

আজকাল দেশে নানা রকমের সংগঠন তৈরি হচ্ছে। এদের বেশিরভাগই চরম ভাবাপন্ন মনোভাব পোষণ করেই তৈরি হচ্ছে। সবাই নিজেদের কথা বলতে গিয়ে এমনভাবে বলছে যে খেয়ালই করছে না অন্যের অধিকার খর্ব হয়ে যাচ্ছে। কেউ ঠিক নীতির কথা বলছে না। নিজেদের বিশ্বাস অনুযায়ী যা সুবিধাজনক তাই বলছে, আর বলতে বলতে চরমপন্থী হয়ে যাচ্ছে। কখনো কখনো হয়তো টেরই পাচ্ছে না সে মধ্যপন্থী থাকছে না। বুঝতেই পারছে না যে সে যা বলছে তা কতোটা অযৌক্তিক।
সময় টিভির সিনিয়র রিপোর্টার ও সংবাদ উপস্থাপক সাজিদ রাজু আজ সোমবার তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে এসব কথা লিখেছেন।
রাজু লিখেছেন-
নারীবাদী সংগঠনগুলোকে দেখছি চরম নারীবাদী। নারীদের অধিকার আদায়ের কথা বলতে গিয়ে চরম পুরুষ বিরোধী বা বিদ্বেষ পোষণ করছে। কখনো কখনো ভুলেই যাচ্ছে যে তাদের ঘরেই নিজের বাবা বা ভাইইতো পুরুষ। কিংবা কিছু ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে সবাইকে জড়িয়ে ফেলছে, জেনারালাইজ করে ফেলছে। সেসব কথা শুনে বা দেখে পুরুষরা যাচ্ছে ক্ষেপে। অনলাইনে চরম ও গরম কথাও চালাচালি দেখছি।
ধর্মবাদীরাও চরম ধর্মবাদী হয়ে যাচ্ছে। ধর্মের কথা বলতে গিয়ে কখন যে অধর্মের কাজটি করে ফেলছে সে দিকে খেয়ালই নেই। নিজের ধর্মের কথা বলতে গিয়ে, অন্যের ধর্মকে কটাক্ষ করতেও ছাড়ছে না। কখনো বকধার্মিকরা যোগ দিচ্ছে এসব দলের সাথে। নিজের ঈমান আকিদার খেয়াল নাই, আরেক জনের পান থেকে চুন খসলেই রণ হুঙ্কার। শেষে এক জগাখিচুড়ি বানিয়ে ছাড়ছে।
আরেক দল ধর্ম বিরোধী বা ধর্মহীন। এরা আরো চরম অবস্থানে। অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের বিজ্ঞান মনস্ক প্রমান করতে গিয়ে অন্যদের বানাছে গাধা গরু। তাদের কথা শুনলে মনে হয় সারা দেশের ধর্ম পালনকারীরা মহা অন্যায় করে ফেলছে। এরাই পিছিয়ে পড়া, অবৈজ্ঞানিক আর মাথায় কিছু নেই। অযৌক্তিক সব বিষয় নিয়ে পড়ে আছে যার কোন মানে নেই।
একদলকে মাঝে মাঝে দেখি পশু-প্রাণীর অধিকারের কথা বলতে। এদের অবস্থা এমন যে, পশুরাই সব, মানুষ বলে কিছু নেই। এদের অনেকে মানুষকে পছন্দও করে না। ভাব এমন যে, মানুষ দিয়ে কিছু হবে না।পশুদেরই পারলে এরা মানুষ বানিয়ে ছাড়ে। মানে ভারসাম্য নাই। মানুষের সাথে পশুকে গুলিয়ে ফেলছে, পশুকে ভালোবাসতে গিয়ে সে ভুলেই যাচ্ছে যে সেও মানুষ।
সর্বশেষ আরেক মহান বিজ্ঞদের দেখা পাওয়া গেল। যারা রীতিমতো গবেষণা করে জঙ্গি সনাক্তের ফর্মুলা আবিষ্কার করে ফেলেছে। সম্প্রীতি বাংলাদেশ নামের এই সংগঠনের সাম্প্রতিক কিছু কথা বার্তা নিয়েও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা সমালোচনা চলছে।
আমার কথা ভাই পরিস্কার, কাউকে আগে থেকেই প্রতিপক্ষ বানিয়ে মাঠে নামলেন, তাহলে সম্প্রীতি স্থাপন করবেন ক্যামনে?
ভারসাম্য আনতে না পারলে এসব ভূইফোড়, স্বার্থ সিদ্ধির সংগঠন করে লাভ নেই। যাকে যার প্রাপ্য সম্মান দিতে না পারলে, মানুষকে মূল্যায়ন করতে না পারলে, ক্ষুদ্র গণ্ডির বাইরে বের হতে না পারলে সমাজে আপনি বিশৃংখলাই শুধু বাড়াবেন। সম্প্রীতির দেখা পাবেন না।
লেখক-
সিনিয়র রিপোর্টার ও সংবাদ উপস্থাপক, সময় টিভি