কোরবানীর হাটে ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড়; অসুবিধা হলেও উপভোগ করেন স্থানীয়রা

প্রকাশিত: ৭:৩৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৭, ২০১৯
কথা বলছিলেন কুষ্টিয়ার জামালউদ্দিন। ছবি: মুহসিন, পাবলিক ভয়েস।

আকাশে চাঁদ উঠেছে-খুশির সানাই বেজেছে/খুশিতে কেটেছে নিদ-পোহালে রাত শেষে ঈদ। বিশ্বজুড়ে মুসলামানদের প্রধান উৎসবের প্রথমটি পবিত্র ঈদুল ফিতরের বার্তা স্পষ্ট হয় উপরোক্ত ছন্দ চরণে। কেননা, ঈদুল ফিতর তথা রমজানে ঈদে চাঁদ দেখার পর রাত পোহালেই ঈদ চলে আসে। অর্থাৎ ঈদের দিন তারিখ নিশ্চিত হওয়ার পর মাত্র এক রজনী অপেক্ষা করতে হয় উৎসবের আমেজ নিয়ে। এই দিক থেকে কোরবানীর ঈদ ব্যতিক্রম।

সারা বিশ্বেই জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আজহা উদযাপন করা হয়। ফলে চাঁদ ওঠার পর থেকে পুরো ৯ দিন ধরে চলে ঈদের আগমনী উচ্ছাস। এই উচ্ছাস-উৎসবে যোগ দেয় শিশু-কিশোর, তুরণ-যুবা থেকে বায়োবৃদ্ধরাও। উৎসবে বাড়তি আমেজে যোগ করে কোরবানীর জন্য পশু ক্রয়।

কোরবানীর পশু ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য বাজারে-বন্দরে বসে স্থায়ী-অস্থায় পশুর হাট। দেশিয় গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ এমনকি বিদেশ থেকে উটও আসে ইদানিং কোরবানীর হাটে। রাজধানীর ঢাকাতে প্রায় অধিকাংশ হাটই অস্থায়ী। ঢাকাবাসী এসব হাট থেকেই পছন্দের পশু কিনে কোরবানী করে থাকে। কেউ কেউ ঢাকা থেকে গরু কিনে গ্রাম পর্যন্তও নিয়ে যায়।

রাজধানীর শনিরআখড়া পশুর হাটে সরেজমিনে কথা হয় দর্শনার্থী ও ক্রেতা-বিক্রেতাসহ বিভিন্নজনের সাথে। জিলহজ্বের প্রথম দিন থেকেই দেশেরে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিক্রেতারা দেশিয় গরু নিয়ে রাজধানী হাটগুলো আসতে থাকে। দনিয়া-শনিরআখড়া এলাকার এই হাটে মাদারীপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, নড়াইল, গোপলপঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন  এলাকা থেকে বিক্রেতারা এসেছেন নিজেদের খামাড়ে পালিত দেশিয় গরু-ছাগল নিয়ে।

ব্যস্ততম এই এলাকায় দনিয়া কলেজ ছাড়াও রয়েছে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্কুল-কলেজ ছুটির পর বিকেলে পশুর হাটে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপিস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

দনিয়া কলেজের ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারের শিক্ষার্থী নাজমুল আলম জানান, শেখদীতে পরিবারসহ থাকেন। গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী। গরু দেখতেই এসেছেনন জানালেন। বলেন, প্রতিবছর কোরবানীতে ঢাকায় অথবা গ্রামে গিয়ে কোরবানীর ঈদ উদযাপন করেন। কখনো কখনো এখান থেকেই পছন্দমতো গরু কিনে ট্রাকে করে গ্রামে নিয়ে যান। কখনো গ্রাম থেকেও কিনেন যদি আগে যেতে পারেন।

দনিয়ার বাসিন্দা কুষ্টিয়ার জামাল উদ্দিন জানালেন, কোরবানীর ঈদ প্রতিবছর ঢাকাতেই ঈদ করেন। পারিবারিক প্লান অনুযায়ী এ বছর গ্রামে করবেন। কোরবানীও দিবেন গ্রামে। ঢাকায় ঈদ করলে এখান থেকেই গরু কিনেন বলে জানান। বাচ্চাকে নিয়ে বাজারে এসেছেন গরু দেখতে। ঢাকায় কোরবানী করলে প্রতিদিনিই বাজারে আসা হয়। সেই হিসেবে তখন পছন্দমতো হলে যেকোনো সময় গরু কিনে ফেলেন। এবার গ্রামে করবেন তাই বাড়ি গিয়ে এলাকার বাজার থেকে কোরবানীর গরু কিনবেন।

মহাসড়কে হাট বসায় চলাচলে অসুবিধা হয় কিনা জানতে চাইলে বলেন, ‘চলাচলে কিছুটা সমস্যা হলেও এটা আমরা উপভোগ করি। প্রায় প্রতিদিনিই আসা-যাওয়া করি এই পথে। তাতে চলাচলে ভিড় হলেও আনন্দ লাগে। ঈদ ঈদ একটা উৎসবের আমেজ কাজ করে’।

/এসএস

মন্তব্য করুন