ইসকনের ইতরামি বন্ধ করুন

প্রকাশিত: ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৮, ২০১৯

... বিদায় হজ্বের ভাষণে আল্লাহর নবী ও রাসুল (সঃ) স্পষ্ট করে ইসলামকে ‘পূর্ণাঙ্গ দ্বীন’ বলে ঘোষনা করেছেন। তাঁর পরে আর কোন নবী আসবেন না, না কোনও দ্বীন।

মুসলমানদের রয়েছে কমপ্লিট জীবন ব্যবস্থা। ইসলামী আইন তথা শরীয়তই নির্ধারণ করে দিয়েছে- মুসলমানরা কি খাবে, আর খাবে না? মুসলমানদের জন্য কোনটা হারাম কোনটা হারাম তা সুস্পষ্ট। কোন কোন প্রাণীর গোশত খাওয়া হালাল বা হারাম তা মুসলমানদের জানা আছে। অন্য ধর্মের লোকদের প্রদত্ত গোশত খাওয়া মানা আছে। যবাই করা গোশত খেতে হলে আল্লাহর নামে যবাই করতে হবে। ভিন্ন ধর্মের লোকদের জবাই করা গোশত হারাম। এমন খাদ্য খাওয়া যাবেনা।

এ জামানায় মুসলমানদেরকে সহযোগিতার নামে অন্য কোন ধর্ম বা সংগঠনের দান খয়রাত গ্রহণের দরকার নাই। আল্লাহর রিযিক অফুরন্ত। অন্য কোন ধর্ম বা ধর্ম ভিত্তিক সংগঠন প্রদত্ত নাপাক খাবার মুসলমানদের জন্য নয়।

এভাবে ইসলামী মূল্যবোধকে হালকা করার ষড়যন্ত্র মানা যায় না। ফ্রি খাবার বিতরণের নামে দেবদেবীর নামে উৎসর্গিত প্রসাদ খাইয়ে চট্টগ্রামে অন্ততঃ ১০টি স্কুল ছাত্রছাত্রীদেরকে মোটিভেটেড করার প্রথম প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। ঐ সব স্কুলের কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষক-শিক্ষিকারাও এ ষড়যন্ত্রে পা দিয়েছে। না হলে গেরুয়া রঙয়ের কাপড় পরা স্বেচ্ছাসেবকদেরকে স্কুলে কেন এলাউ করবে?

“ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনসাসনেস” যা সংক্ষেপে ISKCON বাংলায় “আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ” । এ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা কিন্তু ভারতে নয়, আমেরিকার নিউইয়র্কে। মাত্র ৪৮ বছর আগে, ১৯৬৬ সালে। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতার নাম ‘অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ’। এ ব্যক্তি ভারতে কোন হিন্দু শিক্ষালয়ে লেখাপড়া করেনি, লেখাপড়া করেছে খ্রিস্টানদের চার্চে। স্বামী প্রভুপাদ নতুন ধরনের হিন্দু সংগঠন চালু‌র পর প্রথমেই তাতে বাধা দিয়েছিলো মূল ধারার সনাতন হিন্দুরা। অধিকাংশ হিন্দুই তার বিরুদ্ধচারণ শুরু করে। কিন্তু সেই সময় স্বামী প্রভুপাদের পাশে এসে দাড়ায় পশ্চিমা জে. স্টিলসন জুডা, হারভে কক্স, ল্যারি শিন ও টমাস হপকিন্স-এর মত ইহুদী-খ্রিস্টানদের প্রভাবশালী চিহ্নিত এজেন্টরা।

মূলত: ইসকন হচ্ছে হিন্দুদের মধ্যে পশ্চিমাদের তৈরী নতুন ফেরকা। মুসলমানদের মাঝে যেমন- শিয়া, কাদিয়ানী ও হালে হেযবুত তাওহীদ প্রভৃতি। তাদের জন্ম আমেরিকা না গোয়ায় ? তাঁরা ফেরকা না চরকা? তা নির্ধারণ করবে হিন্দু ধর্মের ওলামারা। কিন্তু এখানে মুসলমান রিলেটেড ওদের কার্যকলাপ সহ্যের বাইরে। এটা নো মার্সি।

ইহুদীদের অর্থায়নে পরিচালিত ধর্ম বা সংগঠন মুসলমানদের আপন কেউ হতে পারে না। ওরা মূল হিন্দুদেরও কেউ না। ওটা একটা ইহুদীদের দ্বারা পরিচালিত নতুন একটি ধর্ম। তাঁরা মূলতঃ কৌশলে ভারতবর্ষে মূল হিন্দুদের নেতৃত্ব দখল করতে চায়। ইসকনে সাদা চামড়ার লোক তুলনামূলক বেশি কেন? এ প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গেলে ওদের মূল পরিচয়টা পেয়ে যাবেন। ইসকনকে আপনার বিবেচনায় ‘অতিহিন্দু’ মনে হলেও এরা হিন্দুদের মধ্যে বিভ্রান্তি চালু করতেই বেশি তৎপর। যার কারণে মূল সনাতন হিন্দু ও ইসকনদের মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক।

সম্রাজ্যবাদীদের নিয়ম হচ্ছে, তারা যদি কোন নতুন মতবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তবে তারা এর জন্য প্রথমে বেছে নেয় রিমোট এলাকা ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীগুলোকে। এজন্য ইসনকনিরা তাদের কার্যক্রম নিম্নবর্ণ, অশিক্ষিত ও চরম দরিদ্র শ্রেণীর হিন্দুদের মাঝে ব্যাপৃত।

নতুন এ মতবাদ বিস্তার করতে ইসকন পশ্চিমাদের ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে দরিদ্র হিন্দুদেরকে মূল হিন্দুত্ববাদ থেকে সরিয়ে নতুন মতবাদে দীক্ষিত করছে। ইসকনের অতিহিন্দুপনা দেখে অনেক হিন্দু তাদেরকে বাহবা দিতে পারে।

সত্যি বলতে কি! ইসকন বাংলাদেশে এসেছে হিন্দুদের উপকার করতে নয়, বরং ক্ষতি করতে। বাংলাদেশে হিন্দুরা যে সুখের স্বর্গে বাস করে তা ধ্বংস করাই এ গোষ্ঠীটির কাজ। বাংলাদেশে অনলাইন এবং অফলাইন উভয় জগতে হিন্দু-মুসলিম বিভেদ ও সাম্প্রদায়িক উস্কানি সৃষ্টির মূল ইন্ধনদাতা হচ্ছে এই ইসকন।

বাংলাদেশে অতি সম্প্রতি যে ‘হিন্দু-মুসলিম বিভেদ’ মিডিয়ায় জোড়ালো করে দেখানো হচ্ছে, সেটারও কলকাঠি নাড়ছে ইসকনের অঙ্গসংগঠনগুলো। যেমন জাতীয় হিন্দু মহাজোট, জাগো হিন্দু ইত্যাদি।

গোয়েন্দা সংস্থা সাবেক সেনা প্রধানদের উদ্বৃতি উল্লেখ করে- ‘বাংলাদেশে র’ নামক বইটিতে ১৭১ পৃষ্ঠায় স্পষ্ট লেখা- ‘ইকসন হচ্ছে একটি ইহুদী সংগঠন’। আসলে ইহুদীরাই ইসকন নাম দিয়ে হিন্দুদের ভেতর ঢুকে গেছে, এবং ভারতবর্ষে তাদের কার্যসিদ্ধি করছে।

ইসকন একটি রহস্যময়ী সংগঠন। হিন্দু সংগঠনের নামে হলেও এটা পরিচালনা করছে ইহুদীরা। এ সংগঠনটির জন্ম আমেরিকায়। এটা না ধর্মীয়, না কোন প্রচলিত কোন সংগঠন। সারা দুনিয়া রেখে শুধুমাত্র উপমহাদেশে ওদের বিচরণ। তাঁরা নিজেদেরকে সংগঠন দাবী করে, অথচ হিন্দুদের প্যারালাল তারা মন্দির নির্মাণ করছে। তাও আবার নিম্ন বর্ণের হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায়। যাতে ওদের প্রতি নিম্ন বর্ণের হিন্দুরা আকৃষ্ট হয়।

মুসলমানদের মাঝে নিম্নবর্ণ উচ্চ বর্ণ নাই। অবশ্য ধনী গরীব রয়েছে। তাই গরীবদের প্রতি তাদের টার্গেট। আর বিদ্যালয়গুলোতে ধনী গরীব সব ধরনের শিক্ষার্থীই পড়ে।দেশে বিদ্যালয়ে লাঞ্চের ব্যবস্থা চালু নাই। এ পর্যায়ে কেউ যদি খাবার নিয়ে আসে, সেটা আপাতদৃষ্টিতে আকৃষ্ট করে। এ দূর্বলতার সুযোগে তারা চট্টগ্রামের দশটি স্কুলে ‘ফুড ফর অল’ প্রোগ্রামের আওতায় ছাত্রদেরকে খাবার খাইয়েছে। তাঁরা প্রসাদ বিতরণ করেছে। এটা তো চরম ধৃষ্টতা। এটা অমার্জনীয় সাম্প্রদায়িক পাপাচার। এছাড়া বিরানী ও খিঁচুড়ি খাইয়েছে। যাতে গোশত ছিল। কিসের গোশত? গরুর? সেটা তো হিন্দুদের জন্য একটা ঠাডা। তাহলে কি ছাগলের গোশত? এটা যদি হয়, তাহলে কি আল্লাহর নামে যবাই হয়েছে? বলা হবে মুসলমানরাই দেখভাল করেছে। ইসকনের মধ্যের মুসলমানরা কেমন মুসলমান? খতনা ছাড়া আর কোন তফাত আছে?

অতো সতো বুঝি না। ইসকনিদের দৌরাত্ম্য দ্রুত থামাতে হবে। তাঁরা সরকারের একটি অংশের আশীর্বাদ নিয়ে এমন তৎপরতা চালাতে পারছে। সরকারের কাছে দরখাস্ত দিয়ে লাভ হবে না। এর প্রতিকার পাবেন, আপনি আমি আর সবাই রাজপথে নামলে। ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভে শামিল হলে। সরকারের টনক নাড়াতে হবে, যাতে তাঁরা ইসকনিদের তৎপরতা বন্ধ করে দেয়। ঘরে বসে থাকলে অথবা শুধুমাত্র কীবোর্ড চাপলেই আপনার দায়িত্ব শেষ নয়। এটা ঈমান-আমানের দায়িত্ব।

আসুন ঝাঁপিয়ে পড়ি রাজপথে, ওদের ডানা কাটতে। এর কোন বিকল্প নাই। পাশে তাকান, দেখবেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কর্মীরা আপনার পায়ে পায়ে হাঁটছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম শাখা, আগামী ১৯শে জুলাই এমনি একটি প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছে। আসুন, গলা ছেড়ে শ্লোগান তুলি ……………….

লেখক : এক্টিভিস্ট’, বিশ্লেষক, কলামিস্ট।।

মন্তব্য করুন