

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। দুর্বল অবস্থায় ঝড়টি বাংলাদেশের খুলনা উপকূলের দিকে এগোচ্ছে। ভোরের দিকে ঝড়টি খুলনা অঞ্চলে প্রবেশ করতে পারে। ক্রমশ দুর্বল হয়ে আসলেও ঝড়ের সঙ্গে উপকূলীয় জেলা এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন।
শনিবার (৯ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমশ উপকূলের উত্তর পূর্বদিকে অগ্রসর হচ্ছে। গতি কমলেও ল্যান্ডফলের সময় স্বাভাবিক জোয়ারের তুলনায় পাঁচ থেকে সাত ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা এখনও রয়ে গেছে।
বিএমডি জানায়, শুক্রবার দুপুর ১২টায় ঘূর্ণিঝড়টির অবস্থান চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৬৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ১০০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
‘বুলবুল’ উপকূল অতিক্রমকালে ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত থাকতে পারে। আর বাতাসের গতিবেগ সর্বোচ্চ উঠতে পারে ১৪৪ কিলোমিটার। বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে বুলবুলের ঘূর্ণনের গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার। উপকূল অতিক্রমের আগে এটি কিছুটা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগ এসব তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের উপ-পরিচালক আয়েশা খাতুন জানান, ঘূর্ণিঝড়ে খুলনা ও বরিশালের উপকূলীয় অঞ্চল আক্রান্ত হতে পাারে। উপকূল অতিক্রম করে বাংলাদেশে আসতে ভোররাত পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। ঝড়টি সুন্দরবনের দিক দিয়ে অতিক্রম শুরু করেছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঘূর্ণিঝড়টি প্রবেশ করার সময় বাতাসের গতিবেগ থাকবে ৬২-৮৮ কিমি। ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের কাছে চলে এসেছে। সেখানে সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা কম। ভার্টিক্যাল উইন্ড শেয়ার এখানে খুব বেশি হয়ে গেছে। এই কারণে সাইক্লোনটা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসহ ৯ উপকূলীয় জেলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হচ্ছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই সতর্কতা জারি থাকবে। ১০ নম্বর সতর্কতার আওতায় থাকা জেলাগুলো হচ্ছে- ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ।
৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে- উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর সমূহ। এছাড়া কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
মুহসিন/পাবলিকভয়েস