

রাসূলুল্লাহ স. এর দেহের বর্ণনা দিতে গিয়ে সম্প্রতি কিছুদিন আগে বিশিষ্ট আলোচক মাওলানা মিযানুর রহমান আযহারী বলেছেন, “রাসুলের দেহ ছিল সিক্সপ্যাক”। তার এ বক্তব্য নিয়ে বিভিন্নজনের মধ্যে আলোচনা দেখা গেছে। মতামত প্রকাশ করছেন অনেকেই। বিষয়টি সামগ্রিকভাবে ফেসবুকে তুলে ধরেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি স্ট্যাডিজ বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর আহমদ আলী।
রাসূলের দেহ “সিক্সপ্যাক” ছিল মিজান আযহারির এমন বক্তব্যে প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“রাসূল সা.-এর শানে সম্প্রতি মাওলানা মিযান আযহারী সাহেব ‘সিক্সপ্যাক’ শব্দের ব্যবহার করেছেন’। এ শব্দের উদ্ভব ও ব্যবহার সম্পর্কে আমি যতটুকু জানতে পেরেছি, তাতে আমি মনে করি যে, রাসূল সা.-এর পবিত্র দেহ মুবারকের অপূর্ব সৌন্দর্য বোঝানোর জন্য এ শব্দের ব্যবহার মোটেই বিজ্ঞজনোচিত হয়নি। এ ক্ষেত্রে শব্দ চয়নে তাঁর মতো একজন জনপ্রিয় বক্তার আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন ছিল”।
যারা তার এই ভুল ধরিয়ে দিচ্ছেন তাদের প্রশংসা করে তিনি বলেন,
“যেসব বিজ্ঞ ব্যক্তি আন্তরিকতার সাথে তাঁর এ ভুল নির্দেশ করেছেন তাঁরা সঠিক দায়িত্বই পালন করেছেন। এতে একদিকে তাঁদের বিজ্ঞতার পরিচয় পাওয়া যায়, অপরদিকে রাসূল সা.-এর প্রতি তাঁদের ঈমান ও অকৃত্রিম ভালোবাসার পরিচয় পাওয়া যায়”।
সাথে সাথে প্রফেসর আহমদ আলী ভুল ধরিয়ে দেয়ার নামে যারা মিজানুর রহমান আযহারীকে ‘কাফের’ ফতোয়া দিচ্ছে তাদের সমালোচনা করেছেন। তাদের বিষয়ে তিনি লিখেছেন,
“তবে আমার কাছে আশ্চর্য লেগেছে, রাসূল সা.-এর শানে এ শব্দের ব্যবহারের জন্য কতিপয় আলিম ও মুফতী তাঁকে কাফির ফতওয়া দেওয়ার জন্য ওঠেপড়ে লেগেছেন। আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন, এ ফতওয়া কি তাদের দায়িত্বানুভূতির আন্তরিক বহিঃপ্রকাশ, নাকি আযহারী সাহেবের প্রতি তাঁদের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের অভিব্যক্তি। আমার মনে হয়, এসব আলিম ও মুফতীর অবশ্যই তাকফীর সংক্রান্ত মাসআলা জানা থাকার কথা। উল্লেখ্য, কারো কোনো কথায় যদি ভিন্ন কোনো ব্যাখ্যার সম্ভাবনা থাকে এবং সে নিজেও যদি তা বলে, তাহলে তাকে এ কথার জন্য কাফির ফতওয়া দেয়া যায় না। (রাদ্দুল মুহতার)
প্রসঙ্গত : মিজানুর রহমান আজহারীর এ বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তুমুল সমালোচনা। অনেকে তার বক্তব্য সঠিক প্রমানের প্রচেষ্টা করলেও বেশিরভাগ আলেম ওলামারাই বলছেন, “রাসূলের বিষয়ে এ ধরণের শব্দের ব্যবহার উচিত নয়”।