

- ইশা ছাত্র আন্দোলনের উপর বামদের পক্ষ থেকে মিথ্যা অপবাদ চাঁপিয়ে দেয়ার অভিযোগ।
- ইসলামবিদ্ধেষী এক ছাত্রের বিপক্ষে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের বিপক্ষে অবস্থান বামদের।
- বামদের উপর অজ্ঞাত পরিচয়ের লোকজনের হামলাকে ইশা ছাত্র আন্দোলনের উপর চাঁপিয়ে দেয়ার অভিযোগ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ১৩তম ব্যাচের ছাত্র ফরহাদের নামে ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি অশালীন মন্তব্য ও ইসলামের নবী মুহাম্ম স. সম্পর্কে কটুক্তির অভিযোগে তার কঠোর শাস্তির দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা গতকাল (৭ এপ্রিল) দুপুর ২ টার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে। সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে ইশা ছাত্র আন্দোলন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃবৃন্দও সেখানেও যোগ দেন এবং ফরহাদের শাস্তির দাবি করেন বলে জানান ইশা ছাত্র আন্দোলন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মদ শাহীন আলম।
মিছিল শেষে ভাস্কর্যের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা ফরহাদকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে। এরপর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় প্রশাসনিক ভবনের সামনে ছাত্রদের সাথে কথা বলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোস্তাফা কামাল। তিনি ফরহাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যাবস্থা নিবেন বলে আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা চলে যায়।
এরপর মিমাংসিত এই ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য হঠাৎ করে ক্যাম্পাসে মিছিল বের করে বামজোট নামের সংগঠনের কিছু নেতাকর্মীরা। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ক্যাম্পাসে মিছিল করে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষীপ্ত হয়ে কেউ কেউ বামদের মিছিলে আক্রমন করে বসে এবং কয়েকজনকে আহত করে।
এরপর বাম সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় তাদের উপর আক্রমন করেছে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, জবি শাখার দপ্তর সম্পাদক মাহদুর রহমান মুক্ত স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে দাবি করেন, ৭ এপ্রিল দুপুরের পর ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কিছু চিহ্নিত লোকজনের মদদে ক্যাম্পাসে মিছিল বের করে। সে মিছিল থেকে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়া হয়। ইশা আন্দোলনের কর্মসূচী শেষে মৌলবাদী যে কোন শক্তির অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ করে প্রগতিশীল ছাত্র জোট তাৎক্ষনিক মিছিল করে। মিছিল শেষ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমাবেশে বক্তৃতা চলাকালে ইশা ছাত্র আন্দোলনের মিছিল থেকে আসা একটি অংশ এবং ছাত্রলীগের একটি গ্রুপে মহড়া দেয়া কতিপয় শিক্ষার্থী যৌথভাবে অতর্কিত হামলা যায়। উক্ত হামলায় বামদের কয়েকজন আহত হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন এবং বাম সংগঠনের পক্ষ থেকে এর নিন্দা জানান। সেই সাথে সাথে আগামীতে যেকোন মৌলবাদী শক্তিকে প্রতিরোধ করতে তারা তাদের ভূমিকা অব্যাহত রাখবেন এবং হামলার যথোপযুক্ত জবাব দেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন বামজোটের নেতারা।
তবে তাদের এই দাবির ও হুমকির কঠোর বিরোধিতা করেছে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন।
ইশা ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বামদের উপর হামলার দায় ইশা ছাত্র আন্দোলন এর উপর চাপিয়ে দেবার ঘৃণ্য চেষ্টা সঠিক নয় এবং এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তারা।
ইশা নেতৃবৃন্দ জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ১৩তম ব্যাচের ছাত্র নাস্তিক ফরহাদের শাস্তির দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে বাদ জোহর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল শেষে ভাস্কর্যের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা ফরহাদকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে।
এরপর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এসময় প্রশাসনিক ভবনের সামনে ছাত্রদের সাথে কথা বলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোস্তাফা কামাল। তিনি ফরহাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যাবস্থা নিবেন বলে আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা চলে যায়।
এসময় হঠাৎ করেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের মিছিলের প্রতিবাদে বাম সংগঠনগুলো ক্যাম্পাসে পাল্টা মিছিল করলে কে বা কারা তাদের উপর প্রক্টর অফিসের সামনে হামলা চালায়। এতে বাম সংগঠনের বেশ কিছু নেতাকর্মী আহত হয়। যারা হামলার সাথে জড়িত, তাদের নাম ও ছবি ইতিমধ্যেই বিভিন্ন অনলাইন সংবাদমাধ্যম গুলোতে প্রচার হয়েছে। কিন্তু বাম সংগঠন গুলোর পক্ষ থেকে দাবী করা হচ্ছে- “ইশা ছাত্র আন্দোলনও এই হামলা চালিয়েছে”। যেটা সম্পূর্ণ উদ্দ্যেশ্যে প্রনোদিত এবং স্পষ্ট মিথ্যাচার।
উক্ত দাবির প্রতিবাদে ইশা ছাত্র আন্দোলন-এর জবি শাখার সভাপতি মুহাম্মদ আল-আমীন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর রেহমান এক যৌথ বিবৃতিতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাম সংগঠনের এধরনের আচরণে আমরা আশাহত। ইশা ছাত্র আন্দোলন, জবি শাখার পক্ষ থেকে এধরনের স্পষ্ট মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। পাশাপাশি সুষ্ঠু তদন্তেরও দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য : ইশা ছাত্র আন্দোলন দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বুকে ধারণ করে ১৯৯১ সালের ২৩ আগস্ট সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইশা ছাত্র আন্দোলন দেশের আইন ও ক্যাম্পাস প্রশাসনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বাংলাদেশের প্রায় সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জিবিত দলটি সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দিতে কিছু গোষ্ঠী অত্যন্ত তৎপর। যেটা ক্যাম্পাস রাজনীতির জন্য কখোনোই শুভ নয়।
এইচআরআর/পাবলিক ভয়েস