

চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর আলিকদম উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম ও উপজাতি একটি মেয়ের ছবি নিয়ে ফেসবুকসহ গণমাধ্যমগুলোতে তুমুল আলোচনার মধ্যেই উপজাতি মেয়ে রুপমাও ম্রো সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে রুমপাও ম্রোর লিখিত বক্তব্য
`জনাব আবুল কালাম এর সাথে আমাদের পরিবারের দীর্ঘদিনের একটি সম্পর্ক আছে। আমরা তাকে অসাম্প্রদায়িক ও সৎ চরিত্রবান ব্যক্তি হিসেবে জানি। তার পিতাও তার মত সকল সম্প্রদায়ের প্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। বিজয়ী হওয়ার পর আমরা পাড়াবাসী গত ২৩ মার্চ দুপুর ১২টার দিকে জনাব আবুল কালাম কে নিজ পাড়ায় সংবর্ধনা প্রদান করি। সংবর্ধনা চলাকালে আমি অন্যান্যদের ন্যায় চেয়ারম্যানকে মাল্যদান করার পর আবেগপ্রবণ হয়ে খুশীতে কান্না করে ফেলি এবং এক পর্যায়ে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার সময় চেয়ারম্যান মহোদয় আমাকে ধরে না ফেললে আমি গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হতাম।পাশাপাশি চেয়ারম্যান মহোদয় আমার কান্না থামানোর জন্য আমাকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় আমার পরিবারের সদস্য মা-বাবা ভাইসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা দুই শতাধিক লোকজন সংবর্ধনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। চেয়ারম্যান মহোদয়কে আমি ও আমার ভাইয়েরা আপন বড় ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করি এবং তিনি আমাদেরকে ছোট বোনের মত জানেন। তাহার মধ্যে আমি বা আমরা কখনো খারাপ প্রবৃত্তি দেখিনি। তিনি এই ধরনের লোক নন। আমি জানতে পেরেছি উক্ত অনুষ্ঠানে আমার ও চেয়ারম্যান জনাব আবুল কালামের ছবিসহ উক্ত অনুষ্ঠানের কিছু ছবি চেয়ারম্যান মহোদয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের আইডি থেকে পোস্ট করেন। উক্ত ছবিকে কেন্দ্র করে প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের কিছু লোকজন ও প্রতিক্রিয়াশীল চক্র আমার ছবিগুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিকৃতভাবে মন্তব্য করেন যা আমার আত্মসম্মানে আঘাত লাগে। আমি ও আমার পরিবার চেয়ারম্যান মহোদয়কে আমাদের পরিবারের সদস্য হিসেবে জানি। আমি তার একজন ভক্তও বটে। আমার ছবিগুলো ভাইরাল করার পূর্বে অথবা মিডিয়াতে প্রকাশ এর পূর্বে আমার ও আমাদের পরিবারের বক্তব্য নেয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা না করে একটি সুন্দর ভ্রাতৃত্বপূর্ণ পুরো পার্বত্য এলাকায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হাঙ্গামা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে উক্ত ছবিগুলি ভাইরাল করা হয়। সাধারণত ধর্মান্ধ প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী এ ধরনের সাম্প্রদায়িক উস্কানি সৃষ্টি করে তৃপ্তি পায়। আমি ও আমার পরিবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি এ ধরনের অপপ্রচার যারা করে তারা এলাকার শান্তি চায় না, সহাবস্থান চায় না। আমাকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে আমি জানি না, এটা দুঃখজনক ও মানহানিকর”।
রুমপাও মুরং, পিতা- মেনসিং মুরং, গ্রাম- মেরিনচর পাড়া ৯ নং ওয়ার্ড, ৩ নং নয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ, আলীকদম, বান্দরবান।
প্রসঙ্গত : বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালামকে উপজেলার কুরুকপাতা ইউনিয়নের মেরিন চর এলাকায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। ওই সংবর্ধনায় তিনি স্থানীয় এক মুরুং তরুণীর সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করার পর তা নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অসংখ্য মানুষ। তারা আবুল কালাম এর উপর উপজাতি মেয়েটির উপর যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছিল কিন্তু খোদ মেয়েটির বক্তব্য আসার পর বিষয়টি অনেকের কাছে পরিষ্কার হয়েছে এবং অনেকে বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম স্থানীয়দের কাছে খুব জনপ্রিয়। তার এ ধরণের সম্প্রিতিমূলক ছবি আরও আছে। তবে তার এ ধরনের ছবি প্রকাশকে সমর্থন করছে না কেহই। এবং এর দ্বারা অনাকাঙ্খিত পরিবেশের সৃষ্টি হয়ে থাকে বলেই মতামত অনেকের। আবুল কালাম একটি গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে বলেছেন বিষয়টি তিনি ভেবেছেন এবং এ ধরনের ছবি প্রকাশে তিনি সতর্ক থাকবেন বলেও জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তব্যের ভিডিও দেখুন এখানে ক্লিক করে
আরও পড়ুন :
আমার ব্যাপারে কেউ কিছু বললে মানহানি মামলা করবো : আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান