
দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় সৃষ্টি হওয়া শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ থেকে বাঁচতে আল্লাহ তায়ালার নিকট দোয়া কান্নাকাটি ও গুনাহ থেকে খাটি দিলে তাওবার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও হাটহাজারী মাদরাসার সহযোগী পরিচালক আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী ৷
২ রা মে বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত এক বার্তায় এ আহ্বান জানান তিনি৷
ভূমিকম্প, ভূমিধস, জলোচ্ছ্বাস-ঘূর্ণিঝড় এসব আল্লাহ তায়ালার আজাব উল্লেখ করে আল্লামা বাবুনগরী বলেন,বান্দা যখন আল্লাহ তায়ালার অবাধ্যতা, নাফরমানি আর গুনাহ বেশি করতে থাকে তখন গুনাহ থেকে ফিরে আসার জন্য আল্লাহ তায়ালা বিভিন্ন আযাবের মাধ্যমে বান্দাকে সতর্ক করেন ৷ বর্তমানে সময়ে বঙ্গোপসাগর এলাকায় সৃষ্টি হওয়া শক্তিনালী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ আমাদের গুনাহেরই ফল৷
তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্যমতে এ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে সিডরের চেয়েও অনেক বড় আঘাত হবে। তাই আমাদের উচিত আসন্ন এ আজাব থেকে বাঁচতে মহান প্রভূর দরবারে দোয়া-কান্নাকাটি ও খাটি দিলে নিজেরপূর্বকৃত সমস্ত গুনাহ থেকে তাওবা করা এবং গুনাহ ও অপকর্ম বর্জন করা ৷
আল্লামা বাবুনগরী বলেন, গুনাহের জীবন পরিত্যাগ করে পূণ্যের জীবন গড়তে হবে ৷ নিজের ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় -আন্তর্জাতিক মরিমন্ডল সহ সর্বক্ষেত্রে গুনাহ থেকে আমাদের বেঁচে আল্লাহ তায়ালার হুকুম এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শমতে জীবন পরিচালনা করতে হবে ৷
জান-মালের হেফাজত সহ দেশের সকল মানুষকে যেন আল্লাহ তায়ালা এ ঘূর্ণিঝড়ের কবল থেকে রক্ষা করেন তাই আগামীকাল জুমার নামাযের পর দেশের প্রত্যেকটি মসজিদে বিশেষ দুআ-মোনাজাতের আহ্বান জানান আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ৷
প্রসঙ্গত : তীব্র প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ ভারতের ওড়িশা হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে। এই অবস্থায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার প্রস্তুতি হিসেবে উপকূলীয় তিন বিভাগে মোট ২ হাজার ৩৬২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ মুজিবর রহমান এসব মেডিকেল টিম গঠনের কথা জানান।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘এই দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভাগীয় পর্যায়সহ জেলা ও উপজেলায় জরুরি সভা করা হয়েছে এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরে ‘ফণী’ মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাকে নিয়ে আজ প্রস্তুতিমূলক সভা করা হয়েছে। জরুরি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি নির্দেশনামূলক গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে, যা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় পাঠানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আক্রান্ত সম্ভাব্য জেলার সব উপজেলার সকল চিকিৎসক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ছুটি এবং সব ধরনের প্রশিক্ষণ বাতিল করা হয়েছে। জেলা, উপজেলা ও প্রতিষ্ঠানভিত্তিক জরুরি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।’
জেলা পর্যায়ে ৩টি, উপজেলা পর্যায়ে ৫টি এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ১টি ‘জরুরি মেডিকেল টিম’ গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বরিশাল বিভাগে ৪৯৭টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০৪৮টি এবং খুলনা বিভাগে ৮১৭টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে বলেও জানান মুজিবর রহমান।

