

-আকন সিরাজুল ইসলাম
দেশব্যাপী পরিচিত নাম মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দীক, মুফতী হাবিবুর রহমান মিছবাহ, মুফতী মাহফুজুর রহমান জাবের। তিনটি রত্ন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে দেশের বাইরেও যাঁদের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। যাদের কথা বলছি— তাঁরা আপন তিন সহোদর। মাহফুজুর রহমান জাবেরের পরিচিতি এখনও তেমন বিস্তৃত না হলেও মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দীক ও মুফতী হাবিবুর রহমান মিছবাহ’র পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া।
যাঁদেরকে সবাই একনামে চেনে ‘কুযাকাটার হুজুর’। কুয়াকাটা যতটা না বৈচিত্রের কারণে পরিচিত, তার চেয়ে বেশি পরিচিত কুয়াকাটা হুজুরদের কারণে। অভাবী সংসার থেকে উঠে আসা জীবনের মহাবিপর্যয়ের ওপর দিয়ে আলোকবর্তিকা হয়ে ওঠা তিন সহোদরের গর্বিত পিতা জনাব মোসলেম মুসুল্লী মুছা। তিনি এবার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পটুয়াখালী জেলার সহকারীপ্রশিক্ষণ সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন।
তিনি যুবকবয়স থেকেই ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত। কুয়াকাটা তথা ৭নং লতাচাপলী ইউনিয়কে দীনি দাওয়াতে জাগ্রত রেখেছেন এই ত্যাগী মানুষটি। নিজের জীবনের থেকেও বেশি মূল্যায়ন করেন ইসলামকে। কোনো বাধাবিপত্তি কখনও কাবু করতে পারেনি তাঁকে। ইসলামী আন্দোলন ও মুজাহিদ কমিটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাজ করা তার মূলনীতি। কাউকে পরোয়া করেন না এই আপোষহীন ব্যক্তিত্ব। পর্যায়ক্রমে কলাপাড়া উপজেলা ইসলামী আন্দোলন ও শ্রমিক আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
বর্তমান মহিপুর থানা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তিন বছর আগে তাঁর নিজ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচন করে দেশব্যাপী আলোচিত হয়েছেন। পটুয়াখালী জেলা সভাপতি মুফতী হাবিবুর রহমান বলেন— মোসলেম মুসুল্লী মুছার মতো নিবেদিতপ্রাণ খুব কম মেলে। তাঁকে জেলা কমিটিতে বহুবার যুক্ত করার চেষ্টা করেও তাঁর অপারগতায় পারিনি। তিনি বারবার জেলার দায়িত্ব এড়িয়ে চলতেন। কুয়াকাটা থেকে পটুযাখালী গিয়ে কাজ করা একটু কঠিনও বটে। তবে তিনি নিয়মিত পটুয়াখালীর সাংগঠনিক প্রোগ্রামগুলোতে এ্যাটেন করতেন।
এলাকায় কথিত আছে— সাংগঠনিক বিষয়ে যত কঠিন সিচুয়েশন হোক না কেন, মুছা ভাইর কাছে গেলে সহজ সমাধান পাওয়া যায়। লোকটি কখনও অন্যায় করেন না এবং অন্যায়ের প্রশ্রয়ও দেন না। তাঁর তিনটি ছেলে একমাত্র তাঁর এবং ভাবির আপোষহীন চেষ্টা ও দোয়ায় চোখের পানির কারণেই মানুষ হতে পেরেছে। আমরা নিজ চোখে ওনার সন্তানদের নিয়ে কষ্টের মুহূর্তগুলো দেখেছি। আমীরুল মুজাহিদীন হযরত পীরসাহেব চরমোনাই ও শায়খে চরমোনাইসহ দেশের শীর্ষ ওলামা বুজুর্গরা তাঁকে সম্মানশ্রদ্ধা ও স্নেহ করেন।
পটুয়াখালী জেলায় তিনি যুক্ত হওয়ায় জেলার সাংগঠনিক কাজে আগের তুলনায় অগ্রগতি আসবে এটা অনুমেয়। তিনি একজন জানবাজ কর্মী। ইসলামী আন্দোলনের কর্মী ফরমে পেশার জায়গায় তিনি লিখেছেন “ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ”। তাঁর জন্য শুভকামনা।