

পাবলিক ভয়েস: চরমোনাই’র পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের বয়ান ও মুসল্লীদের রোনাজারির মাধ্যমে শেষ হলো তিনদিনব্যাপী কীর্তনখোলা তীরের ঐতিহাসিক চরমোনাই মাহফিল। আজ শনিবার সকাল ১০টায় চরমোনাইর পীর আমীরুল মুজাহিদীন মুফতী সৈয়দ রেজাউল করীম আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন। আজ ফজরের পর তিনি আগত কয়েকলক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসলামানের উদ্দেশ্যে বয়ান ও নসিহত পেশ করেন।
বয়ানে তিনি বলেন, ’দুনিয়া চিরস্থায়ী থাকার জায়গা নয়, তাই কোনো বুদ্ধিমান দুনিয়ার মোহে পড়তে পারে না। দুনিয়া হলো— আখেরাত কামাইয়ের জায়গা। এখানে থেকে যে তার পরলৌকিক জীবনকে যত বেশি সুন্দর করার চিন্তায় ব্যপৃত থাকবে— সে ততোটাই সফল’।
শুক্রবার মাহফিলের শেষ দিন হলেও বরাবরের মতো শনিবার সকালে আখেরী বয়ান ও মুনাজাতের পর মাহফিলের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে। আগত লক্ষ লক্ষ মুসল্লীদের নিরাপত্তা ও সহযোগিতায় নিয়োজিত ছিল প্রায় সাত হাজার স্বেচ্ছাসেবক, কয়েকশ স্বেচ্ছাসেবী বিশেষ নিরাপত্তা কর্মী; একশ লাইট, মাইক ও টেলিফোন টেকনেশিয়ান। একদল নিবেদিত ডুবুরি, ফায়ারসার্ভিস কর্মী, পুলিশ, RAB ও গোয়েন্দা বাহিনী। দেশ—বিদেশের মেহমানদের জন্য ছিল ১০টি সুবিশাল মেহমানখানা।
তিনদিনব্যাপী চলা এ মাহফিলের স্টেজ পরিচালনা করেন অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা জাকারিয়া হামীদী, মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, মাওলানা নেছার উদ্দিন, মাওলানা আল আমীন সাঈফী প্রমুখ। সৌদী আরব, মদিনা, লন্ডন, ওমান—সহ বহুরাষ্ট্রের শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম বয়ার রাখেন এই মাহফিলে।
প্রতিবারের ন্যায় এবারও দারুল উলূম দেওবন্দের শীর্ষ আলেমগণ তাশরীফ আনেন এবং গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা পেশ করেন। এ ছাড়াও দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরাম বয়ান করেন এবং ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল দশটা থেকে শুরু হওয়া আলেমদের নিয়ে বিশেষ প্রোগ্রাম ‘ওলামা সম্মেলনে’ বক্তব্য প্রদান করেন। প্রতিবছরের ন্যায় দ্বিতীয়দিন বাদ মাগরিব ও তৃতীয় দিন বাদ ফজরের মূল বয়ান পেশ করেন নায়েবে আমীরুল মুজাহিদীন মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই। আরও বয়ান পেশ করেন বায়তুল মুকাররাম-েএর পেশ ইমাম মুহিব্বুল্লাহিল বাকি, নুরুল হুদা ফয়েজি, ড. মুহাম্মদ ইউনুস, খলিফাদের মধ্য থেকে আব্দুল আওয়াল, আব্দুল মজিদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য যে, এর আগে গত বুধবার ২০ ফেব্রুয়ারি বাদ জোহর উদ্বোধনী বয়ানের মধ্য দিয়ে চরমোনাইর তিন দিনব্যাপী ফাল্গুনের এ মাহফিল শুরু হয়। মাহফিল শুরুর আগেই সারাদেশ থেকে আগত মুসুল্লীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে চরমোনাই দরবার। প্রথম দিনই প্রায় ১৫০ থেকে ১৭০ একর বিশাল আয়তনের ৫টি মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে প্রথম দিনই ২০ লক্ষ লোকের সমাগম হয়।