এবার আবু সুফিয়ান আল কাদেরীর ধৃষ্টতা

প্রকাশিত: ৬:৪৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১০, ২০১৯

ইবনে মুসা

প্রযুক্তির কল্যাণে অনেকের অনেক বিষয় খুব সহজেই আমরা পেয়ে যাই। বক্তাদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার ঝড় ওঠে। পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি-তর্ক চলে। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয় কমেডিয়ান বক্তাদের নিয়ে। ওয়াজের নামে গান পরিবেশন, বিড়ি খাওয়ার স্টাইলসহ নানা অঙ্গভঙ্গি করে শ্রোতাদের আকৃষ্ট করার কসরত করেন। স্বাভাবিকভাবেই সচেতন মানুষ এগুলোর কারণে বড্ড বিরক্ত হন।

এরচেয়ে মারাত্মক আরেক কিসিমের বক্তা অনেক আগ থেকে বাংলাদেশের কোষে কোষে বিচরণ করছেন! তারা কমেডি করে না, কিন্তু সরাসরি মানুষের ঈমান নিয়ে খেলা করেন। কথায় কথায় কুফরী মিশিয়ে মানুষকে খাইয়ে দেন। ফলে অনেক সরলমনা মুসলমান তাদের খপ্পরে পড়ে ঈমান-আমল সব হারিয়ে রিক্তহস্ত হয়ে যায়। তাদের বয়ানের বাজার অনেকটা মাজার কেন্দ্রিক। বিভিন্ন পীরবাবার মৃত্যু বাষিকী উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত ওরশ মাহফিলে তারা বয়ান করেন। ওরশে ওরশে কেটে যায় তাদের বছরের অধিকাংশ দিন।

আরও পড়ুন- ১৫’শ বছর চিন্তা করে আল্লাহ আমীর হামজাকে বানিয়েছেন : রফিকুল্লাহ আফসারী

প্রযুক্তির কল্যাণে তাদের ঈমান বিধ্বংসী বয়ানও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। নবীকে মুসলমান বললে ঈমান চলে যাওয়া সংক্রান্ত এক বেদআতী মৌলভীর বয়ান বাংলাদেশের সচতেন মুসলমানদের আহত করেছে! এতোটা র্মূখ মানুষ হতে পারে! দুইটা লাইন শুদ্ধ করে আরবী ইবারাত পড়তে পারে না এমন মানুষও দিনের পর দিন দিব্যি রাসূলের আশেক পরিচয়ে অন্যন্যাদের গালিগালাজের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে!


আবু সুফিয়ান খান আবেদী আল কাদেরীর এমন বহু বয়ান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসেছে। কোরআন-সুন্নাহর আলোকে যে বয়ানগুলো খুবই আপত্তিকর। ক্ষেত্রবিশেষে মানুষের ঈমান চলে যাওয়ারও শঙ্কা থাকে। তার একটি বয়ানে দেখেছি সকলকে তিনি মাজারে চাওয়ার জন্য শিক্ষা দিচ্ছেন! তিনি বলেন, আমিও আজকে মাজারে গিয়ে মাজারওয়ালার কাছে চাইব। মাজারওয়ালারা কবরে গিয়ে এত ধনী হয়েছেন যে চাইতে জানলেই পাইবেন। সুসন্তান চাইবেন। জাকাত দেওয়ার ক্ষমতা চাইবেন। শবে বরাতের দোয়া কবুল হওয়ার ক্ষমতা চাইবেন।


এ বক্তব্যগুলোর অসারতা প্রমাণের জন্য কোরআন-হাদীসের আলোকে আলোচনা করার প্রয়োজন মনে করি না। একজন সাধারণ মুসলমানও জানে যে, আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কবরে গিয়ে কোনো সাহাবী সুসন্তান চাননি। তিনি উম্মাহকে এগুলো থেকে বেঁচে থাকার নির্দেশ দিয়ে গেছেন। পৃথিবীর কোনো মানুষের সন্তান দেওয়ার অধিকার নেই। কবরওয়ালা যত বড়ই ওলী হোন না কেন, পৃথিবীর কোনো মানুষকে তিনি কোনো কিছু দিতে পারবেন না। যদি কেউ মনে করে কবরওয়ালা দিতে পারবে, তাহলে তার ঈমান থাকবে না!

বড় দুঃখ লাগে! মানুষ হাজার হাজার টাকা খরচ করে মাহফিলের আয়োজন করে! আবু সুফিয়ান সাহেবরা গিয়ে সেখানে মানুষের ঈমান আমলের বারোটা বাজিয়ে আসেন! এদের লাগাম টেনে ধরতে হবে! এখনই থামাতে হবে!

মন্তব্য করুন