধ্যে দু’জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার মিজান।

এদিকে আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে নিহত তুহিনের বাবা আব্দুল বাছির, চাচা জামশেদ আলী, আব্দুল মোশাব্বিরকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্যাম কান্ত সিনহার আদালতে হাজির করে পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তিন জনের তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দিরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু তাহের মোল্লা ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।

রোববার দিনগত রাত সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে ৫ বছরের শিশু তুহিনকে নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যা করে লাশ গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে ঘাতকরা। খুনীরা তুহিনের গলা, কান, ও লিঙ্গ কেটে ফেলে। হত্যা ব্যবহৃত দুটি ছুরি তার পেটের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখে। সোমবার (১৪ অক্টোবর) ভোরে গাছের সঙ্গে ঝোলানো অবস্থায় শিশুটির মরদেহ দেখতে পায় পরিবারের লোকজন। তখন তার পুরো শরীর রক্তাক্ত, কান ও লিঙ্গ কাটা ছিল। এছাড়া পেটে দু’টি ছুরি বিদ্ধ ছিল। নিহত শিশু তুহিন ওই গ্রামের আব্দুল বাছিরের ছেলে।

পরে সোমবার রাতে তুহিনের মা মনিরা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের নামে দিরাই থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

এঘটনায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর এমন নৃশংস কাণ্ড ঘটানো হয়েছে এমন সন্দেহে তুহিনের বাবাসহ পরিবারের আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তারা হলেন- তুহিনের চাচা আব্দুল মছব্বির, জমশেদ মিয়া, নাসির মিয়া, জাকিরুল, তুহিনের বাবা আব্দুল বাছির, চাচি খাইরুননেছা, চাচাতো বোন তানিয়া, ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার।

এরমধ্যে আসামি তুহিনের চাচা নাসির ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে আটক ৫ জনকে দিরাই থানা থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে দুপুরের দিকে সুনামগঞ্জ আদালতে নিয়ে আসা হয়। নাসির ও শাহরিয়ারকে জেলহাজতে ও বাকীদেরকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

/এসএস

মন্তব্য করুন