
পাবলিক ভয়েস: প্রথমে বাবার মৃত্যু, পরে একই দিনে স্ত্রী ও জামাইয়ের। অবশিষ্ট দুই ভায়ের মধ্যে এক ভাই গতকাল রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে মারা যায়। অপর ভাই রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মারা যান রাত সাড়ে ৯টায়।
মাত্র ২০ দিনের ব্যবধানে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নে ভান্ডারদহ মরিচপাড়া গ্রামে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা সকলে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৯ ফেব্রুয়ারি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নে ভান্ডারদহ মরিচপাড়া গ্রামের আবু তাহের (৫৫) মৃত্যুবরণ করেন। আবু তাহের বয়স্ক হওয়ার কারণে বিষয়টি তেমন গুরুত্বের সঙ্গে দেখেনি তার পরিবার।
এরপর গত বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) আবু তাহেরের জামাই সদর উপজেলার রুহিয়া থানার কুজিশহর গ্রামের কহিম উদ্দীনে ছেলে হাবিবুর রহমান বাবলু (৩৫) একইভাবে আক্রান্ত হন। পরদিন সকালে ৯টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বাবলুর মৃত্যু হলে জামাইয়ের সেই মৃত্যুর সংবাদ শোনার কিছুক্ষণ পর আবু তাহেরের স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগম (৪৫) মৃত্যুবরণ করেন।
গতকাল রোববার সকালে একই রোগে আক্রান্ত হন আবু তাহেরের দুই ছেলে ইউসুফ আলী (২৭) ও মেহেদী হাসান (২৪)। তাদের দুজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেয়ার পথে সকালে ইউসুফ এবং রাতে সাড়ে ৯টার দিকে মেহেদী মারা যান। সকালে মৃত্যুবরণ করা ইউসুফের স্ত্রী কোহিনুর বেগম তার একমাত্র কন্যা সন্তানকে নিয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রংপুর হাসপাতালে রোগীর সঙ্গে থাকা জাহির উদ্দীন ও ছাত্র দুলাল হোসেন জানান, চিকিৎসক রোগীর মুখে মাস্ক পরিয়ে দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি নেন। তবে মেহেদী কী রোগে আক্রান্ত হয়েছেন সেটা এখনও কোনো চিকিৎসক বলতে পারছেন না।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মোর্শেদ মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘কোহিনুর ও তার কন্যা সন্তান বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন। আমরা তাদেরকে নিবিড় পরিচর্যায় রেখেছি। আশা করছি কোনো ভয় নেই। তবে কোনো প্রকার সমস্যা হলে আমরা পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফিরোজ জামান জুয়েলকে বিষয়টি দেখার জন্য বলা হয়েছে। তিনি সকালে মৃত্যুবরণ করা ইউসুফ আলীর প্রেসক্রিপশন সংগ্রহ করেছেন। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটছে বিশেষজ্ঞ ছাড়া আপাতত বলা যাচ্ছে না।‘
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘ঘটনা কথা শুনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে সিভিল সার্জনকে অবগত করা হয়েছে। তারা বিষয়টি দেখছেন।’
		
