

প্রাথমিক স্কুলে মুসলমান মেয়েরা যাতে হিজাব বা অন্য কোনো মাথার কাপড় ব্যবহার করতে না পারে সেই লক্ষ্যে একটি ধর্মবিরোধী আইন পাস করেছে অস্ট্রিয়া সরকার৷ তবে ইহুদিদের টুপি এবং শিখদের পাগড়ি এই আইনের আওতায় রাখা হয়নি৷ মাথা খোলা রাখার জন্য এমন আইন করা হবে বলা হলেও ইহুদি ও শিখদের এই
অস্ট্রিয়ার সংসদ প্রাথমিক স্কুলে মুসলমানদের হিজাব বা মাথার কাপড় নিষিদ্ধ করে এক আইন পাস করেছে৷ তবে এই আইনকে বৈষম্যমূলক হিসেবে বিবেচনা করে দেশটির সাংবিধানিক আদালতে সেটিকে চ্যালেঞ্জ করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন মুসলিম কম্যুনিটির নেতারা।
সংসদে বিলটির পক্ষে ভোট দেন দেশটির ক্ষমতাসীন মধ্য ডানপন্থি দল পিপল’স পার্টি এবং উগ্র ডানপন্থি ফ্রিডম পার্টির সদস্যরা৷ তবে, সংসদে বিরোধী দলের প্রায় সব সদস্য বিলটির বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন৷
আইনটির লক্ষ্য শুধু মুসলমানরা নয় – এমন ধারণা দিতে সেটিতে লেখা হয়েছে, ‘‘যে-কোনো আদর্শগত বা ধর্মীয় প্রভাবান্বিত পোশাক, যা মাথা ঢেকে রাখার লক্ষ্যে ব্যবহার করা হয়’’ তা নিষিদ্ধ৷
তবে বুধবার রাতে সরকারের তরফ থেকে এটাও জানানো হয়েছে যে, শিখদের পাগড়ি বা ইহুদিদের টুপি এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে না, কেননা আইনটিতে এমন মাথার কাপড়ের কথা বলা হয়েছে, যেটি সব চুল বা মাথার অধিকাংশ অংশ ঢেকে রাখে৷ এছাড়া চিকিৎসা সংক্রান্ত কারণে, কিংবা বৃষ্টি ও তুষারপাত থেকে বাঁচতে মাথা ঢেকে রাখতে কোনো বাধা নেই৷
প্রসঙ্গত, মুসলমান মেয়েদের জন্য বয়ঃসন্ধিকাল থেকে হিজাব ও বোরকা পড়া ফরজ বিধান হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। কিন্তু অস্ট্রিয়ায় মুসলমান নারীদের ধর্মপালনে বাধা দিতেই এমন আইন করা হয়েছে বলে ধারণা সবার এবং ক্ষমতাসীন দলের আইনপ্রণেতারা ইতোমধ্যে স্বীকার করেছেন যে, নতুন আইনটি মূলত মুসলমান মেয়েদের জন্যই প্রণয়ন করা হয়েছে৷
পিপল’স পার্টির আইনপ্রণেতা ব়্যুডল্ফ টাশনার ‘‘মেয়েদেরকে নতি স্বীকার করা থেকে মুক্ত করতে’’ এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে৷ আর ফ্রিডম পার্টির শিক্ষা বিষয়ক মুখপাত্র ভেন্ডিল্যান ম্যোলৎসার মনে করেন, এই আইনের মাধ্যমে রাজনৈতিক ইসলামের বিরুদ্ধে একটি বার্তা দেয়া হয়েছে এবং সমাজের মূলধারায় সবাইকে সম্পৃক্ত করাকে উৎসাহিত করা হয়েছে৷
তবে সাবেক সামাজিক গণতন্ত্রী দলের শিক্ষামন্ত্রী সোনিয়া হামার্স্মিড্থ সরকারের বিরুদ্ধে ইন্টিগ্রেশন বা শিক্ষাবিষয়ক প্রকৃত সমস্যা সমাধানের বদলে সংবাদ শিরোনামে যাওয়ার চেষ্টার অভিযোগ এনেছেন৷
উল্লেখ্য, অস্ট্রিয়ার আনুষ্ঠানিক মুসলিম কমিউনিটি অর্গানাইজেশন নতুন আইনটিকে ‘ধ্বংসাত্মক’ এবং শুধুমাত্র ‘মুসলমানদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে সেটির বিরুদ্ধে আইনি লড়াই পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছে৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে