ডাকসু নির্বাচনে কোটা আন্দোলনকারী ও ছাত্র ফেডারশনের ইশতেহার ঘোষণা

প্রকাশিত: ৭:৫২ অপরাহ্ণ, মার্চ ৭, ২০১৯

আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের স্বতন্ত্র প্যানেল ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (৭ মার্চ) ভিন্ন ভিন্ন সময়ে তারা এ ইশতেহার ঘোষণা করেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ২৮ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন। ইশতেহার পাঠ করেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ভিপি পদপ্রার্থী নূরুল হক নূর ।

ঘোষিত ইশতেহারের মধ্যে রয়েছে- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যে কোনো সমস্যা তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য ডাকসুর ‘সেবা ডেস্ক’ চালু করা; মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে লিবারেশন ওয়ার স্টাডিজ সেন্টার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা; হলগুলো থেকে বহিরাগত ও অছাত্রদের বিতাড়িত করে প্রথম বর্ষ থেকেই শিক্ষার্থীদের বৈধ সিট প্রাপ্তির উদ্যোগ নেওয়া; বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া ও ক্যান্টিনে খাবারের গুণগত মান নিশ্চিত করা এবং ন্যায্যমূল্যে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ খাবার নিশ্চিত করা; জালিয়াতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা করা; কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের বাণিজ্যিক ব্যবহার সীমিত করা; মাদক ব্যবসা ও মাদক সেবন বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া; মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন করা; নামে-বেনামে নেওয়া বিবিধ ফি বন্ধ করা; সাত কলেজের অধিভুক্তি সমস্যার যৌক্তিক সমাধান; ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ফার্মেসি স্থাপন করা; বাণিজ্যিক সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ও পরিবহন ও রুটের সংখ্যা বৃদ্ধি করা ইত্যাদি।

কোটা আন্দোলনকারীদের প্যানেল- ভিপি- নুরুল হক নূর, জিএস- মুহাম্মদ রাশেদ খান, এজিএস- ফারুক হাসান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক- নাজমুল হুদা, কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক- শেখ এমিলি জামাল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক- হাবিবুল্লাহ বেলালী, সাহিত্য সম্পাদক- আকরাম হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক- নাহিদ ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক- মামুনুর রশীদ মামুন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক- রাজিবুল ইসলাম, সমাজসেবা সম্পাদক- আকতার হোসেন।

ছাত্র ফেডারেশনের ইশতেহার :

বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আজ ছাত্র ফেডারেশনের ইশতেহার ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক ইশতিয়াক ও কেন্দ্রীয় সংসদে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী উম্মে হাবিবা বেনজীর। ইশতেহার ঘোষণা করেন আশরাফুল হক ইশতিয়াক।

আশরাফুল হক ইশতিয়াক বলেন, নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের যে সর্বোচ্চ সক্রিয়তা কাম্য ছিল, সেটার উপযুক্ত পরিবেশ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিশ্চিত করতে পারেনি। একাডেমিক ভবনে ভোটগ্রহণ ও সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্বাচন পরিচালনার মতো যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া হয়নি।

সংবাদ সম্মেলন থেকে নির্বাচন ঘিরে ৪১ দফা ইশতেহার তুলে ধরা হয়। তার মধ্যে রয়েছে- গেস্টরুম প্রথা চিরতরে নিষিদ্ধ করা, গণরুম ব্যবস্থা স্থায়ীভাবে বন্ধ করে প্রথমবর্ষেই ‘নো ফ্লোরিং, নো সিঙ্গেল’ নীতিতে ও দুই-তলা বিছানা পদ্ধতিতে বৈধ সিট, মাসিক ক্যান্টিন মনিটরিং, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি হলে কাউন্সেলিং সেন্টার স্থাপন, ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয়ভাবে মডেল ফার্মেসি স্থাপন ও ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা, মশা ও ছারপোকা নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণ, শিক্ষক মূল্যায়নে রেটিং পদ্ধতি চালু, বিশেষজ্ঞ বোর্ডের মাধ্যমে গবেষণার বাজেট নির্ধারণ, যৌন নিপীড়ন ও প্লেজারিজমের (লেখা চুরি) অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিষয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ, লাইব্রেরি ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা, সক্ষমতা ছাড়া নতুন ডিপার্টমেন্ট চালুর প্রক্রিয়া বন্ধ করা, আদিবাসীসহ সব জাতিগোষ্ঠী, ধর্ম ও বর্ণের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত, টিএসসিভিত্তিক সংগঠনগুলোকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করে গণতান্ত্রিক ও স্বাধীন করা ইত্যাদি।

মন্তব্য করুন