

-ওমর ফারুক মারুফ
বাংলাদেশে রানাপ্লাজা ধ্বসের পর চকবাজার ট্রাজেডিই হয়তো সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে মর্মস্পর্শী ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। আকস্মিক এক দুর্ঘটনায় জ্বলেপুড়ে ভস্ম হয়ে গেছে হাজারো মানুষের বুকভরা আশা আর তাজা রঙিন স্বপ্নগুলো। জানা নেই মর্মন্তুদ এ ঘটনায় কত মায়েরবুক খালি হয়েছে,কত সন্তান তাদের প্রাণপ্রিয় বাবা ও মমতাময়ী মাকে চিরবিদায় জানিয়েছে,কত মানুষ নিঃস্ব হয়ে গেছে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিকে হারিয়ে।
কত ধনকুবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ হারিয়ে আজ পথে বসেছে। কর্মব্যস্ত ছন্দময় জীবনের স্রোতধারায় হঠাৎ এমন ‘প্রলয়ংকরী ঝড়’ হানা দেবে তা হয়তো কারো কল্পনার ক্যানভাসেও ছিলনা, কিন্তু বিধাতার অসীম কুদরতের সামনে দূর্বল বান্দার সব জল্পনা কল্পনা অক্ষম ও মূল্যহীন।এক বেসরকারি পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা একশ ছাড়িয়েছে, আর অন্যপ্রান্তে শত শত পোড়াদগ্ধ মানুষ হাসপাতালের বেডে শুয়ে অসহায় কাতরাচ্ছে। নির্মম এ ট্রাজেডিতে জীবন প্রদীপ যাদের চিরদিনের জন্য নিভে গেছে তাদের জন্য আমরা অশ্রুসিক্ত কন্ঠে দোআ করি আল্লাহ তায়ালা যেন তাদেরকে শহিদী মর্যাদায় ভূষিত করেন এবং তাদের শোক সন্তপ্ত পরিবারকে উত্তমভাবে ধৈর্য্য ধারণের তাওফিক দান করেন ।
আর জীবন যুদ্ধে যারা আজও অগ্নিদগ্ধ শরীর নিয়ে আবারও বেচে থাকার স্বপ্ন দেখছে, আসুন এই সঙ্গিন মূহুর্তে আমরা তাদের স্বপ্নপূরনের সারথি হই। মনের সবটুকু মমতা আর দরদ নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াই। উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিকে হারিয়ে যারা আজ পথের ভিখারী তাদের তরে সামান্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই।
আর্ত মানবতার কল্যাণে নিজেকে ব্রত করার এটাই সুবর্ণ সুযোগ।সরকার ও বিদেশি সংস্থাগুলো তাদের আনুষ্ঠানিক সহযোগিতা করলেও এ সমাজের বিত্তশালীরা কখনোই দায় এড়াতে পারবে না।সুতরাং যদি মানুষ মানুষের জন্য হয়ে থাকে মানবতার পরিচয়ের এটাই উপযুক্ত সময়। পরিশেষে পল্লীকবি জসীমউদ্দিনের একটি কবিতার পংক্তি দিয়ে প্রবন্ধের ইতি টানতে চাই “সবার সুখে হাসব আমি কাঁদব সবার দুঃখে, নিজের খাবার বিলিয়ে দেব অনাহারীর মুখে “