

দোয়ার মুহূর্তে বিশেষভাবে মৃত্যুর সময়ের কঠিন মুহূর্তটি স্মরণ করবেন
‘দোয়ায় কান্না আসে না’ খুব কমন একটি অভিযোগ। কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে পারেন। ইনশাআল্লাহ চোখে পানি আসবে। মুমিন বান্দার চোখের পানি অস্ত্রের চেয়ে হাজারগুণ শক্তিশালী ও দামি জিনিস। কারণ চোখের পানি দিয়ে করা দোয়াগুলো আল্লাহ ফিরিয়ে দেন না।
১. খুব নিরিবিলি পরিবেশে দোয়া করবেন। তাহাজ্জুদের সময়টা এর জন্য বেস্ট। সবাই ঘুমে আর আপনি আল্লাহর কাছে৷ সুবহানাল্লাহিল আজিম!
২. আল্লাহর গুণবাচক নামগুলো দিয়ে খুব আবেগ নিয়ে ডাকতে থাকবেন। যেমন : ইয়া গাফফাআআআআর! (হে ক্ষমাশীল)
৩. ইচ্ছাকৃত কবিরা গোনাহ থেকে সম্পূর্ণ বেঁচে থাকুন। ভুলক্রমে হয়ে গেলে সময় না নিয়ে দ্রুত তওবা করুন। গোনাহ আমাদের চোখের পানি শেষ করে দেয়।
৪. দীর্ঘ সময় নিয়ে দোয়া করুন। ২০-৩০ মিনিট। ধরে নিন, মুখোমুখি আল্লাহর সামনে আবদার জানাচ্ছেন। ধরে নিন, ফাঁসির আসামী আপনি। একটুপর ফাঁসি কার্যকর হবে। এবার মাফ চাওয়ার পালা। মাফ পেলে ফাঁসি মাফ! (কেমন হবে তখন আপনার আবেদন আর ফরিয়াদ!?)
৫. আবেগঘন কথা দিয়ে দোয়া করুন। যেমন— ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেছেন, ‘হে আল্লাহ! আমি ছাড়াও তোমার অনেক বান্দা আছে, কিন্তু তুমি ছাড়া তো আমার আর কোনো রব নেই! তুমি যদি আমাকে তাড়িয়ে দাও, তবে আমি কোথায় যাবো?’ কিংবা এভাবে, ‘আল্লাহ, তোমার রহমতের সামনে আমার গোনাহগুলো খুবই তুচ্ছ। আমি তো শুধু তোমার রহমতেরই ভিখারী।’ এভাবেও বলতে পারেন, ‘আল্লাহ! সবাই যখন ঘুমে, তখন আমি তোমার এক গোনাহগার বান্দা কেবলই তোমার ভয়ে, তোমার প্রতি ভালোবাসায় আরামের শয্যা ত্যাগ করে তোমার কাছে ছুটে এসেছি।’
৬. কয়েকটি পরিচিত দোয়া অর্থসহ শিখে নিন। রাব্বানা যলামনা আনফুসানা…. (এটি দিয়ে আদম আ. তওবা করেছিলেন, যখন তিনি শয়তানের প্ররোচনায় একটি ভুল করেছিলেন) দোয়ায়ে মাসুরা : আল্লাহুম্মা ইন্নি যলামতু….. খুব চমৎকার এর অর্থ।
৭. দোয়ার মুহূর্তে বিশেষভাবে মৃত্যুর সময়ের কঠিন মুহূর্তটি স্মরণ করবেন (যদি কালিমা নসিব না হয়!…) এজন্য কেঁদেকেটে বলবেন। এ ছাড়া কবরের প্রশ্নগুলো, কবরের দু’পাশ থেকে চাপ দেওয়া, হাশরের মাঠে মাথার ওপর সূর্যের প্রচণ্ড তাপ (তৃষ্ণায় ছাতি ফেটে যাওয়া), জাহান্নামের ভয়াবহ গর্জন— এই দৃশ্যগুলো কল্পনা করে করে দোয়া করবেন।
একটি হাদিসে এসেছে, কান্না না এলে কান্নার ভান করো! এটা জরুরি। যেভাবে সম্ভব, কান্না করতে চেষ্টা করুন। অভ্যস্ত হয়ে গেলে মাঝেমধ্যে দেখবেন, দোয়ায় কখনও আবেগী হয়ে গেছেন, শিশুর মতো ফুঁপিয়ে কান্না শুরু করে দিয়েছেন, বুক ফেটে যাচ্ছে। ঐ সময়ের প্রশান্তিটা ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না। সবাই সবার জন্য দোয়া করুন। এতে নিজেরই লাভ। জাযাকাল্লাহু খাইরান।