

নিজের ক্যারিয়ার ভাবনায় যেসব বক্তারা “হক কথা বলে না বা রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখে না” তাদের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে ঐতিহাসিক চরমোনাইর ফাল্গুনের মাহফিলে লাখো মুসুল্লীদের সামনে কঠোর বার্তা দিলেন নায়েবে আমীরুল মুজাহিদীন মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম— শায়খে চরমোনাই।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক চরমোনাইর ফাল্গুনের মাহফিলের দ্বিতীয় দিন বা’দ মাগরিবের বয়ানের ধারাবাহিকতায় এক পর্যায়ে মুফতী ফয়জুল করীম বলেন— যে বক্তা ক্যারিয়ার ধরে রাখতে হক কথা না বলে সার্বজনীন বা সবার কাছে জনপ্রিয় হতে চায়— সে বক্তা ইসলামের দাঈ হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন__ মসজিদ, মাদরাসা, ওয়াজ মাহফিল শুধুমাত্র দীনের জন্যই করি। ওয়ায়েজগণ বয়ান করেন তাও এই দীনের জন্য। কিন্তু, সেই দীনের কথা বলতে গিয়ে যদি কোনো বক্তা কার্পন্যতা করে— তাহলে সে দীনের জন্য নয়, দুনিয়ার জন্য ওয়াজ করে। ক্যারিয়ার ভাবনায় যে বক্তা সরাসরি দীনের পক্ষে, ইসলামী রাজনীতির পক্ষে কথা বলে না; নির্বাচনে ইসলামী শক্তির পক্ষে অবস্থান নেয় না, তাদের প্রতি ধিক্কার।
যেই ওয়াজে দীনের কথা বলা যাবে না, সেই ওয়াজের দরকার নেই। যেই বক্তা দীনের কথা স্পষ্ট বলতে পারে না, সেই বক্তা “দীনের কেউ নয়” বলেও মন্তব্য করেন মুফতী ফয়জুল করীম।
তিনি বলেন— যে কাজটা দীনের জন্য করি, সে কাজটাই যদি দীনের প্রতিবন্ধক হয়, তাহলে দীনের নামে সে কাজ করব কেন? যারা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সুরকেন্দ্রিক ওয়াজ করে বেড়ায় এবং নিজেকে সার্বজনীন দাবী করে, তাদের দ্বারা দীনের দাওয়াতের হক আদায় হতে পারে না।
আলোচনার এক পর্যায়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে “ইসলামপন্থী শক্তির” পক্ষে অবস্থান নেওয়া অনেক বক্তাদের যেমন__ নওমুসলিম ডাক্তার সিরাজুল ইসলাম সিরাজী, প্রখ্যাত ওয়ায়েজ মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ূবী, লেখক গবেষক ও স্পষ্টভাষী আলোচক মুফতী হাবিবুর রহমান মিছবাহ ও তরুণ বক্তা মুফতী হেদায়েতুল্লাহ আজাদী, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ—সহ আরো অনেকের নাম উল্লেখ করে তাদের প্রশংসায় মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, এরা প্রকৃত দীনের দাঈ। এরা ব্যক্তি ও আর্থিক ক্যারিয়ারের কথা না ভেবে দীনের ক্যারিয়ার ভাবনায় রাষ্ট্রিয়ভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের পক্ষে সরাসরি ওয়াজের স্টেজ থেকে আওয়াজ তুলেছে।
প্রসঙ্গত : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বমুহূর্তে অনেক বিখ্যাত ওয়ায়েজ ও বক্তারা সরাসরি রাজনীতিতে “ইসলামপন্থীদের” পক্ষে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানানোর সংবাদ জানা গেছে। এসব বিষয়ে মুফতী ফয়জুল করীম দীনের স্বার্থে, ইসলামী রাজনীতির স্বার্থে এমন কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন বলেই অনেকের ধারণা।