

পাবলিক ভয়েস: আজ রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ইজতেমার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৫ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠকে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, পুলিশের আইজি, র্যাবের ডিজিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে তাবলিগের উভয়পক্ষের মুরব্বীদের পাশাপাশি কওমি মাদ্রাসা বোর্ডের নেতারাও অংশ নিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান, তাবলিগ জামাতের নেতৃত্বের মধ্যে যে বিরোধ চলে আসছিল সেটা মীমাংসা হয়েছে। ঐক্যবদ্ধভাবে ১৫, ১৬, ১৭ ফেব্রুয়ারি ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে।
মীমাংসার পর প্রস্তুতিমূলক সভা করতে এতো সময় কেন লাগলো- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাঠে কে ইমামতি করবেন, কে নেতৃত্ব দেবেন, সেসব খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দু’পক্ষ মিলে যাতে সুন্দরভাবে ইজতেমা শেষ করা যায়, সেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতেই তাবলিগ জামাতের মধ্যে এখন দ্বিমত রয়েছে। তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। এসব বিষয় সমাধানের জন্য ধর্ম প্রতিমন্ত্রী তাবলিগ জামাতের দুপক্ষের দুজন করে চারজন মুরুব্বির সমন্বয়ে আলোচনায় বসবেন।
দুপুরে প্রথম বৈঠক শেষে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যে যা-ই বলি আমাদের সবার কথাই এক। সেটা হলো, তাবলিগ জামাতের দুটি পক্ষ আছে। দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর একসঙ্গে ইজতেমাটা হবে- এ সিদ্ধান্ত তারাই নিয়েছেন। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা-গোলযোগ ছাড়া যাতে ইজতেমা শেষ হয়, সে লক্ষ্যে কাজ করা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা।’
দুপুরে নামাজ ও খাবার বিরতির পর ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ২য় দফায় বৈঠকে বসেন তাবলিগের উভয়পক্ষের দায়িত্বশীলগণ। সে বৈঠকে ইজতেমার অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়। তবে ইজতেমার দায়িত্ববন্টন নিয়ে ধর্মপ্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দুপুরের পর আলোচনায় বসে একমত হতে পারেননি তাবলিগের দুই পক্ষ।
দিল্লীর নিজামুদ্দীন মার্কাজের মাওলানা সা’দের অনুসারীরা একতরফা দায়িত্ববন্টনের অভিযোগ করেছেন। সা’দ অনুসারী তাবলিগের মুরব্বি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের জেলা পর্যায়ের দায়িত্বশীলরা জানিয়ে দিয়েছে, বিগত বছরগুলোর মতো যদি নিজামুদ্দীন মার্কাজের মুরব্বিদের তত্ত্বাবধানে ইজতেমা না হয়, তাহলে তারা অংশ নিবেন না।
তাহলে কি আপনারা ইজতেমায় অংশ নিচ্ছেন না? এ প্রশ্নের উত্তরে সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম বলেন, আমরা আমাদের দাবি জানিয়েছি, জেলার সাথীদেরও প্রচুর চাপ রয়েছে। এখন যেভাবে চলছে, সেভাবে হলে আমাদের সাথীরা হয়তো অংশ নেবে না। সামনে আরেকটি মিটিংয়ে বিষয়টি সমাধান হবে বলে আশা করি।নির্ধারিত সময়েই বিশ্ব।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের বিশ্ব ইজতেমার পর তাবলিগ জামাতের দুপক্ষ আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমার তারিখ ঘোষণা করে।
নিজামুদ্দীন মার্কাজপন্থী মাওলানা সাদের অনুসারীরা ১১, ১২ ও ১৩ জানুয়ারি বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করেন।
এবং ১৮, ১৯ ও ২০ জানুয়ারি ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করেন ওলামায়ে কেরামসহ তাবলীগের সাধারণ মুসুল্লিরা। ।
এ নিয়ে সারা বছরই উত্তেজনা থাকে। গত ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে এ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়। সংঘর্ষে দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হন এবং এ হামলার বিষয়ে সা’দপন্থীদের প্রতি অভিযোগ রয়েছে।
পরবর্তীতে ২৪ জানুয়ারি ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর নিজ দফতরে তাবলিগের মুরব্বীদের বৈঠক থেকে ১৫-১৭ ফেব্রুয়ারি ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পাশাপাশি এবারের বিশ্ব ইজতেমা একপর্বে হবে বলে জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ।