বুধবার দিন পেরোলেই আবির্ভাব ঘটবে পুণ্যবতি রাতের

প্রকাশিত: ৬:৪৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২, ২০১৯

ইসমাঈল আযহার: বুধবার দিন পেরিয়ে রাতের আঁধার নামলেই আবির্ভাব ঘটবে এক অলৌকিক, অসামান্য, মহাপূণ্যে ঘেরা ‘লাইলাতুল মেরাজ’ বা মেরাজের রাত।যে রাতে নবী মুহাম্মদ সা. ঊর্ধ্বাকাশে আরোহণ করেছিলেন এবং আল্লাহর সঙ্গে  সাক্ষাৎ করেন।

ইসলামের ইতিহাস অনুযায়ী হযরত মুহাম্মদ সা: এর নবুওয়াত প্রকাশের একাদশ বছরের (৬২০ খ্রিষ্টাব্দ) রজব মাসের ২৬ তারিখের দিবাগত রাতে মুহাম্মদ সা: প্রথমে কাবা শরিফ থেকে জেরুজালেমে অবস্থিত বায়তুল মুকাদ্দাস বা মসজিদুল আকসায় গমন করেন।

সেখানে তিনি নবীদের জামাতে ইমামতি করেন। অতঃপর তিনি বোরাক নামক বিশেষ বাহনে করে ঊর্ধ্বলোকে গমন করেন। ঊর্ধ্বাকাশে সিদরাতুল মুনতাহায় তিনি আল্লাহ’র সাক্ষাৎ লাভ করেন। এ সফরে ফেরেশতা জিবরাইল নবীজি সা. এর সঙ্গে ছিলেন।

এই সফর ছিল আল্লাহ তাআলার মহান কুদরত, অলৌকিক নিদর্শন, নবুয়তের সত্যতার স্বপক্ষে এক বিরাট আলামত, জ্ঞানীদের জন্য উপদেশ, মোমিনদের জন্য প্রমাণ, মহান আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্যে হাযির হওয়া, ঊর্ধ্বলোক সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জন, অদৃশ্য ভাগ্য সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান লাভ, ইহকাল ও পরকাল সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন, স্বচক্ষে জান্নাত-জাহান্নাম অবলোকন, পূর্ববর্তী নবী-রাসূলগণের সাথে সাক্ষাত্ ও পরিচিত হওয়া, সুবিশাল নভোমণ্ডল পরিভ্রমণ করা।

অনেক মুসলমান এবাদত-বন্দেগীর করেন এই রাতে। অনেকে এই রাতে মোমবাতি প্রজ্জলন, আতশবাজি ফোটানোসহ এ ধরণের বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে রাতটি উদযাপন করে থাকেন। উলামায়ে কেরাম এটাকে বিদআত বলে ফতওয়া দিয়েছেন।

ইসলামে মেরাজের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এই রাত্রিতে উম্মতে মুহাম্মাদীর প্রতি ৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়। একারণে এটা খুবই ফজিলতের রাত্রি।

এই রাত্রিতে যতদূর সম্ভব জেগে নফল নামাজ, জিকির-আযকার, কুরআন তিলওয়াত ও দরুদ শরীফ ইত্যাদি পাঠ করা এবং নফল নিয়তে দিনে রোজা রাখা ভাল। এগুলো ব্যতীত এই রাতে অন্য কোন প্রকার শরীয়ত বিরোধী রুসম-রেওয়াজে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত থাকা। এই রাতের তোহফা ৫ ওয়াক্ত নামাজ তাই বেশি বেশি নফল নামাজ পড়ে শুকরিয়া আদায় করা।

মেরাজ সম্পর্কে কুরআন শরিফের সুরা বনি ইসরাঈল এর প্রথম আয়াতে বলা হয়েছে ‘পবিত্র মহান সে সত্তা, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে নিয়ে গিয়েছেন আল মাসজিদুল হারাম থেকে আল মাসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার আশপাশে আমি বরকত দিয়েছি, যেন আমি তাকে আমার কিছু নিদর্শন দেখাতে পারি। তিনিই সর্বশ্রোতা।’

শবে মেরাজের ইবাদত সম্পর্কে হাদিস শরীফে উল্লেখ রয়েছে হযরত আবু হুরায়রা রা. ও সালমান ফারসি রা. থেকে বর্ণিত, নিঃসন্দেহে রজব মাসে এমন একটি মহান দিন ও রাত রয়েছে, কোন মোমিন যদি ঐদিনে রোযা রাখে ও রাতে নামাজে মশগুল থাকে, তার প্রতিদান হবে যেন সে একশ বছর দিনে নফল রোযা ও রাতে নফল নামাজ পড়েছে। সেই মহান রাতটি হলো রজবের সাতাশতম রাত। তবে এ রাতকে ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করা, আতশবাজি, আলোক সজ্জা ইত্যাদি সবই বিদ‘আত বলে ফতওয়া দেন উলামায়ে কেরাম।

আইএ/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন