প্রথম ধাপে ৮০ উপজেলায় ভোট গ্রহণ কাল

প্রকাশিত: ১:১৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ৯, ২০১৯

পাবলিক ভয়েস: পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৮০টি উপজেলায় আগামীকাল রোববার ভোট অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচন উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে এসব উপজেলায় আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হয়েছে। এখন ভোটগ্রহণের অপেক্ষা। এ ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে ভোটগ্রহণ হবে। এ নির্বাচনে বিএনপিসহ অনেক রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি।

এ ধাপে ৮৩টি উপজেলায় ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি নেয়া হলেও প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে শেষ মুহূর্তে গতকাল শুক্রবার নেত্রকোনার পূর্বধলা, সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ এবং লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এ কারণে ৮০টি উপজেলায় ভোট হচ্ছে। আজ শনিবার উপজেলাগুলোর কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটের সামগ্রী পাঠানো হবে। এছাড়া যান চলাচলের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ভোট কেন্দ্র ও নির্বাচনী এলাকার নিরাপত্তায় পুলিশ, বিজিবি, আনসার-ভিডিপি, কোস্টগার্ড, র‌্যাব ও ব্যাটালিয়ন আনসার নিয়োগ করেছে ইসি।

ইসি সচিবালয় জানিয়েছে, গত ৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপের ৮৭টি উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের ১২টি জেলায় এ ধাপে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। পরে আদালতের রায়ে রাজশাহীর পবা উপজেলা নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় ৮৬টিতে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।

পরে আরও তিনটিতে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এছাড়া জামালপুরের মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ এবং নাটোর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় এ তিনটি উপজেলা ভোটগ্রহণের প্রয়োজন হচ্ছে না।

বাকি ৮০টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন- সব মিলিয়ে ২৯ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় সেসব স্থানে ভোট হবে না। অবশিষ্ট এলাকায় ভোট হবে।

নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান বলেন, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজনে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। নির্বাচন কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করতে ইসি থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

নির্বাচনে কারও শৈথিল্য ও গাফিলতি সহ্য করা হবে না। এছাড়া শেষ মুহূর্তে তিনটি উপজেলার নির্বাচন স্থগিত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেন তিনি।

ইসি সূত্র জানায়, আগামীকাল রোববার যে ৮৩টি উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা ছিল সেগুলোতে মোট ৮৯৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২১৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ৪০৬ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৭৩ জন রয়েছেন।

এ ধাপে মোট ভোট কেন্দ্র ৬ হাজার ২১৯টি এবং ভোটকক্ষ ৩৯ হাজার ১৫৯টি। ভোটার ১ কোটি ৫২ লাখ ৭০ হাজার ৫ জন। তবে তিনটি উপজেলা নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় মোট প্রার্থী, ভোট কেন্দ্র ও ভোটার সংখ্যা কমে এসেছে। তবে কতটা কমেছে তা জানা যায়নি।

উপজেলা নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী ভোটগ্রহণের ৩২ ঘণ্টা আগে প্রচার-প্রচারণা শেষ করতে হবে। রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রথম ধাপের ভোট। ফলে গতকাল শুক্রবার রাত ১২টায় শেষ হয়েছে প্রচারণা। ভোটের পরবর্তী ৬৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা বা মিছিল-মিটিং নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ইসি জানিয়েছে, ভোটের আগে দুদিন, ভোটের দিন ও ভোটের পরের দিন মিলিয়ে পাঁচ দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ হিসাবে গতকাল শুক্রবার পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, আনসার-ভিডিপি, কোস্টগার্ড, আর্মড পুলিশ, ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যরা মাঠে নেমেছেন।

আচরণবিধি প্রতিপালন ও বিশৃঙ্খলা রোধে মাঠে রয়েছেন নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট। বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্সধারীদের অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন নিষিদ্ধ। সাধারণ ভোট কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৪ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৫-১৬ জন নিয়োজিত থাকবেন। উল্লেখ্য, পাঁচ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের চার ধাপই চলতি মাসে হচ্ছে। প্রথম ধাপ আগামীকাল এবং বাকি তিন ধাপ ১৮, ২৪ ও ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। শেষ ধাপের ভোট হবে ১৮ জুন।

পাটগ্রাম থানার ওসি প্রত্যাহার : এদিকে ইসি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় পাটগ্রাম থানার ওসিকে প্রত্যাহার করতে পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। গতকাল শুক্রবার এ সংক্রান্ত চিঠি ইস্যু করেছে কমিশন। এছাড়া এক মন্ত্রীর এপিএসের বিরুদ্ধেও মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।

মন্তব্য করুন